কাগজ প্রতিবেদক : খুচরা বাজারে যে এলইডি বাতির দাম মাত্র ৫ হাজার, ঠিকাদারের সঙ্গে যোগসাজসে সেটিই প্রায় ২৮ টাকায় কিনেছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। গতকাল বৃহস্পতিবার রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের চট্টগ্রাম অফিসে অভিযান চালিয়ে এ অনিয়ম খুঁজে পায় দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। চট্টগ্রাম সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১ এর সহকারী পরিচালক এনামুল হকের নেতৃত্বে দুদকের তিন সদস্যের একটি টিম এ অভিযান চালায়।
জানা গেছে, দুদক টিম প্রথমে ট্র্যাক সাপ্লাই কর্মকর্তা কার্যালয় থেকে লিফটিং জ্যাক, ড্রিলিং মেশিন এবং কাটিং জ্যাক কেনা সংক্রান্ত নথি সংগ্রহ করে। এতে দেখা যায়, এই পণ্যগুলোর প্রাক্কলিত দর ১ কোটি ৮১ লাখ টাকা হলেও কেনা হয়েছে ১ কোটি ৯৭ লাখ টাকার বেশি দামে, যা পিপিপি এবং পিপিআরের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। মূলত ঠিকাদারের সঙ্গে যোগসাজশে একই ঠিকানায় নিবন্ধিত দুটি প্রতিষ্ঠানকে দরপত্রে অংশ নেয়ার সুযোগ করে তাদের মধ্যে একটিকে কার্যাদেশ দেয়া হয়, যা প্রাথমিকভাবে সত্য প্রমাণিত হয়। এছাড়া বাজারমূল্য নির্ধারণ কমিটি কীসের ওপর ভিত্তি করে এসব পণ্যের বাজারমূল্য নির্ধারণ করেছে, সে সংক্রান্ত কোনো নথি পায়নি দুদক।
এরপর দুদক টিম বৈদ্যুতিক প্রকোশলীর কার্যালয় থেকে ৯০টি এলইডি লাইট এবং এলইডি ল্যাম্প কেনার তথ্য সংগ্রহ করে। তারপর সেগুলোর ক্রয় সংক্রান্ত নথি সংগ্রহ করতে সিওএসের দপ্তরে যায়। সেখান থেকে সংগৃহীত নথি পর্যালোচনা করে দুদক টিম দেখে, প্রতিটি এলইডি লাইট ২৭ হাজার ৭০০ টাকায় কেনা হয়েছে, যা খুচরা বাজারে ৫ হাজার টাকায় বিক্রি হয়। একই টিম পরে পাহাড়তলীতে অবস্থিত রেলের প্রধান সরঞ্জাম নিয়ন্ত্রক ও জেলা সরঞ্জাম নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ে অভিযান চালায়। সেখানে অবস্থিত অভিযোগ সংশ্লিষ্ট আরঅ্যান্ডআইয়ের মেরামতকৃত কক্ষও পরিদর্শন করেন দুদক কর্মকর্তারা। সেসঙ্গে ওয়াকিটকি ক্রয়সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ করে পর্যালোচনা করা হয়। এতে প্রাথমিকভাবে অনিয়মের প্রমাণ পাওয়া যায়।
এ ব্যাপারে দুদকের সহকারী পরিচালক এনামুল হক বলেন, রেলের বিভিন্ন সরঞ্জাম কেনাকাটায় অনিয়ম- দুর্নীতির প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেছে। দুদক ভালো করে নথি পর্যালোচনা করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেবে বলেও জানান তিনি।