যাত্রাবাড়ীতে যুবকের লাশ উদ্ধার

আগের সংবাদ

ব্যাংক খাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রেকর্ড তারল্য সহায়তা

পরের সংবাদ

লাল-সবুজ পতাকা হাতে সমাবেশ করবে আ.লীগ

প্রকাশিত: জানুয়ারি ২৮, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ২৮, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : বিএনপি নামক অপশক্তিকে আর বাড়তে না দেয়ার ঘোষণা দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সব শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। একই সঙ্গে নিজ দলের নেতাকর্মীদের প্রস্তুত থাকারও নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। আগামী ৩০ জানুয়ারি বিএনপির কালো পতাকা মিছিল মোকাবিলা করতে ওইদিন সারাদেশে লাল-সবুজ পতাকা হাতে নিয়ে শান্তি ও গণতন্ত্র সমাবেশ করারও ঘোষণা দেন কাদের। সেই সঙ্গে দেশব্যাপী সতর্ক পাহারা থাকারও নির্দেশ দেন ক্ষমতাসীন দলের এই নেতা। গতকাল শনিবার বিকালে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের শান্তি ও গণতন্ত্র সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এমন ঘোষণা দেন তিনি। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ এ সমাবেশের আয়োজন করে। এতে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফী।
৩০ জানুয়ারির কর্মসূচির ঘোষণা দিয়ে নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, তৈরি হয়ে যান। ৩০ তারিখে বিএনপি আবার কালো পতাকা মিছিলের ডাক দিয়েছে। ওইদিন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা সারাদেশে মহানগর, জেলা ও সব উপজেলায় সবাই লাল-সবুজ পতাকা হাতে নিয়ে শান্তি, গণতন্ত্র ও উন্নয়ন সমাবেশ করবেন। এছাড়া সারাদেশে ওইদিন পাহারায় থাকতে হবে। কারণ বিএনপি নামক এই অপশক্তিকে আমরা আর বাড়তে দিতে পারি না। এই অপশক্তিকে রুখতে হলে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সব শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।
সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক, অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকদের মধ্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ ও মাহবুবুল আলম হানিফ, সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক, সংস্কৃতিবিষয়ক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির, কেন্দ্রীয় সদস্য অ্যাডভোকেট সানজিদা খানম, সাবেক ছাত্রনেতা ইসহাক আলী খান পান্না, অ্যাডভোকেট সাইফুজ্জামান শিখর, মাহফুজুল হায়দার চৌধুরী রোটন, এইচ এম বদিউজ্জামান সোহাগ এমপি, মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সহসভাপতি নুরুল আমিন রুহুল, কৃষক লীগের সভাপতি সমীর চন্দ, মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মেহের আফরোজ চুমকি, যুব মহিলা লীগের সভাপতি আলেয়া সারোয়ার ডেইজি ও সাধারণ সম্পাদক শারমিন সুলতানা লিলি।
ওবায়দুল কাদের বলেন, গয়েশ্বর আজ পল্টনে হাজির হয়েছেন। কোথায় ছিলেন এতদিন? বলেছিলেন আমরা না কী অলিগলি খুঁজে পাব না, আমরা পালিয়ে যাব। তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, কে পালিয়েছে? ডিবি অফিসে কোরাল মাছ খেয়ে পালিয়েছিল কারা? গয়েশ্বর বাবু আপনিই অলিগলি খুঁজে পাননি। তিনি বলেন, দেখতে দেখতে ১৫ বছর। সামনে আরো ৫ বছর। মানুষ বাঁচে কয় বছর। কবে আসবে আন্দোলন। এই বছর না কী ওই বছর? রোজার পর না কুরবানির পর?
