গ্রামীণ ব্যাংকের ৩ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুদকের মামলা : অর্থ আত্মসাৎ

আগের সংবাদ

মন্ত্রী-এমপির হস্তক্ষেপে লাগাম

পরের সংবাদ

কৃষিজমি সুরক্ষা আইন : দ্রুত পাসে সংসদকে পরামর্শ হাইকোর্টের

প্রকাশিত: এপ্রিল ১৮, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: এপ্রিল ১৮, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : ‘কৃষিজমি সুরক্ষা ও ব্যবহার আইন-২০১৬’ দ্রুত আইন আকারে পাস করতে জাতীয় সংসদকে পরামর্শ দিয়ে রায় ঘোষণা করেছেন হাইকোর্ট। এছাড়া ভূমি মন্ত্রণালয়ের অধীন একটি ‘দ্বীপ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ’ গঠন করে দ্রুত দ্বীপ উন্নয়ন আইন প্রণয়নেও জাতীয় সংসদকে পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
বিচারপতি মো. আশরাফুল কামাল ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ ২০২২ সালের ২ জুন দেয়া একটি মামলার রায়ে এসব পরামর্শ দেন। সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে গত মঙ্গলবার প্রকাশিত হয়েছে ১৫ পৃষ্ঠার এ পূর্ণাঙ্গ রায়। রায়ের অনুলিপি দেশের সব মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ও সংসদ সদস্যের কাছে পাঠাতে সুপ্রিম কোর্ট রেজিস্ট্রার জেনারেলকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
নওগাঁর মিজানুর রহমানকে পুকুর খনন বন্ধ করতে ভূমি অফিসের নোটিস অবৈধ ঘোষণার এ রায়ে আদালত বলেছেন, বালুমহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন-২০১০ এর উপরোল্লিখিত ধারা ৪ পর্যালোচনায় এটি পরিষ্কার যে, বিপণন তথা বিক্রয়ের উদ্দেশে কোনো উন্মুক্ত স্থান থেকে মাটি বা বালু উত্তোলন নিষিদ্ধ। কিন্তু স্বীকৃত মতেই আলোচ্য মোকদ্দমায় দরখাস্তকারী বিপণন বা বিক্রয়ের উদ্দেশে কোনো মাটি উত্তোলন করছেন না। রায়ে বলা হয়, ফসলিজমিতে পুকুর খননের বিধিনিষেধ আরোপ করে কৃষিজমি সুরক্ষা ও ব্যবহার আইন-২০১৬-এর খসড়া প্রণয়ন করা হলেও কোনো এক অজানা কারণে এটি এখনো আলোর মুখ দেখেনি। বাংলাদেশের কৃষিজমি, বনভূমি, টিলা, পাহাড় ইত্যাদি সুরক্ষার জন্য আইনটি দ্রুত জাতীয় সংসদ থেকে পাস হওয়া আবশ্যক। রায়ে আদালত আরো বলেন, সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৪২(১) অনুযায়ী সম্পত্তি অর্জন, ধারণ, হস্তান্তর এবং যে কোনোভাবে এর বিলি-ব্যবস্থা তথা শ্রেণি পরিবর্তন প্রত্যেক নাগরিকের মৌলিক অধিকার। শুধু সংসদ থেকে প্রণীত আইন দ্বারা নাগরিকের উপরোল্লিখিত সম্পত্তি অর্জন, ধারণ, হস্তান্তর এবং যে কোনোভাবে এর বিলি-ব্যবস্থা তথা শ্রেণি পরিবর্তনে বিধিনিষেধ আরোপ তথা নিয়ন্ত্রণ করা যাবে। এটি সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৪২(১) এর মর্মার্থ। সুতরাং দ্ব্যর্থহীনভাবে বলা যায়, বাংলাদেশের প্রত্যেক নাগরিকের সম্পত্তি অর্জন, ধারণ, হস্তান্তর এবং যে কোনোভাবে এর বিলি-ব্যবস্থা তথা শ্রেণি পরিবর্তন সংবিধান প্রদত্ত মৌলিক অধিকার। কোনোভাবেই ওই অধিকার পরিবর্তনে বাধা দেয়া যাবে না।
আদালত বলেন, নাগরিকের সম্পত্তি অর্জন, ধারণ, হস্তান্তর এবং যে কোনোভাবে এর বিলি-ব্যবস্থা তথা শ্রেণি পরিবর্তনের অধিকারে পরিবর্তন, বিধিনিষেধ এবং যে কোনো ধরনের নিয়ন্ত্রণ শুধু সংসদ থেকে প্রণীত আইনের মাধ্যমে করতে হবে। এ কারণে রায়ে আদালত ‘কৃষিজমি সুরক্ষা ও ব্যবহার আইন-২০১৬’ দ্রুত আইন আকারে পাসে জাতীয় সংসদকে পরামর্শ দিয়েছেন। পাশাপাশি জাপান ও ফিনল্যান্ডের প্রণীত আইন যতটুকু সম্ভব অনুসরণ ও সমন্বয় করে আমাদের দেশের জন্য ভূমি মন্ত্রণালয়ের অধীন একটি ‘দ্বীপ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ’ নামে পৃথক কর্তৃপক্ষ গঠনে দ্বীপ উন্নয়ন আইন দ্রুত প্রণয়নের জন্য জাতীয় সংসদকে পরামর্শ দেয়া হয় রায়ে।
২০১৯ সালের ৩১ জানুয়ারি নওগাঁর মান্দা উপজেলার কুসুম্বা ইউনিয়ন ভূমি অফিসের উপসহকারী কর্মকর্তা দুলাল হোসেন পুকুর খনন বন্ধ করার জন্য নোটিস দেন মিজানুর রহমানকে। ওই নোটিসের বিরুদ্ধে মিজানুর রহমান পুকুর খননের অনুমতি চেয়ে একই বছরের ১৪ ফেব্রুয়ারি নওগাঁর জেলা প্রশাসক বরাবর দরখাস্ত করেন। তবে জেলা প্রশাসক আবেদনটি নিষ্পত্তি না করায় মিজানুর রহমান হাইকোর্টে রিট করেন। রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে আদালত ২০১৯ সালের ৩০ এপ্রিল পুকুর খনন বন্ধে নোটিস কেন অবৈধ ও বেআইনি হবে না, এই মর্মে রুল জারি করেন। রুলের চূড়ান্ত শুনানি শেষে হাইকোর্ট ২০২২ সালের ২ জুন পুকুর খনন বন্ধে নোটিস বেআইনি ও অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়