পররাষ্ট্রমন্ত্রী : সোমবার ২৮৫ বিজিপি সদস্যকে ফিরিয়ে নেবে মিয়ানমার

আগের সংবাদ

মেহেরপুরে তীব্র তাপপ্রবাহ : গোখাদ্য সংকটে শত শত খামারির ভরসা কচুরিপানা

প্রকাশিত: এপ্রিল ২১, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: এপ্রিল ২১, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

মেহেরপুর প্রতিনিধি : কিছুদিন ধরেই মেহেরপুরে বেড়েছে রোদের তীব্রতা। ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়িয়েছে তাপমাত্রা। জনজীবন হয়ে পড়েছে বিপর্যস্ত। জেলাজুড়ে দেখা দিয়েছে গোখাদ্য সংকট। সেই সঙ্গে অতিরিক্ত তাপমাত্রায় নষ্ট হচ্ছে মাঠঘাটের ঘাস। বাজারে বিক্রি হওয়া ঘাসের দামও বেড়েছে কয়েক গুণ। এমন অবস্থায় বিপাকে পড়েছে শত শত গবাদি পশু খামারিরা। উপায় না পেয়ে ভৈরব নদে প্রাকৃতিকভাবে জন্মানো কচুরিপানার ওপর ভরসা করছে অনেক খামারি। প্রতিদিনই ভ্যান, সাইকেল ও অটোরিকশায় করে কচুরিপানা নিয়ে যাচ্ছে খামারে। খড়ের সঙ্গে মিশিয়ে খাওয়ানো হচ্ছে গবাদি পশুকে।
সদর উপজেলা ও মুজিবনগর উপজেলার বুক চিরে বয়ে চুয়াডাঙ্গার মাথাভাঙা নদীতে গিয়ে মিশেছে ভৈরব নদ। ভৈরবের দুঃখ কচুরিপানা এখন মানুষের কাছে আর্শিবাদে পরিণত হয়েছে। মেহেরপুর অংশে ২৯ কিলোমিটার ভৈরবের বেশির ভাগ কচুরিপানার দখলে। এই কচুরিপানা এখন ব্যবহৃত হচ্ছে গোখাদ্যে। জেলার শত শত খামারি ছুটছে কচুরিপানা কাটতে। তবে এক্ষেত্রে অনেক সময় পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় পশুর নানা সমস্যা দেখা দিলেও অনেকটা নিরুপায় হয়ে কচুরিপানা খাওয়াতে হচ্ছে বলে জানান অনেকেই।
সদর উপজেলার যাদবপুর গ্রামের রাইসুল আলম বলেন, বাড়িতে তিনটি গরু আছে। দুটি এঁড়ে ও একটি গাভি। মাঠে ঘাস নেই। তীব্র তাপে জমিতে চাষ করা ঘাসও নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। বাজার থেকে কেনার উপায় নেই, দাম বেশি। তাই উপায় না পেয়ে প্রতিদিনই কচুরিপানা কেটে নিয়ে যাচ্ছি। খড়ের সঙ্গে মিশিয়ে গরুকে খাওয়াচ্ছি।
আব্দুল মজিদ নামের এক খামারি বলেন, ঈদের পর খাদ্য সংকটের কারণে চারটা গরু বিক্রি করে দিয়েছি। এখনো চারটা আছে। চাষ করা ঘাসেও ফলন নেই। তাই অনেকের দেখা দেখি কচুরিপানা নিয়ে খাইয়েছি। স্বাভাবিক ঘাসের মতো সাচ্ছন্দে না খেলেও খিদে মেটানোর জন্য কচুরিপানাই খাচ্ছে গরুগুলো। তবে কদিন ধরে দেখছি মুখ দিয়ে লালা ঝরছে, খাদ্যের রুচি কমে গিয়েছে। ডাক্তারের পরামর্শ নিয়েছি, ডাক্তার বলেছে বেশিদিন কচুরিপানা খাওয়ানো যাবে না।
ছুরমান আলী নামের আরেক খামারি জানান, রোদের যে তীব্রতা তাতে মাঠে গরু চরানোর মতো পরিবেশ নেই। আমার ছোট বড় মিলে ৭টি গরু আছে। যেগুলো প্রতিদিন মাঠে ও বিভিন্ন পরিত্যক্ত জমিতে চরানো হতো। রোদের কারণে চরানো যাচ্ছে না। মাঠেও ঘাস নেই। আজকে প্রথম কচুরিপানা নিয়ে যাচ্ছি, দেখি খায় কিনা।
মেহেরপুর প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) হারিছুল আবিদ জানান, তীব্র তাপদাহে গোখাদ্যের কিছুটা সংকট দেখা দিয়েছে। এ অবস্থায় গবাদি পশুকে ইপিল-ইপিল গাছের পাতা, কাঁঠাল গাছের, ডুমুর জাতীয় গাছের পাতার পাশাপাশি প্রচুর পরিমাণে বিশুদ্ধ পানি খাওয়ানোর পরামর্শ দিচ্ছি। সেই সঙ্গে হিটস্ট্রোক থেকে বাঁচাতে গবাদি পশুকে প্রতিদিন গোসল করানো ও ঠাণ্ডা জায়গায় রাখার পরামর্শ দিচ্ছি।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়