গ্রামীণ ব্যাংকের ৩ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুদকের মামলা : অর্থ আত্মসাৎ

আগের সংবাদ

মন্ত্রী-এমপির হস্তক্ষেপে লাগাম

পরের সংবাদ

মধ্যপ্রাচ্য পরিস্থিতিতে আগাম প্রস্তুতির নির্দেশনা প্রধানমন্ত্রীর

প্রকাশিত: এপ্রিল ১৮, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: এপ্রিল ১৮, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : মধ্যপ্রাচ্যের চলমান উত্তেজনা নিয়ে মন্ত্রিসভার সব সদস্য ও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে তীক্ষè নজর রাখার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একই সঙ্গে উদ্ভূত পরিস্থিতি মোকাবিলায় সবাইকে প্রস্তুত থাকতে বলেছেন। গতকাল বুধবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠকে এই নির্দেশনা দেন তিনি। পরে সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত ব্রিফিংয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান। এছাড়াও গত জানুয়ারি-মার্চ মাসে মন্ত্রিসভা বৈঠকে গৃহীত সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের বিষয়ে মন্ত্রিসভাকে অবহিত করা হয়েছে। চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে মন্ত্রিসভায় বাস্তবায়নাধীন বিষয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, যেগুলো বাস্তবায়ন করা যাবে না; সেগুলো যাতে আবার মন্ত্রিসভাকে জানানো হয়। তখন প্রয়োজনে সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে দেয়া হবে। পাশাপাশি মহেশখালী সমন্বিত উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ আইন ও প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার (পারিতোষিক ও বিশেষাধিকার) আইনও মন্ত্রিসভায় অনুমোদন পেয়েছে।
বৈঠক শেষে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, মধ্যপ্রাচ্যের উত্তেজনায় সম্ভাব্য প্রতিক্রিয়া কী হতে পারে- সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে এখন থেকে প্রস্তুতি নিতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী। সংঘাত যদি দীর্ঘমেয়াদি হয়; সেটি কীভাবে আমরা মোকাবিলা করব এবং তা মোকাবিলার জন্য আমরা কী করতে পারি- সে প্রস্তুতি নেয়ার পাশাপাশি ঘটনাপ্রবাহের দিকেও নজর রাখতে বলেছেন তিনি। কোন কোন খাতে প্রস্তুতি নেয়ার জন্য বলা হয়েছে- জানতে চাইলে মাহবুব হোসেন বলেন, সবাইকে বলেছেন, যার যার সেক্টরে সবাই যেন প্রস্তুতি নেয়। ক্রাইসিস তৈরি হলে জ¦ালানি তেলের দাম বেড়ে যেতে পারে, তখন কী করা যায়, সেসব বিষয়েও পরিকল্পনা রাখতে বলেছেন।
মহেশখালীর সমন্বিত উন্নয়নে গঠন হচ্ছে কর্তৃপক্ষ : কক্সবাজারের মহেশখালীর মাতারবাড়িতে সমন্বিত উন্নয়ন কার্যক্রমের জন্য গঠন হচ্ছে কর্তৃপক্ষ। এজন্য ‘মহেশখালী সমন্বিত উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ আইন, ২০২৪’ এর খসড়ার নীতিগত ও চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। গতকাল বুধবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠকে এ অনুমোদন দেয়া হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন। বৈঠক শেষে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন জানান, মহেশখালীর মাতারবাড়ি সমন্বিত উন্নয়ন কার্যক্রম হাতে নেয়া হয়েছে। ২০১৪ সালে জাপানের প্রধানমন্ত্রীর বাংলাদেশ সফরকালে উভয় দেশের প্রধানমন্ত্রী যৌথ ঘোষণা দিয়েছিলেন, তার আওতায় জাপান সরকার মাতাবাড়িতে উন্নয়ন কার্যক্রম নেয়ার জন্য উদ্বোধন করে গেছেন। সেটিকে ভিত্তি করে মাতারবাড়িকে কেন্দ্র করে যাতে অর্থনৈতিক জোন তৈরি করা যায়; যেখানে ডিপ-সি ফ্যাসিলিটি থেকে শুরু করে উন্নয়নের বেসিক কিছু অবকাঠামো নির্মাণ করে সামগ্রিক কিছু এরিয়াকে চিহ্নিত করে

