পররাষ্ট্রমন্ত্রী : সোমবার ২৮৫ বিজিপি সদস্যকে ফিরিয়ে নেবে মিয়ানমার

আগের সংবাদ

ফিটনেস টেস্টে প্রথম দিনে অনুপস্থিত চার ক্রিকেটার

প্রকাশিত: এপ্রিল ২১, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: এপ্রিল ২১, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : বিশ্বকাপ এবং জিম্বাবুয়ে সিরিজের আগে গতকাল ফিটনেস টেস্টে অংশ নিয়েছেন ৩৫ ক্রিকেটার। ৩৯ ক্রিকেটারের নাম থাকলেও যোগ দেননি সাকিব আল হাসান, সৌম্য সরকার, তাইজুল ইসলাম এবং তাসকিন আহমেদ। তবে এসব ক্রিকেটারদের পরে সুযোগ থাকছে ফিটনেস পরীক্ষা দেয়ার। গতকাল সকাল ছয়টায় বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামের অ্যাথলেটিকস ট্রাকে শুরুতে ২০ এবং ৪০ মিটার দৌড় হয়। এরপর ১৬০০ মিটার দৌড়ায় ক্রিকেটাররা। যেখানে দুই গ্রুপে প্রথম হন তানজিম হাসান সাকিব এবং নাহিদ রানা। এরপর শেরেবাংলার ইনডোরে বাকি পরীক্ষা দেবেন খেলোয়াড়রা।
সকালে রানিং শেষে ট্রেনার ইফতেখার ইসলাম গণমাধ্যমে বলেন, ‘অ্যাথলেটিকস ট্র্যাক বেছে নেয়ার কারণ আসলে টাইমিংয়ের একটা বিষয় আছে। আমরা যদি আন্তর্জাতিকভাবে অনুসরণ করি তাহলে বেশ কিছু টেস্টিং মেথড আছে, আমরা গতকাল ১৬শ মিটার টাইম-ট্রায়াল নিয়েছি। অ্যাথলেটিকস ট্র্যাকে যদি নেই তাহলে প্রপার টাইমিংটা হয়। কারণ ওইভাবেই হিসাব করা হয়। এটা ওদের কাছে নতুন মনে হয়েছে। সব মিলিয়ে ভালো।’
গতকা সকাল ৬টায় শুরু এই ফিটনেস টেস্ট চলে সাড়ে ৭টা পর্যন্ত। প্রথমে হালকা ওয়ার্মআপ করেন ক্রিকেটাররা। করেন হালকা স্ট্রেচিংও। সবশেষে দুই ভাগে ভাগ হয়ে দৌড়ান ১৬০০ মিটার স্প্রিন্টে। ফিটনেস পরীক্ষার বাকি অংশগুলো হবে শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে। যে কোনো সিরিজ শুরুর আগেই এমন ফিটনেস ট্রেনিং হয়ে থাকে। এতদিন এসব হতো মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে। এবার সেটা হয়েছে বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে। চলতি বছর সব সংস্করণে ঠাসা সূচির কথা বিবেচনা করে ক্রিকেটারদের ফিটনেসের অবস্থা পরীক্ষা করা হয়েছে। আগামী ৭ মাসে বাংলাদেশ দল খেলবে ৮ টেস্ট, ৩ ওয়ানডে এবং অন্তত ১৮টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ। জাতীয় দলের আশপাশে থাকা ৩৫ ক্রিকেটারকে নিয়ে এই সেশন অনুষ্ঠিত হয়। নিয়মিত ক্রিকেটারদের মধ্যে আইপিএলে থাকায় মোস্তাফিজুর রহমান, চোট থেকে ফেরার পথে থাকায় সৌম্য সরকার ও যুক্তরাষ্ট্রে থাকায় সাকিব আল হাসান তাতে ছিলেন না। এছাড়া তাসকিন আহমেদ ও তাইজুল ইসলামকেও দেখা যায়নি গত সপ্তাহে পেশির টান পাওয়ার কারণে। সবশেষে বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামের অ্যাথলেটিকস ট্র্যাকে ক্রিকেটারদের রানিং রেখেছিলেন অস্ট্রেলিয়ান স্ট্রেন্থ অ্যান্ড কন্ডিশনিং কোচ নাথান কেইলি। গতকাল বর্তমান দলের ক্রিকেটারদের মধ্যে সবার সিনিয়র ৩৮ পেরুনো মাহমুদউল্লাহ দৌড় শেষ করেছেন সবার শেষে।
