গ্রামীণ ব্যাংকের ৩ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুদকের মামলা : অর্থ আত্মসাৎ

আগের সংবাদ

মন্ত্রী-এমপির হস্তক্ষেপে লাগাম

পরের সংবাদ

জিম্বাবুয়ে সিরিজে অনিশ্চিত কাটার মাস্টার!

প্রকাশিত: এপ্রিল ১৮, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: এপ্রিল ১৮, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : পাঁচ ম্যাচের টি-টুয়েন্টি সিরিজ খেলতে আগামী ২৮ এপ্রিল বাংলাদেশ সফরে আসছে জিম্বাবুয়ে ক্রিকেট দল। আগামী মে মাসে চট্টগ্রামে তিনটি ও ঢাকায় অনুষ্ঠিত হবে দুটি ম্যাচ। জিম্বাবুয়ে সিরিজের জন্য এখনো বাংলাদেশ দল আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করা হয়নি। প্রধান কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে দেশে ফেরার পর ঘোষণা করা হতে পারে সেই দল। জানা গেছে, জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে পাঁচ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজের দল বিশ্বকাপকে সামনে রেখেই দেবে নির্বাচকরা। টাইগার অলরাউন্ডার সাকিবকে নিয়েই সেই দল ঘোষণা করা হবে। সর্বশেষ শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজের দল থেকে অন্তত দুই ক্রিকেটার বাদ পড়তে যাচ্ছেন। বর্তমানে আইপিএল মাতাচ্ছেন কাটার মাস্টার মোস্তাফিজ। প্রথমে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত ছাড়পত্র ছিল ফিজের, পরে আরও ১ দিন বাড়িয়েছে বিসিবি। সব ঠিক থাকলে আগামী ২ মে বাংলাদেশে পৌঁছানোর কথা রয়েছে মোস্তাফিজের। টাইগার এই পেসারকে নিয়ে গতকাল বিসিবির ক্রিকেট অপারেশন্স চেয়ারম্যান জালাল ইউনুস কথা বলেছেন। গণমাধ্যমে বিসিবির এই পরিচালক জানান, আইপিএল থেকে মোস্তাফিজের শেখার কিছু নেই।
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজ থাকায় মোস্তাফিজকে দেশে ফিরিয়ে আনছে বোর্ড। তবে তাকে ফেরানো মানে যে, জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে খেলানো হবে তা নয়। ওয়ার্কলোড কমানো, শতভাগ ফিট ও সতেজ রাখার পরিকল্পনায় মোস্তাফিজকে ফেরানো হচ্ছে বিশ্বের সবচেয়ে বড় ও আকর্ষণীয় ফ্র্যাঞ্চাইজি প্রতিযোগিতা থেকে। যেখানে এবার দুর্দান্ত ফর্মে আছেন মোস্তাফিজ। ৫ ইনিংসে ১৮.৩০ গড়ে একমাত্র বিদেশি হিসেবে পেয়েছেন ১০ উইকেট।
মোস্তাফিজ ইস্যুতে দুদিন আগে বিসিবির অন্যতম পরিচালক আকরাম খান বলেছেন, জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে খেলার চেয়ে আইপিএল খেলাই মোস্তাফিজের জন্য বেশি ভালো হবে। গতকাল দুপুর গড়িয়ে বিকাল নামতেই বিসিবির আরেক পরিচালক জালাল ইউনুস জানালেন, জিম্বাবুয়ে সিরিজের আগে আইপিএল থেকে দেশে ফিরিয়ে আনা হবে মোস্তাফিজকে। মিরপুর হোম অব ক্রিকেটে মোস্তাফিজকে নিয়ে খোলামেলা কথা বলেছেন ক্রিকেট বোর্ডের পরিচালক ও ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের চেয়ারম্যান জালাল ইউনুস, ‘মোস্তাফিজকে আমরা ১ তারিখ পর্যন্ত খেলতে দিয়েছি। ২ তারিখে সে চলে আসবে। ৩ তারিখে সে অ্যাভেইলেভল। তাকে ব্যাক করানোর কারণ কিন্তু শুধু জিম্বাবুয়ে সিরিজে খেলানোর জন্য না। তাকে ওয়ার্কলোড দিয়ে আমরা খেলাব। এখানে আনলে তাকে পরিকল্পনা দেব।’
