জলবায়ু অর্থায়ন ছাড় করুন, অস্ত্র প্রতিযোগিতা আর নয় : নিরাপত্তা সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী > বিশ্ব নেতাদের প্রতি ৬ প্রস্তাব শেখ হাসিনার

আগের সংবাদ

স্বাস্থ্য শিক্ষার মান নিয়ে উদ্বেগ : কমছে বিদেশি শিক্ষার্থী > শিক্ষক সংকটও চরমে > বিদেশে চাকরি ও প্রশিক্ষণে বাধা

পরের সংবাদ

জেলেনস্কির সঙ্গে বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী : যুদ্ধ থামানোর উপায় খুঁজুন

প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ১৮, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: ফেব্রুয়ারি ১৮, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ ডেস্ক : রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের উপায় খুঁজে বের করার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, ‘যুদ্ধের মাধ্যমে অন্যরা উপকৃত হতে পারে। কিন্তু যুদ্ধ লিপ্ত দেশগুলোর জন্য তা কল্যাণ বয়ে আনতে পারে না এবং তাদের জনগণকে যুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্ত হতে হয়। গতকাল শনিবার মিউনিখ সিকিউরিটি কনফারেন্স (এমএসসি) ২০২৪-এর সাইডলাইনে হোটেল বেয়েরিশার হফে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে বৈঠকে তিনি এসব কথা বলেন।
জার্মানিতে মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলনের সাইডলাইনে গতকাল ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি, নেদারল্যান্ডসের প্রধানমন্ত্রী মার্ক রুতে এবং ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে বৈঠক করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। স্থানীয় সময় গতকাল শনিবার সকালে ওই বৈঠক হয়। খবর বাসস।
এদিকে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর এই প্রথম মুখোমুখি বৈঠকে বসলেন দুই শীর্ষ নেতা। পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মাসুদ বিন মোমেন এবং জার্মানিতে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন।
বৈঠকের পর পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সব সময় বলেন আমরা সব ধরনের যুদ্ধের বিরুদ্ধে। জেলেনস্কির সঙ্গে আলোচনার সময় কীভাবে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধ করা যায়, সে বিষয়েও তিনি বারবার আলোচনা করেছেন। তিনি বলেন, বৈঠকে তারা গাজায় নিরপরাধ নারী-পুরুষের ওপর হামলা কীভাবে বন্ধ করা যায়, তা নিয়েও আলোচনা করেছেন।
প্রধানমন্ত্রী সবাইকে স্মরণ করিয়ে দেন যে যুদ্ধ কারো জন্য মঙ্গল বয়ে আনতে পারে না।
শেখ হাসিনা বলেন, ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় বাংলাদেশের মানুষের দুর্ভোগ এবং তিনি নিজেও দুর্ভোগের শিকার হয়েছি। তিনি যুদ্ধের সময় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বন্দিদশায় তার অমানবিক কষ্ট এবং তার একমাত্র পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়ের জন্মের কথা স্মরণ করেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী ও জেলেনস্কির মধ্যে আলোচনায় বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতি ‘সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারো সঙ্গে শত্রæতা নয়’

স্পষ্টভাবে উঠে আসে।
এক প্রশ্নের জবাবে হাছান বলেন, স্বাধীনতার সময় বাংলাদেশ ও রাশিয়ার মধ্যে গড়ে ওঠা বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ক্ষতিগ্রস্ত হবে না। রাশিয়ার সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক খুবই চমৎকার। মুক্তিযুদ্ধের সময় রাশিয়া আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছে এবং যুদ্ধের পর বাংলাদেশের পুনর্গঠনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে।
তিনি বলেন, তারা শুধু যুদ্ধ বন্ধের জন্য আলোচনা করেছেন।
মার্ক রুতে এবং এস জয়শঙ্করের সঙ্গে বৈঠক : জার্মানিতে মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলনের ফাঁকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন নেদারল্যান্ডসের প্রধানমন্ত্রী মার্ক রুতে এবং ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। গতকাল শনিবার সকালে হোটেল বায়েরিশার হফের সম্মেলন কক্ষে পৃথক পৃথক বৈঠকে তারা বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন।
নেদারল্যান্ডসের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে নিজেদের পারস্পরিক আর বৈশ্বিক আগ্রহের বিষয়গুলো নিয়ে কথা বলেন বাংলাদেশ সরকারপ্রধান। মার্ক রুতের সঙ্গে বৈঠকে শেখ হাসিনার সঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ, পররাষ্ট্রবিষয়ক সিনিয়র সচিব মাসুদ বিন মোমেন উপস্থিতি ছিলেন।
কনফারেন্স ভেন্যু হোটেল বেইরিশার হফ- এ অনুষ্ঠিত বৈঠকে উভয় নেতা বিদ্যমান দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করেন। তারা পারস্পরিক ও বৈশ্বিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন।
একই কক্ষে শেখ হাসিনার সঙ্গে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করও সাক্ষাৎ করেন। বৈঠকে তারা পারস্পরিক ও বৈশ্বিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন। পরে একই স্থানে যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র, কমনওয়েলথ ও উন্নয়নবিষয়ক সেক্রেটারি লর্ড ক্যামেরন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। এ সময় পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মাসুদ বিন মোমেন উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া আগের দিন শুক্রবার কাতারের প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবদুল রহমান আল-থানির সঙ্গে বৈঠক করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রসঙ্গত, দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে গঠিত নতুন সরকারের প্রধান হিসেবে প্রথম বিদেশ সফরে ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে জার্মানিতে রয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বৈশ্বিক নিরাপত্তা সম্মেলনে মিউনিখ সিকিউরিটি কনফারেন্স-২০২৪ এ বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন তিনি। মিউনিখের হোটেল বায়েরিশার হফে তিন দিনের এই সম্মেলন চলবে আজ (১৮ ফেব্রুয়ারি) পর্যন্ত। এতে প্রায় ৬০টি দেশের রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধান, আন্তর্জাতিক সংস্থা, গণমাধ্যম, সরকারি ও বেসরকারি খাতের শীর্ষস্থানীয় প্রায় পাঁচশ প্রতিনিধি অংশ নিচ্ছেন। সম্মেলনের সাইডলাইনে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক এবং অনানুষ্ঠানিক মতবিনিময় করছেন তিনি। আগামীকাল সোমবার প্রধানমন্ত্রীর ঢাকায় পৌঁছার কথা রয়েছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়