ফিটনেশ সেশনে শেষে ট্রেনার ইফতেখার ইসলাম ইফতি বলেছেন, এর মাধ্যমে খেলোয়াড়দের সামগ্রিক ফিটনেসের অবস্থা বুঝতে চেয়েছেন তারা, ‘এই পরীক্ষার মাধ্যমে বুঝলাম খেলোয়াড়দের অবস্থাটা কেমন। এটার মধ্যে পাস-ফেলের কিছু নেই। ডিপিএল গিয়েছে, বিপিএল গিয়েছে। এরপরে ওদের ফিটনেসের অবস্থা কী সেটা জানার জন্য (এই উদ্যোগ)। এটা জানার পর খেলোয়াড়দের কাকে কী অনুশীলন করাতে হবে এটা খুঁজে বের করব। ওদের জানিয়ে দেব ওভাবেই আমরা সেসব প্রয়োগ করব।’
বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামের একটা আলাদা মায়া আছে। ফুটবল, ক্রিকেট, অ্যাথলেটিকস বাংলাদেশের অনেক খেলার অতীত এখানে। গতকাল সকালে সেই অতীতেই যেন ফিরে গেলেন বাংলাদেশের শীর্ষ পর্যায়ের একঝাঁক ক্রিকেটার। দেশের ক্রিকেটে এক সময়ের তীর্থস্থান ছিল বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়াম। ২০০৬ সাল এই মাঠ ফুটবলের জন্য বরাদ্দ পায় এবং মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়াম হয়ে যায় ক্রিকেটের নতুন ঠিকানা। স্বাভাবিকভাবেই বাংলাদেশ ক্রিকেটের একটা প্রজন্মের ক্রিকেটারদের কাছে বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়াম স্মৃতিময় অতীত।
এখনো আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলছেন, এমন ক্রিকেটারদের মধ্যে শুধু মাহমুদউল্লাহ ও মুশফিকুর রহিমের এ মাঠে খেলার অভিজ্ঞতা আছে।
সকালে বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে ঢুকেই স্মৃতিকাতর হয়ে পড়েন তিনি। জাতীয় দলের ম্যানেজার নাফীস ইকবালেরও অনেক স্মৃতি জড়িয়ে এই স্টেডিয়ামে। বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে নিজের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে নাফীস বলেছেন, ‘১৯৯৪ সালে প্রথম এই মাঠে আসি আমি। অনেক আইকন ক্রিকেটার এখানে খেলতেন। তাদের দেখতে মাঠে আসতাম। ২০০৪ সালে আমার ক্যারিয়ারের গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস এই মাঠে খেলেছি, ভারতের অনূর্ধ্ব-১৯ দলের বিপক্ষেও প্রস্তুতি ম্যাচে সেঞ্চুরি করেছিলাম।
তখন হয়তো বুঝিনি। কিন্তু এখন বুঝি সেই ইনিংসটি অনেক গুরুত্বপূর্ণ ছিল। বন্ধুবন্ধু স্টেডিয়ামের প্রত্যেকটা ইঞ্চি ইতিহাস বহন করে। আমাদের প্রজন্মের খেলোয়াড়, শুধু ক্রিকেটার নয়, অন্য অঙ্গনের খেলোয়াড়রাও একই কথা বলবে।’
ইফতি আরও বলেছেন, ‘আমরা ১৬শ মিটার নিয়েছি তাদের কার্ডিও ভাস্কুলার সিস্টেম কীভাবে কাজ করে, ওদের ক্যাপাসিটি কেমন। স্প্রিন্ট টেস্ট নিয়েছি বুঝতে তারা কত দ্রুত এটা দেখতে। ৪০ মিটার স্প্রিন্ট যেটা ছিল প্রথম ২০ মিটারে কে কতটুকু গতিময়। সাধারণত এক-দুই মিটারের জন্য একটা রান আউট হয় বা এক-দুই সেন্টিমিটারের জন্য আমরা একটা চার বাঁচাতে পারি না। স্প্রিন্টিং দেখলাম কীভাবে আরও গতিময় করা যায়। আর ১৬শ মিটারে দেখলাম মাঠে থাকার ক্যাপাসিটিটা কতটুকু।’

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়