কাদের বলেন, বিএনপি মাঠে নেমেছে। কালো পতাকা মিছিল করছে। কালো পতাকা মানে শোক মিছিল। ৩০ জানুয়ারি আবার কালো পতাকা মিছিল ডেকেছে। সেটাও ভুয়া। তাদের লোকজন নেই, সঙ্গে জনগণ নেই?। তাদের নেতাকর্মীরা হতাশ। লন্ডনে পলাতক তারেক জিয়ার প্রতি তাদের আর কোনো আস্থা নেই। তাদের নেতাকর্মীরা এখন আর তারেকের ফরমায়েসে কান দেয় না। বাংলাদেশের জনগণ তো দূরের কথা। কাজেই যাদের সঙ্গে জনগণ নেই, অথচ আন্দোলন করে- তারা ভুয়া। তিনি বলেন, খেলা একটা হয়ে গেছে। নির্বাচনের খেলা শেষ ৫ বছরের জন্য। এখন খেলা হবে রাজনীতির। এখন খেলা হবে দুর্নীতির বিরুদ্ধে, সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে, জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে, হরতাল আর আগুন সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে।
আওয়ামী লীগকে কোনো বিদেশি শক্তি ক্ষমতায় বসায়নি উল্লেখ করে কাদের বলেন, ৪১ দশমিক ৮ ভাগ মানুষ ভোট দিয়েছে। শেখ হাসিনা সরকার গঠন করেছে। এই সরকার জনগণের দ্বারা নির্বাচিত সরকার।?? ২৮টি রাজনৈতিক দল নির্বাচনে অংশ নিয়েছে। কোনো বিদেশি শক্তি আমাদের সরকারকে ক্ষমতায় বসায়নি। বাংলাদেশের জনগণের পিপুল ভোটে শেখ হাসিনা নির্বাচিত হয়েছেন।
শিগগিরই জিনিসপত্রের দাম কমে যাবে জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ক্ষমতায় বসেই প্রধানমন্ত্রী পুরো টিম নিয়ে নেমে পড়েছেন জনগণের সংকট লাঘবে। তিনি পুরো মন্ত্রিসভাকে নিয়ে কর্মপরিকল্পনা নির্ধারণ করেছেন। বাজার নিয়ন্ত্রণে হাত দিয়েছেন। তার মন্ত্রিসভা বসে নেই। সবাই কাজে নেমে পড়েছে। ইনশাল্লাহ আমরা অচিরেই জিনিসপত্রের দাম নিয়ন্ত্রণে আনতে পারব। কারণ সামনে রমজান। মানুষের কষ্ট আমরা জানি। আমরা জনগণের সরকার। শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুকন্যা। তিনি সব সময় মানুষের কথা ভাবেন।
অতীতের ভুল থেকে শিক্ষা নিতে নেতাকর্মীদের উদ্দেশে কাদের আরো বলেন, বিএনপি হতাশ। আমরা ক্ষমতাসীন দল। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন অতীতের ভুল থেকে শিক্ষা নিতে। তার কথা কাজে পরিণত করতে হবে। অতীতে যারা ভুল করেছেন, সেই ভুল সংশোধন করতে হবে। ভুল থেকে শিক্ষা নিতে হবে। মানুষের কাছে যেতে হবে। মানুষকে ভালোবাসতে হবে।
ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, বিএনপির কর্মীদের উচিত একের পর এক ভুল সিদ্ধান্ত আর ব্যর্থতার কারণে তাদের নেতাদের কালো পতাকা দেখিয়ে বিদায় দেয়া। তিনি বলেন, বিএনপি চেয়েছিল স্যাংশন আনতে, উল্টো বিদেশিরা এখন ফুল দিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানাচ্ছেন।
অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম বলেন, আগামী ৫ বছর অপেক্ষা করুন। ততদিনে আপনাদের অস্তিত্ব থাকবে কী না, সেটা চিন্তা করেন।
বিএনপিকে জনগণ কালো পতাকা আর বিদেশিরা লাল পতাকা দেখিয়েছে মন্তব্য করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন,? নির্বাচনের পর বিদেশিরা শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানাচ্ছেন। তারা শেখ হাসিনার সরকারের সঙ্গে কাজ করতে চান।
মাহবুবুল আলম হানিফ বলেন, নির্বাচন বয়কট করে কেউ লাভবান হতে পারে না। সেটা ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে প্রমাণ হয়েছে। বিএনপিকে চিরদিনের জন্য রাজনীতি থেকে বিতাড়িত করা উচিত। দেশে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার রাজনৈতিক দলকে প্রতিষ্ঠিত করতে হবে।
বি এম মোজাম্মেল হক, অব্যাহত ব্যর্থতার কারণে বিএনপির তৃণমূলের নেতাকর্মীদের উচিত তারেক রহমান আর তাদের নেতাদের কালো পতাকা দেখানো।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়