জালাল ইউনুস সামনে আনলেন ২০২১ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ঘটনা। যেখানে মোস্তাফিজ ও সাকিব টানা আইপিএলের ম্যাচ খেলে বিশ্বকাপ খেলতে গিয়েছিলেন। সাকিব সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে ওমান গিয়েছিলেন সারারাত গাড়িতে ট্রাভেল করে টুর্নামেন্ট শুরুর একদিন আগে। মোস্তাফিজ আগে পৌঁছেছিলেন বিমানে করে। বিশ্বকাপ চলাকালীন তাদের ক্লান্তির বিষয়টি সামনে আসলে দল থেকে তাদের আড়াল করা হয়েছিল। কিন্তু তিন বছর পর বিষয়টি স্বীকার করতে বাধ্যই হলেন তিনি।
‘জাতীয় দলের স্বার্থ প্রথমে। আপনারা জানেন, ২০২১ সালে দুজন খেলোয়াড় আইপিএল খেলে কিন্তু বিশ্বকাপে জয়েন করেছিল। ওখানে তারা ক্লান্ত ছিল। তারাও বলেছে তারা ক্লান্ত। আমরা ওই রকম কোনো পরিস্থিতি তৈরি করতে চাই না।’
‘মোস্তাফিজকে দেশে ফিরিয়ে আনা মানেই যে জিম্বাবুয়ে সিরিজে খেলাব তা না। তাকে আমরা ওয়ার্কলোড দেব, প্রেসার কমাব। দলের সঙ্গে থাকবে। আন্ডারস্ট্যান্ডিং থাকবে। একটা বিশ্বকাপ, একটা বড় ইভেন্টে যাচ্ছে। ইভেন্টে গিয়ে যেন খেলোয়াড়দের সঙ্গে একসঙ্গে থাকতে পারে। তাকে পুরোপুরি ফিট থাকতে হবে। ক্লান্ত হয়ে গেলে তো সে ডেলিভারি করতে পারবে না। আমাদের কী দরকার? আমাদের দরকার ফ্রেশ মোস্তাফিজ। ক্লান্ত মোস্তাফিজকে চাই না।’ যোগ করেন তিনি।
বোর্ডের এমন ভাবনায় উঠে এসেছে জিম্বাবুয়ে সিরিজে খেলানোর চেয়ে আইপিএলে থাকলে মোস্তাফিজের জন্য ভালো হতো কিনা। এর উত্তরে জালাল ইউনুস বর্তমান বাস্তবতাকেই সামনে নিয়ে আসলেন, ‘মোস্তাফিজের এখন আইপিএলে খেলে শেখার কিছু নেই। লার্নিং প্রসেস ইজ ওভার।’ সঙ্গে যোগ করেন, ‘আইপিএল খেলাটা আপনাদের কাছে মনে হয় ৪ ওভারের খেলা। কিন্তু কত ধকল নিতে হয় আপনারা হয়ত জানেন না। রাতে কিন্তু তাদের ট্রাভেল করতে হয়। খেলা শেষে রাত ১টায় বিমানবন্দরে গিয়ে ঘুমিয়ে তাদের ট্রাভেল করতে হয়। এটায় অনেক কষ্ট। আমাদের কনসার্ন হচ্ছে মোস্তাফিজের হেলথ। তার ফিটনেস। তারা চাইবে ওর থেকে ১০০ ভাগ নেয়ার জন্য। তার ফিটনেসের দিকে কিন্তু ওদের (ফ্র্যাঞ্চাইজির) কোনো মাথাব্যথা নেই। আমাদের আছে। তার আইপিএলে আর শেখার কিছু নেই। সাত-আট বছর ধরে আইপিএল খেলছে।
এখন খেললে বেনিফিটেট তারা হবে আমরা হবো না।’
মোস্তাফিজকে নিয়ে বোর্ডের যে নীতি, যে সচেতনতা তা অনেকটাই সাংঘর্ষিক হয়ে যাচ্ছে তাসকিন এবং শরিফুলের ইস্যুতে। দেশে থাকা এই দুই পেসার টানা ম্যাচ খেলে যাচ্ছেন ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে আবাহনীর জার্সিতে। সেটাও পঞ্চাশ ওভারের ম্যাচ। দেশের চরম গরমের মধ্যেও তাদের টানা ম্যাচ খেলার ঝুঁকি তো আছেই। সামনে যখন ক্যাম্প হবে তখনও তাদের খাটতে হবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়