শিক্ষামন্ত্রীর বক্তব্যের প্রতিবাদ : গাজীপুরে ডুয়েটের শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

আগের সংবাদ

সব বিভাগে চরম অবহেলা

পরের সংবাদ

আওয়ামী লীগের বিক্ষোভ সমাবেশে নেতাদের ঘোষণা : খেলা হবে রাজপথে

প্রকাশিত: আগস্ট ১৮, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: আগস্ট ১৮, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

** যেখানেই সন্ত্রাস, সেখানেই প্রতিরোধ ** বিএনপিকে রাজপথেই মোকাবিলা **

কাগজ প্রতিবেদক : শাহবাগ, মৎস্য ভবন, কদম ফোয়ারা, জিরো পয়েন্ট হয়ে গুলিস্তানের ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ের কেন্দ্রীয় কার্যালয়। আওয়ামী লীগের লাখো নেতাকর্মীর ঢল নেমেছিল রাজপথে। ‘জয় বাংলা’ ‘জয় বঙ্গবন্ধু’ স্লোগানের পাশাপাশি সন্ত্রাসবাদ, জঙ্গিবাদসহ সব অপশক্তি রুখে দেয়ার দৃঢ় প্রত্যয় ছিল তাদের চোখে-মুখে। শীর্ষ নেতারাও কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছেন, খেলা হবে নির্বাচনে, খেলা হবে রাজপথে। তারা আরো বলেন, বিএনপি-জামায়াতের পেট্রোল বাহিনী আবার পথে নেমেছে। আজ থেকে আমরাও মাঠে নামলাম। বিএনপি যেখানে সন্ত্রাস করবে, সেখানেই প্রতিরোধ, প্রতিহত করা হবে। গতকাল ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনের সামনে আওয়ামী লীগের বিক্ষোভ সমাবেশে এমন ঘোষণা দেন দলটির কেন্দ্রীয় নেতারা।
ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমানের সভাপতিত্বে এবং মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির ও মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম মান্নান কচির সঞ্চালনায় সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন দলটির কেন্দ্রীয় সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী, ড. আবদুর রাজ্জাক, জাহাঙ্গীর কবির নানক, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, আবদুর রহমান, কামরুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ, ড. হাছান মাহমুদ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, এস এম কামাল হোসেন, আফজাল হোসেন, দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, কৃষি ও সমবায়বিষয়ক সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলী, নির্বাহী সদস্য আনোয়ার হোসেন প্রমুখ।
খেলা হবে মন্তব্য করে ওবায়দুল কাদের বলেন, প্রস্তুত থাকেন, খেলা হবে, রাজপথে খেলা হবে, রাজপথে মোকাবিলা হবে, আগামী নির্বাচনে খেলা হবে, সে খেলায় আমরা জয় লাভ করব। তিনি বলেন, এবারও বিএনপির জগাখিচুড়ির ঐক্য ধরা খাবে। বিএনপি বলে, আওয়ামী লীগের পায়ের তলায় নাকি মাটি নেই। এই যে জনতার ঢল, শেখ কামালের মাজারে, বঙ্গমাতার মাজারে, বঙ্গবন্ধুর মাজারে, টুঙ্গিপাড়ায়ও জনতার ঢল। বিএনপি এই জনতার ঢল কোনো দিনও দেখেনি। সময় ঘনিয়ে আসছে। আগুন-সন্ত্রাস ও বোমাবাজি করে ক্ষমতায় যাওয়ার দিন শেষ।
সেতুমন্ত্রী বলেন, দুদিন ধরে মির্জা ফখরুল একটা মিথ্যাচার করে যাচ্ছেন। জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের প্রধান মিশেল ব্যাচেলেট বাংলাদেশে এসেছেন। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করেছেন। মির্জা ফখরুলের এখনো শিক্ষা হয়নি। জাতিসংঘের দ্বারে দ্বারে ঘুরে প্রধান কোনো কর্মকর্তার সঙ্গে দেখা করার সুযোগ পাননি। ওই নিচের দিকের কেরানিদের সঙ্গে বৈঠক করে নালিশ করে এসেছেন। বিএনপির নাম কী, বাংলাদেশ নালিশ পার্টি। নালিশ পার্টির কাম কী, বিদেশিদের কাছে দেশের বদনাম করা। এই নালিশ পার্টি সন্ধ্যার পরে দেখবেন বিদেশি দূতাবাসে ঘোরে। ফখরুলের চোখের পানি, নাকের পানি এক হয়ে যাচ্ছে। ক্ষমতায় বসতে চায়, সেই ময়ূর সিংহাসনে।
কোনো দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে জাতিসংঘের তদন্ত করার সুযোগ নেই জানিয়ে তিনি বলেন, ফখরুল সাহেব বোধহয় জানেন না তারা যে নালিশ করেছেন, তা বিচার করার এখতিয়ার নেই মিশেল ব্যাচেলেটের। জাতিসংঘের কোনো দেশের

অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে তদন্ত করার এখতিয়ার নেই।
ওবায়দুল কাদের বলেন, মির্জা ফখরুল ২০০৬ সালের সঙ্গে আজকে ২০২২ সালের তুলনা করেন। ২০০৬ সালে বিএনপির বাজেট ছিল ৬৯ হাজার কোটি টাকা। আজকে শেখ হাসিনার বাজেট হচ্ছে ৬ লাখ ৭১ হাজার কোটি টাকা। কিসের সঙ্গে কী মেলাচ্ছেন। নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়ে সাধারণ সম্পাদক বলেন, বোমাবাজি-গ্রেনেডবাজির দিন শেষ। বাংলাদেশের জঙ্গিবাদের ঠিকানা বিএনপি, তাদের পৃষ্ঠপোষক বিএনপি। এদের রুখতে হবে। মোকাবিলা করতে হবে। আগামী নির্বাচনে প্রমাণ করে দিতে হবে, এই দেশ বঙ্গবন্ধুর দেশ। এই দেশ মুক্তিযোদ্ধার দেশ। শেখ হাসিনার বাংলাদেশ।
কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, এই সরকারের অধীনেই নির্বাচন করতে হবে। নির্বাচন পরিচালনা করবে নির্বাচন কমিশন। শেখ হাসিনাই প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করবেন। সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে। উন্নয়ন এগিয়ে নিতে বাংলাদেশের মানুষ আবারো আওয়ামী লীগকে ভোট দেবে।
জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, এই বাংলাদেশে বিএনপির কিচ্ছু করার ক্ষমতা নেই। আমাদের নেত্রী গণতন্ত্রে বিশ্বাস করেন বলেই আপনারা নয়াপল্টনে বসে কথা বলতে পারেন। তবে সেই কথা যদি শিষ্টাচারবহির্ভূত হয়, তাহলে তার দাঁতভাঙা জবাব দেয়া হবে।
মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বলেন, বিএনপি-জামায়াত আবারো দেশে সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করতে চায়। বিএনপি-জামায়াত যে জায়গায় সন্ত্রাস করবে সেই জায়গায়ই প্রতিরোধ, প্রতিহত করা হবে।
যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেন, বিএনপি-জামায়াতের পেট্রোল বাহিনী আবার পথে নেমেছে। আজ থেকে আমরাও মাঠে নামলাম। বাংলাদেশকে এই অপশক্তিকে আক্রান্ত করতে দেয়া হবে না।
প্রসঙ্গত, ২০০৫ সালে ১৭ আগস্ট বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে দেশব্যাপী পাঁচ শতাধিক জায়গায় সিরিজ বোমা হামলা চালানো হয়। এরপর থেকে দিনটি ‘সিরিজ বোমা হামলার প্রতিবাদ দিবস’ হিসেবে পালন করে আসছে আওয়ামী লীগ। এরই অংশ হিসেবে গতকাল এ বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগ। ঢাকা মহানগরের বিভিন্ন থানা, ওয়ার্ড থেকে আওয়ামী লীগ ও এর বিভিন্ন সহযোগী সংগঠনের হাজার হাজার নেতাকর্মী মিছিল সহযোগে এ সমাবেশে অংশ নেন। এ সময় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন, মৎস্য ভবন এলাকা লোকারণ্য হয়ে যায়। নেতাকর্মীরা বিএনপি-জামায়াতের বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন। সমাবেশ শেষে একটি বিশাল মিছিল বের হয়। বিক্ষোভ মিছিলটি ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন প্রাঙ্গণ থেকে শুরু হয়ে মৎস্য ভবন-কদম ফোয়ারা-প্রেস ক্লাব ও জিরো পয়েন্ট হয়ে বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে গিয়ে শেষ হয়।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়