গ্রামীণ ব্যাংকের ৩ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুদকের মামলা : অর্থ আত্মসাৎ

আগের সংবাদ

মন্ত্রী-এমপির হস্তক্ষেপে লাগাম

পরের সংবাদ

বংশাই নদীতে নেই সেতু ভোগান্তিতে এলাকাবাসী

প্রকাশিত: এপ্রিল ১৮, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: এপ্রিল ১৮, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

আহমেদ সাজু, সখীপুর (টাঙ্গাইল) থেকে : বংশাই নদীর বড়ইতলা খেয়াঘাটের মাঝি বয়োবৃদ্ধ মহাদেব নিজেও আর খেয়া পারাপারে আগ্রহী নন। তিনি প্রতিদিন কয়েকশ টাকার বিনিময়ে টাঙ্গাইলের বাসাইল ও সখীপুর উপজেলার বড়ইতলা ঘাটে অসংখ্য মানুষ পারাপার করে থাকেন। জীবনের শেষ বেলায় এসে তিনি দেখতে চান যে বড়ইতলা বংশাই নদীতে একটি সেতু হবে। মানুষকে কষ্ট করে খেয়া পারাপার হতে হবে না। এখানে সেতু হলে হয়তো তার জীবিকার ক্ষতি হবে, তারপরও তিনি চান এলাকার মানুষের উন্নত যোগাযোগের জন্য সেতু তৈরি করা হোক। গত রবিবার সরজমিন, দুপুরে নদীর ঘাটে দৈনিক ভোরের কাগজের এ প্রতিনিধির সঙ্গে বয়োবৃদ্ধ মহাদেবের কথা হয়। এ ঘাট ইজারার আওতাধীন নয়। তাই ইজারা ছাড়াই খেয়া পারাপার করেন তিনি। তবে কিছু অর্থ স্থানীয় লোকজনকে দিতে হয়। খেয়া পারাপার হয়ে থাকে স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসার শিক্ষার্থীসহ বহু মানুষ। পড়াশোনা করেননি মহাদেব। তিনি তার বাবার পথ ধরে খেয়া পারাপারে এসেছিলেন। কিন্তু তার সন্তানরা এ পেশায় আসতে রাজি নন। বয়সের ভারে ন্যুব্জ মাঝি মহাদেব রাতে চোখে খুব একটা ভালো দেখেন না। গত বছর সাঁতরে নদী পার হওয়ার সময় দু’জন মারা যান। এতে তিনি অনেক কষ্ট পেয়েছেন। নদীর পশ্চিম তীরে গিলাবাড়ী, সুর্না, বার্থা অন্যদিকে পূর্ব তীরে দাড়িয়াপুর, আকন্দপাড়া, আবাদি বাজারসহ দুইপারের কয়েকটি গ্রামের প্রায় লাখের অধিক মানুষ বাস করে থাকে। নদীর পূর্ব পাড়ের বাসিন্দা শাহিন মিয়া জানান, আমাদের বড়ই ঘাটের প্রশস্ত ১০০ থেকে ১২০ মিটার। সেতু না থাকায় পারাপারে চরম ভোগান্তি পোহাতে হয়। নদীর দুই পাড়েই প্রচুর আবাদি জমি। সেতু না থাকায় জমির ফসল ঘরে তুলতে বেশি খরচ পড়ে যায়। নদীর পশ্চিম তীরের বাসিন্দা আবুল হোসেন বলেন, সেতু না থাকায় গবাদিপশু নিয়ে ভোগান্তি পোহাতে হয়। কতদিন আর কষ্ট করব? এটা তার আক্ষেপ। অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী সুমাইয়া আক্তার বলেন, শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের সুবিধার কথা বিবেচনা করে দ্রুত সেতু নির্মাণ দরকার। নদী পার হয়ে স্কুলে যাব, এটা ভাবতেই মনের মধ্যে ভয় কাজ করে। পারাপারের আমাদের একমাত্র ভরসা শুষ্ক মৌসুমে বাঁশের সাঁকো আর বর্ষায় নৌকা। মোবাইল ফোনে প্রতিনিধিকে দাড়িয়াপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম শামীম বলেন, বড়ইতলা ঘাট জেলা সদরের সঙ্গে সবচেয়ে সহজ সংযোগ সড়ক। ফলে এখানে সেতু হলে দুই পাড়ের মানুষের যাতায়াতে ভীষণ উপকার হতো। এ ঘাটের এক পাড়ে ফালু চাঁন অন্য পাড়ে নব্বেছ পীর সাহেবের মেলা বসে। মেলায় প্রচুর মানুষের সমাগম হয়। তাদের জন্যও সেতু দরকার। এই ঘাটে সেতু নির্মাণ দুই উপজেলার মানুষের প্রাণের দাবি। সখীপুর উপজেলা প্রকৌশলী বাছেদ মিয়া বলেন, বড়ইতলা ঘাটে সেতু নির্মাণের প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে বাসাইল-সখীপুর টাঙ্গাইল-৮ আসনের সংসদ সদস্য অনুপম শাজাহান জয় দৈনিক ভোরের কাগজের প্রতিনিধিকে বলেন, নদীর দুই পাড়ের মানুষের দুর্ভোগের বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনায় নেয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে বড়ইতলা ঘাটের সেতু নির্মাণের জন্য সংশ্লিষ্ট অধিদপ্তরে প্রস্তাবনা দেয়া হয়েছে। অনুমোদন পেলে খুব শীগ্রই সেতু নির্মাণের কাজ শুরু হবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়