পাইলিংয়ের সময় শ্রমিক নিহত

আগের সংবাদ

প্রাথমিক শিক্ষায় তুঘলকি কাণ্ড : পাশাপাশি দুটি প্রাথমিক বিদ্যালয়কে একটি করা হচ্ছে > শিক্ষক প্রশিক্ষণ ৬ মাস

পরের সংবাদ

উত্তপ্ত রাজপথে পাল্টাপাল্টি শোডাউন

প্রকাশিত: অক্টোবর ৩০, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: অক্টোবর ৩০, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

ঝর্ণা মনি : চূড়ান্ত লড়াইয়ের আগে গা গরম করে নিচ্ছে প্রধান দুই রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ- আওয়ামী লীগ ও বিএনপি। তাদের শক্তি প্রদর্শনের মহড়ায় ক্রমেই সংঘাতপূর্ণ হয়ে উঠছে রাজপথ। চলছে পাল্টাপাল্টি শোডাউন। রাজপথের বিরোধী দল বিএনপি বিভাগীয় মহাসমাবেশে বাধাবিপত্তি ডিঙিয়ে বিপুল লোকসমাবেশ করে সাংগঠনিক সামর্থ্যরে জানান দিচ্ছে। এর পাল্টা জবাব দিচ্ছে আওয়ামী লীগও। গতকাল রাজধানী ঢাকায় এমন একটি শোডাউন করেছে তারা। আরো কয়েকটি বড় সমাবেশের ঘোষণা এরই মধ্যে দিয়ে রেখেছে ক্ষমতাসীনরা।
সাম্প্রতিককালে বিএনপির বিভিন্ন সভা-সমাবেশে লোকসমাগম দেখে দলটির নেতারা তৃপ্তির ঢেঁকুর তুলছেন। তাদের দাবি, সমাবেশে বিপুল সমাগম জনসমর্থনের বহিঃপ্রকাশ। তবে এই দাবি মানতে নারাজ ক্ষমতাসীনরা। সমাবেশে মানুষের উপস্থিতি নিয়ে দুই দলের নেতাদের মধ্যে কয়েকদিন ধরে পাল্টাপাল্টি বক্তব্যের মধ্যে জনসমাগমের প্রতিযোগিতায় ঘোষণা দিয়েই মাঠে নেমেছে সরকারি দল আওয়ামী লীগ। গত শুক্রবার দলটির সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপিকে বুঝিয়ে দেব জনসমাগম কাকে বলে। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে রাজপথ দখলে রাখতে গতকাল শনিবার থেকেই মাঠে নামেন তারা। মির্জা ফখরুলকে টেলিভিশনে আওয়ামী লীগের সম্মেলন দেখার আহ্বান জানিয়ে কাদের বলেন, দেখাব, পলোগ্রাউন্ডে দেখাব। সেখানে ১০ লাখ লোকের সমাগম হবে। শেখ হাসিনা যাবেন। আপনারা ১০ লাখ মুখে বলবেন, আমরা বাস্তবে দেখাব।
ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে গতকাল বিভিন্ন উপজেলা থেকে লাল-সবুজ টি-শার্ট ও ক্যাপ পরে ঢাক-ঢোল বাজিয়ে মিছিল নিয়ে অংশ নিয়েছেন দলীয় নেতাকর্মীরা। দুপুর ২টায় সম্মেলন শুরুর কথা থাকলেও বেলা ১২টার মধ্যেই সম্মেলনস্থলের আশপাশের এলাকা নেতাকর্মীদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে যায়। সম্মেলনস্থল পেরিয়ে মাঠের আশপাশের রাস্তায় অবস্থান নেন সমবেতরা। পুরো সম্মেলনস্থল উপস্থিত লাখো নেতাকর্মীর স্লোগানে মুখরিত হয়ে ওঠে। নেতাকর্মীদের হাতে জাতির

পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সজিব ওয়াজেদ জয়ের ছবি দেখা গেছে।
এদিকে নিত্যপণ্য ও জ্বালানি তেলের দাম বাড়া, বিভিন্ন স্থানে গুলিতে দলের নেতাকর্মী নিহত হওয়ার প্রতিবাদ এবং খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে দেশব্যাপী বিভাগীয় শহরে গণসমাবেশ করছে বিএনপি। এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল রংপুরে পরিবহন ধর্মঘটের মধ্যেও চতুর্থ বিভাগীয় গণসমাবেশ হয়েছে বিএনপির। ওই সমাবেশে সংসদ ভেঙে দিয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নতুন সরকার গঠনের ডাক দেন দলের নেতারা। দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, সংসদকে বিলুপ্ত করে, সরকারকে পদত্যাগ করে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাতে ক্ষমতা দিয়ে তার দায়িত্বে নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করতে হবে। ওই নির্বাচন কমিশনের মাধ্যমে নতুন করে নির্বাচন হবে এবং সেই নির্বাচনের মাধ্যমে সবার গ্রহণযোগ্যতার ভিত্তিতে সরকার গঠন করবে। সমাবেশে অংশ নেয়া হাজারো নেতাকর্মী সরকারবিরোধী নানা স্লোগান দেন। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিও জানান তারা।
আওয়ামী লীগ নেতারা জানিয়েছেন, পাল্টাপাল্টি সমাবেশের কোনো কর্মসূচির দিকে যাবেন না তারা। তবে সর্বোচ্চ উপস্থিতিতে সমাবেশগুলো করবে দলটি। গত শুক্রবার কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকের সিদ্ধান্তের প্রেক্ষাপটে দলীয় অবস্থান তুলে ধরে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এডভোকেট আফজাল হোসেন ভোরের কাগজকে বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্পষ্ট নির্দেশ দিয়েছেন, বিএনপির আন্দোলন দমন বা বাধাগ্রস্ত করা যাবে না। তারা তাদের মতো সমাবেশ করবে। সরকার বা দল বাধা দেবে না। তবে সমাবেশের নামে বিশৃঙ্খলা করলে দাঁতভাঙা জবাব দেয়ার জন্য প্রস্তুত রয়েছে আওয়ামী লীগ।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, উত্তপ্ত রাজপথ নিয়ন্ত্রণে রাখতে চায় ক্ষমতাসীনরা। এক্ষেত্রে বিএনপিকে ছাড় দেবে না। অন্যদিকে নির্বাচনের বছরে এসে মরণকামড় দিতে চাইবে বিএনপিও। জানতে চাইলে রাজনৈতিক বিশ্লেষক মহিউদ্দিন আহমদ ভোরের কাগজকে বলেন, নির্বাচনের আরো দেড় বছর বাকি। এখন থেকেই আন্দোলন কর্মসূচি চলতে থাকলে বিএনপির নৈরাজ্য বেড়ে যাবে। রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা নষ্ট হবে। সরকার তা হতে দিতে পারে না। রাজপথে মোকাবিলার মাধ্যমে বিএনপিকে চাপে রাখতে চায় সরকার।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়