রাজধানীতে ছাদ থেকে নিচে পড়ে নারীর মৃত্যু

আগের সংবাদ

গরমে বিপর্যস্ত জনজীবন

পরের সংবাদ

রিয়ালের প্রতিশোধে অনুশোচনা নেই গার্দিওয়ালার

প্রকাশিত: এপ্রিল ১৯, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: এপ্রিল ১৯, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ ডেস্ক : উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগে গতকাল চিরপ্রতিদ্ব›দ্বী রিয়াল মাদ্রিদের বিপক্ষে টাইব্রেকার শুটআউটে হেরে লিগ থেকে ছিটকে গিয়েছে ম্যানচেস্টার সিটি। ঠিক আগের মৌসুমেই সিটির বিপক্ষে টুর্নামেন্টের সেমিফাইনালে হেরেছিল রিয়াল। ফলে এ জয় রিয়াল মাদ্রিদের জন্য প্রতিশোধেরই বটে। তবে আনচেলত্তির নেয়া এ প্রতিশোধ নিয়ে কোনো প্রকার অনুশোচনা নেই সিটি বস পেপ গার্দিওয়ালার। ম্যাচ শেষে দেয়া বক্তব্যে গার্দিওলা জানিয়েছেন, রিয়ালের রক্ষণাত্মক ভঙ্গিতে খেলাকে বিচার করতে চান না। সিটি যেভাবে খেলেছে তাতেও তার কোনো অনুশোচনা নেই। ইত্তিহাদ স্টেডিয়ামে গতকাল কেভিন ডি ব্রুইনোর গোলে সমতায় ফিরে ম্যানচেস্টার সিটি। তবে টাইব্রেকার শুটআউটে ৪-৩ গোলে হেরে যায় পেপ গার্দিওয়ালার দল। ফলে লিগে সেমিফাইনাল নিশ্চিত করে রিয়াল।
ইত্তিহাদে গতকাল ম্যাচের পর রিয়াল বস আনচেলত্তি বলেছেন, ‘আমার বিশ্বাস সিটিকে অন্য কোনোভাবে হারানো সম্ভব ছিল না। ফলে আমরা যা করেছি, তাতে ভীষণ গর্বিত।’ স্নায়ুক্ষয়ী পেনাল্টির সময় অস্থির অবস্থায় ছিলেন আনচেলত্তি। টাচ লাইনে অস্থিরভাবে পায়চারি করছিলেন তিনি। আনচেলত্তি বলেছেন, যখন শুটআউটে ম্যাচ গড়ায় তিনি নিশ্চিত ছিলেন যে, তার দল বাধা পার করে ফেলবে। তিনি জানান, ‘ পেনাল্টি শুটআউট যখন শুরু হলো, আমরা নিশ্চিত ছিলাম যে, বাধা পার করে ফেলব।’ এদিকে রিয়ালের এ প্রতিশোধে কোনো অনুশোচনা নেই সিটি বস পেপ গার্দিওয়ালার।
ম্যাচের পর গার্দিওলা বলেছেন, ‘রিয়াল মাদ্রিদকে অভিনন্দন। ওরা এত গভীরভাবে রক্ষণ সামলেছে, যাতে ছিল অবিশ্বাস্য একতা। আমরা সব কিছুই করেছি। তাতেও না হওয়ায় আমার কোনো অনুশোচনা নেই। রক্ষণ, আক্রমণ সব বিভাগেই ব্যতিক্রমভাবে চেষ্টা করেছি। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে আমরা জিততে পারিনি।’ ইত্তিহাদ স্টেডিয়ামে গতকাল রুদ্রিগোর গোলে এগিয়ে গিয়েছিল সফরকারী মাদ্রিদ। কেভিন ডি ব্রুইনা দ্বিতীয়ার্ধে সিটিকে সমতায় ফেরালে নির্ধারিত ও অতিরিক্ত সময় মিলিয়ে ম্যাচটি দুই লেগে ৪-৪ ব্যবধানে শেষ হয়। এরপর ভাগ্য নির্ধারণের জন্য পেনাল্টির প্রয়োজন হয়। টাইব্রেকারে মাদ্রিদের অনিয়মিত গোলরক্ষক আন্দ্রি লুনিন বার্নান্ডো সিলভা ও মাতেও কোভাচিচের শট রুখে দেন।
