এমসিসিএইচএসএলে দুর্নীতির অভিযোগ

আগের সংবাদ

শ্রমবাজারে দুষ্ট চক্রের থাবা

পরের সংবাদ

কুড়িগ্রামে রাজা : ভুটানি বিনিয়োগ শিগগিরই শুরু হবে

প্রকাশিত: মার্চ ২৯, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: মার্চ ২৯, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

তৈয়বুর রহমান, কুড়িগ্রাম থেকে : কুড়িগ্রামে ‘বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল’ পরিদর্শন করেছেন ভুটানের রাজা জিগমে খেসার নামগিয়েল ওয়াংচুক। ভুটানের জন্য বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল দেখে রাজা খুশি হয়েছেন বলে জানা গেছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে কুড়িগ্রামের সদর উপজেলার ভোগডাঙ্গা ইউনিয়নের মাধবরাম গ্রামে ভুটানিজ বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের জন্য নির্ধারিত স্থান পরিদর্শন করেন তিনি। পরিদর্শন শেষে ভুটানের রাজা সড়ক পথে সীমান্ত লাগোয়া ভুরুঙ্গামারী উপজেলার সোনাহাট স্থলবন্দর দিয়ে ভারত হয়ে ভুটানের উদ্দেশে বাংলাদেশ ত্যাগ করেন।
গতকাল সকালে ভুটানের রাজা ১৪ সদস্যের সফর সঙ্গী টিম নিয়ে সৈয়দপুর বিমান বন্দরে অবতরণ করেন। এরপর সড়ক পথে তিনি দুপুর পৌনে ১২টায় কুড়িগ্রাম সার্কিট হাউসে পৌঁছান। এ সময় জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা তাকে অভ্যর্থনা জানান। সেখানে মধ্যাহ্ন ভোজ শেষে দুপুর দেড়টায় ভুটানের রাজা সফরসঙ্গীদের নিয়ে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের জন্য নির্ধারিত স্থান কুড়িগ্রাম ধরলা সেতুর পূর্ব প্রান্তে মাধব রাম গ্রাম পরিদর্শন করেন। পরে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের (বেজা) নির্বাহী চেয়ারম্যান শেখ ইউসুফ হারুন বলেন, ‘ভুটানের রাজা কুড়িগ্রামের অর্থনৈতিক অঞ্চল দেখে খুশি হয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, যত দ্রুত সম্ভব এ বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে ভুটানের বিনিয়োগ শুরু হবে। এ থেকে আমরা আশাবাদী, খুব দ্রুতই কুড়িগ্রামের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে ভুটান সরকারের সহায়তায় অর্থনৈতিক অঞ্চলটি চালু হবে।’
এ সময় তথ্য প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ এ আরাফাত, নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, সংসদ সদস্য ডা. হামিদুল হক খন্দকার, সংসদ সদস্য বিপ্লব হাসান পলাশ, বেজার নির্বাহী চেয়ারম্যান শেখ ইউসুফ হারুন, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল আরীফ ও পুলিশ সুপার আল আসাদ মো. মাহফুজুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে, ভুটানের রাজার বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল পরিদর্শনকে ঘিরে জেলার ব্যবসায়ী ও বিশিষ্টজনদের মধ্যে বেশ ইতিবাচক সাড়া পাওয়া গেছে। স্থানীয় জনগণ আনন্দ উল্লাস প্রকাশ করে।
জেলা প্রশাসন ভুটানের রাজার আগমনকে কেন্দ্র করে ব্যাপক নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা নেয়। ধরলা নদীর পূর্ব পাড়ে ২১৯ একর জমির উপর গড়ে তোলা হবে জিটুজি ভিত্তিতে এ বিশেষায়িত অর্থনৈতিক অঞ্চল।
২০১৫ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজ মাঠে এক জনসভায় এ জেলায় একটি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দেন। এরই অংশ হিসেবে কুড়িগ্রামে এই অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলা হচ্ছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে। প্রসঙ্গত, ভুটানের রাজার ৪ দিনের ঢাকা সফরের দ্বিতীয় দিন ২৫ মার্চ ঢাকায় কুড়িগ্রামে ভুটানিজ বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে বাংলাদেশ ও ভুটান সরকারের মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক সই হয়।
এদিকে, সোনাহাট স্থলবন্দরে ভুটানের রাজাকে বিদায় জানান।
নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। সেখানে রাজাকে রাষ্ট্রীয় গার্ড অব অনার দেয় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। এ সময় নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব বিধায়ক রায় চৌধুরী, স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের সদস্য মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর কবীর, পরিচালক ডি এম আতিকুর রহমান, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাউথ এশিয়ার মহাপরিচালক রকিবুল হক, চিফ অব প্রটোকল নাঈম উদ্দিন আহমেদ এবং নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রীর একান্ত সচিব মোহা. আমিনুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।
দুপুরে ভুটানের রাজা সোনাহাট স্থলবন্দরে এসে পৌঁছালে বিজিবির রংপুর রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল খোন্দকার শফিকুজ্জামান তাকে ফুলেল শুভেচ্ছা ও উষ্ণ অভ্যর্থনা জানান। এ সময় বিজিবির কুড়িগ্রাম ব্যাটালিয়নের (২২ বিজিবি) একটি সুসজ্জিত চৌকসদল রাজাকে রাষ্ট্রীয় গার্ড অব অনার প্রদান করে। পরে ভুটানের রাজা ভারতে প্রবেশকালে বিজিবি আবারো তাকে রাষ্ট্রীয় গার্ড অব অনার দেয়। কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে বিজিবির রংপুর রিজিয়ন কমান্ডার ভুটানের রাজাকে বিদায় সংবর্ধনা দেন। এ সময় বিজিবির রংপুর সেক্টর কমান্ডার কর্নেল মামুনুর রশীদ, কুড়িগ্রাম ব্যাটালিয়ন (২২ বিজিবি) অধিনায়ক লে. কর্নেল মুহাম্মদ মাসুদুর রহমানসহ বিজিবির অন্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়