উন্নয়ন কর্মকাণ্ড করা যায়- সেই উদ্যোগ বাস্তবায়নে বেশ কিছু কার্যক্রম নেয়া হয়েছে। এই পুরো কাজগুলো এখন আলাদা আলাদা মন্ত্রণালয় থেকে করছে। সমন্বিতভাবে এসব কাজ করতে প্রধানমন্ত্রীর আওতাধীন মহেশখালী সমন্বিত উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ গঠনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। খসড়া আইন অনুযায়ী এই কর্তৃপক্ষের গভর্নিং বোর্ডের প্রধান হিসেবে প্রধানমন্ত্রী থাকবেন জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, বোর্ডে অর্থমন্ত্রীসহ কয়েকজন মন্ত্রীকে নিয়ে ১৭ সদস্য থাকবেন। মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার হিসেবে থাকবেন। অথরিটির মূল কাজ হবে নির্ধারিত এলাকায় ভূমি ব্যবহারের মাস্টারপ্ল্যান করে তা বাস্তবায়ন করা। যাদের ভূমি দেয়া হবে তারা যেন যথাযথভাবে কাজ করে। মূল লক্ষ্য হবে বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণ করা। আমদানি ও রপ্তানির সময় যেন কম হয়। ওই এলাকায় উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের জন্য ৫৫ হাজার ৯৬৮ একর জমি থাকবে জানিয়ে তিনি বলেন, যে এলাকায় মাস্টারপ্ল্যান হবে, সেখানে যেন পরিবেশ সংরক্ষণ থাকে। লবণ চাষ, পান ও চিনির চাষও যেন সুরক্ষিত থাকে তা নিশ্চিত করা হয়েছে। তিনি আরো বলেন, দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ যাতে ঘটে তাতে প্রাতিষ্ঠানিক সহায়তা দিতে এটা (আইন) করা হচ্ছে। কিছু পর্যবেক্ষণ দেয়া হয়েছে। সেগুলো নিষ্পত্তি করে পুনরায় আইনটি মন্ত্রিসভায় তোলা হবে।
নির্বাচন কমিশনারদের বেতন-ভাতার আইন অনুমোদন : প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এবং অন্য নির্বাচন কমিশনারদের বেতন-ভাতা (পারিতোষিক ও বিশেষাধিকার)সংক্রান্ত আইনের খসড়া অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন জানান, সামরিক শাসনের আমলে যেসব আইন তৈরি করা হয়েছিল সেগুলো বাতিলের একটি তালিকা তৈরির নির্দেশনা দিয়েছিল আদালত। সেখানে ‘দ্য চিফ ইলেকশন কমিশনার অ্যান্ড ইলেকশন কমিশনারস (রিমিউনারেশন অ্যান্ড প্রিভিলিজেস) অর্ডিন্যান্স, ১৯৮৩’ এর বাংলায় রূপান্তর করারও একটি নির্দেশনা ছিল। গতকাল মন্ত্রিসভার বৈঠকে সেই বাংলা আইনের খসড়ার নীতিগত অনুমোদন দেয়া হয়েছে। সেক্ষেত্রে আইন বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে এটি উপস্থাপন করা হয়েছিল। এটি মূল ইংরেজি আইনের বাংলা সংস্করণ। মাহবুব হোসেন বলেন, এ আইনের মূল কথা ছিল, সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিরা যেসব সুযোগ-সুবিধা পান; তেমনি প্রধান নির্বাচন কমিশনার আপিল বিভাগের একজন বিচারপতির সমমর্যাদাসম্পন্ন বেতন-ভাতা পাবেন। আর অন্য নির্বাচন কমিশনাররা হাইকোর্ট বিভাগের একজন বিচারপতির সমান বেতন-ভাতা পাবেন। অন্যান্য ভাতাও বিচারপতিরা যেটা পান, তারাও সেটা পাবেন। তিনি বলেন, অর্থাৎ আগের যে আইনটি আছে, আজ সেটির বাংলা সংস্করণের নীতিগত অনুমোদন দেয়া হয়েছে। কোনো পরিবর্তন নেই।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়