এর মাধ্যমে সিটির শিরোপা ধরে রাখার স্বপ্নভঙ্গ হয়। ইউক্রেনিয়ান গোলরক্ষক এ মৌসুমে ইনজুরিতে থাকা এক নম্বর গোলরক্ষক থিবো কোর্তোয়ার ডেপুটি হিসেবে খেলে যাচ্ছেন। প্রথম লেগে তিনি যে ভুলগুলো করেছিলেন তারই খেসারত গতকাল দিয়েছেন। শেষ চারে মাদ্রিদের প্রতিপক্ষ বায়ার্ন মিউনিখ। গতকাল জার্মান জায়ান্টরা আরেক ইংলিশ ক্লাব আর্সেনালকে দুই লেগ মিলিয়ে ৩-২ ব্যবধানে বিদায় করে শেষ চারের টিকেট কেটেছে।
২০১৮ সালের পর থেকে চ্যাম্পিয়নস লিগে ঘরের মাঠে কোনো ম্যাচে হারেনি সিটি। কিন্তু গতকাল রেকর্ড ১৪ বারের বিজয়ী মাদ্রিদের জেদী রক্ষণভাগকে ভাঙা সম্ভব হয়নি। গোলের জন্য সিটি ৩৪ বার চেষ্টা চালিয়েছে। বলের পজিশন ৭২ শতাংশ নিজেদের মধ্যে রাখলেও শেষ রক্ষা করতে পারেনি। ১১ মাস আগে এই ইত্তিহাদ স্টেডিয়ামেই সিটির কাছে ৪-০ গোলে বিধ্বস্ত হয়ে সেমিফাইনাল থেকে বিদায় নিয়েছিল মাদ্রিদ। ঐ আসরে পেপ গার্দিওলার দল প্রথমবারের মতো চ্যাম্পিয়নস লিগের শিরোপা জয় করে।
দুই বছর আগে সেমিফাইনালের প্রথম লেগে ঘরের মাঠে ৪-৩ গোলে জয়ী হলেও দ্বিতীয় লেগে মাদ্রিদ ঠিকই ফিরে এসেছিল। কার্লো আনচেলত্তির দল রিয়াল গতকাল জয়ের জন্য প্রথম থেকেই মরিয়া হয়ে উঠেছিল। তার ফলও তারা পেয়েছে। বেলিংহামই প্রথম সুযোগ পেয়েছিল। কিন্তু ডানদিক থেকে তার প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়।
১২ মিনিটে ডানদিক থেকে আরো একটি সংঘবদ্ধ আক্রমণে বেলিংহামের দারুণ এক পাস থেকে ভিনিসিয়াস জুনিয়র ফাঁকায় দাঁড়ানো রুদ্রিগোর দিকে বল বাড়িয়ে দেন। রুদ্রিগোর প্রথম সুযোগের শটটি এডারসন রুখে দিলেও ফিরতি শটে ঠিকই তিনি বল জালে জড়ান। সমতায় ফিরতে সিটিতে ৭৬ মিনিট পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়েছে। রিয়ালের বিপক্ষে টানা চার ম্যাচে গোল করতে ব্যর্থ হলেন সিটি স্ট্রাইকার আর্লিং হালান্ড। যদিও রুদ্রিগোর গোলের পরপরই তার একটি হেড ক্রসবারে লেগে ফেরত আসে। ফিরতি বলটি সিলভা কাজে লাগাতে পারেননি। বক্সের বাইরে থেকে ডি ব্রুইনার একটি শট লুনিন দারুণ দক্ষতায় রুখে দেন। জ্যাক গ্রিলিশের ডিফ্লেকটেড শট সাইড নেটে লেগে বাইরে চলে যায়।
দ্বিতীয়ার্ধ শুরুর পর গ্রিলিশের আরো দুটি শট রুখে দিয়েছে লুনিন। ৭২ মিনিটে গ্রিলিশের স্থানে জেরেমি ডকুকে মাঠে নামান গার্দিওলা। এই পরিবর্তনেই ঘুড়ে দাঁড়ায় সিটি। ডকুর নিখুঁত ক্রসে ম্যাচ শেষের ১৪ মিনিট আগে ডি ব্রুইনার জোড়ালো শটে সমতায় ফিরে সিটিজেনরা। এরপর আরো একটি ভালো সুযোগ পেয়েছিলেন ডি ব্রুইনা। কিন্তু এবার তার শটটি ক্রসবারের উপর দিয়ে বাইরে চলে যায়। অতিরিক্ত সময়ে হালান্ড ও ডি ব্রুইনাকে বদলি বেঞ্চে পাঠাতে বাধ্য হন গার্দিওলা। অতিরিক্ত সময়ের ৩০ মিনিটে মাদ্রিদের হয়ে সবচেয়ে সহজ সুযোগ হাতছাড়া করেন রুদ্রিগো।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়