ধরা পরে কানের দুল গিলে ফেলল ছিনতাইকারী

আগের সংবাদ

ইসিকে কঠোর হওয়ার তাগিদ

পরের সংবাদ

আচরণবিধি লঙ্ঘনের হিড়িক : বেপরোয়া প্রার্থীরা > সংঘর্ষে নিহত ২, অফিস-গাড়ি ভাঙচুর > শো’কজেই সীমাবদ্ধ ইসি

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ২৫, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: ডিসেম্বর ২৫, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

এন রায় রাজা : দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে একর পর এক আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠছে প্রার্থীদের বিরুদ্ধে। ভোটের দিন যতই এগিয়ে আসছে- বিধি ভঙ্গের হারও তত বাড়ছে। অধিকাংশ আসনেই নির্বাচনী সহিংসতা, সংঘর্ষ, ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া, হামলা, প্রতিপক্ষ প্রার্থীর নির্বাচনী কার্যালয় ও প্রচার গাড়ি ভাঙচুর, পোস্টার ছিড়ে ফেলাসহ নানা অনিয়মের ঘটনা ঘটছে। আর এসব ঘটনায় শুধুমাত্র শোকজের নোটিস দিয়েই দায় সারছে নির্বাচন কমিশন। নেয়া হচ্ছে না কার্যকর কোনো পদক্ষেপ। আর ‘সরি আর হবে না’- এমন লিখিত জবাব দিয়েই সহজেই দায়মুক্তি মেলায় মাঠে ফিরে আবারো বেপরোয়া হয়ে উঠছেন প্রার্থী ও তার সমর্থকরা।
প্রতীক বরাদ্দের পর গত ১৮ ডিসেম্বর দেশব্যাপী নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা শুরু হয়েছে। প্রচারণার শুরুতেই উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে বিভিন্ন নির্বাচনী এলাকা। ভোটের দিন যত ঘনিয়ে আসার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে প্রার্থীদের বেপরোয় আচরণ। তালিকায় মন্ত্রিসভার সদস্য থেকে শুরু করে একাধিকবারের সংসদ সদস্য এবং নতুন প্রার্থীরাও আছেন। তবে এবার এখন পর্যন্ত কোনো প্রার্থীর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া কিংবা জরিমানা করার তথ্য পাওয়া যায়নি। সবশেষ গতকাল দুই প্রার্থী বিরুদ্ধে মামলা করার কথা বলেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
ইতোমধ্যে মাদারীপুরের কালকিনিতে স্বতন্ত্র প্রার্থীর কর্মীকে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠছে নৌকার সমর্থকদের বিরুদ্ধে। গত শুক্রবার রাত ৮টার দিকে ল²ীপুর বাজার থেকে বাড়ি ফিরছিলেন এসকান্দার। পথের মধ্যেই হামলাকারীরা তাকে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে আহত করে। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। অবস্থার অবনতি হওয়ায় বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হলে সেখানেই তার মৃত্যু হয়। মাদারীপুর-৩ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী তাহমিনা বেগমের কর্মী ছিলেন তিনি। এর আগে নির্বাচনী সহিংসতায় ময়মনসিংহের আওয়ামী লীগকর্মী রফিকুল ইসলাম (৫২) নিহত হন। ময়মনসিংহ-৪ সদর আসনে জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি স্বতন্ত্র প্রার্থী আমিনুল হক শামীমের অস্থায়ী নির্বাচনী ক্যাম্প পরিচালনা করাকে কেন্দ্র করে দুইপক্ষের মারামারিতে প্রতিপক্ষের হামলায় মৃত্যু হয় তার।
এছাড়া কুমিল্লায় একাত্তর টেলিভিশনের নিজস্ব প্রতিবেদক ও ক্যামেরাপারসনের ওপর হামলার ঘটনায় কুমিল্লা-৬ আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ও বর্তমান সংসদ সদস্য আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহারকে শোকজ করা হয়েছে। এ পর্যন্ত এই প্রার্থীকে তিনবার শোকজ করেছে নির্বাচন অনুসন্ধান কমিটি। যদিও এখনো পর্যন্ত কোনো বড় ধরনের শাস্তি হয়নি কারো। গত মঙ্গলবার রাতে সদর উপজেলার চরসিরতা ইউনিয়নের চর ভবানীপুর কোনাপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এদিকে চুয়াডাঙ্গা-১ আসনে নির্বাচনী প্রচারণার সময় স্বতন্ত্র প্রার্থী দিলীপ কুমার আগরওয়ালার মাথায়

পিস্তল ঠেকিয়ে অপহরণের চেষ্টার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
ঝিনাইদহ-১ আসনের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আব্দুল হাইয়ের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের নির্দেশ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। গতকাল ইসির উপসচিব মো. আতিয়ার রহমান নির্দেশনাটি শৈলকূপার উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তাকে পাঠিয়েছেন। এতে উল্লেখ করা হয়েছে, শৈলকূপা থানাধীন ১৪ নম্বর দুধসর ইউনিয়নের ভাটই বাজারে সাপ্তাহিক হাটবারের দিনে বিকাল আনুমানিক ৪টার দিকে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আব্দুল হাইয়ের অনুসারীরা দেশীয় অস্ত্র ও লাঠিসোটা নিয়ে মহাসড়কে মহড়া দেয়ায় ও জনমনে ভীতি সঞ্চার করায় নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটির প্রতিবেদনের আলোকে মো. আব্দুল হাই ‘সংসদ নির্বাচনে রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণ বিধিমালা, ২০০৮’ এর বিধি ৮(ক), ১১(ক) ও বিধি ১২ এর লঙ্ঘন করেছেন। তার বিরুদ্ধে মামলার নির্দেশ দিয়েছে ইসি।
নারায়ণগঞ্জে জাতীয় পার্টির প্রার্থীর প্রচার কাজে ব্যবহৃত অটোরিকশা ও মাইক ভাঙচুর এবং চালককে মারধর করা হয়েছে। মুন্সীগঞ্জে পাল্টাপাল্টি হামলার ঘটনা ঘটেছে নৌকা ও স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে। নওগাঁয় এক স্বতন্ত্র প্রার্থীর নির্বাচনী অফিস ও বাড়িতে হামলা-ভাঙচুরের অভিযোগ পাওয়া গেছে নৌকার সমর্থকদের বিরুদ্ধে। এতে আহত হয়েছেন বেশ কয়েকজন।
গতকাল ফরিদপুর-৩ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী এ কে আজাদের কর্মীদের ওপর হামলা করেছে আওয়ামী লীগের সমর্থকরা। এতে দুজন গুরুতর আহত হন। আচরণবিধি লঙ্ঘনের দায়ে ফরিদপুর-৪ (ভাঙ্গা-সদরপুর-চরভদ্রাসন) আসনের স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য মজিবুর রহমান চৌধুরী ওরফে নিক্সন চৌধুরীকে শোকজ করা হয়েছে।
এদিকে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করে স্থানীয় বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের নিয়ে মিটিং করে নৌকা মার্কায় ভোট চাওয়ায় আচরণবিধি লঙ্ঘনের দায়ে পাবনা-১ আসনে নৌকা প্রার্থী ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক টুকুকে শোকজ করেছে নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটি। নির্বাচনী আচরণবিধি ভাঙায় ঢাকা-১৪ আসনের আওয়ামী লীগ প্রার্থী মো. মাইনুল হোসেন খানকে (নিখিল) শোকজ করে সংশ্লিষ্ট নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটি। নওগাঁর মান্দা আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী সুলতান মামুদ গামার বাড়ি ও নির্বাচনী অফিসে হামলা-ভাঙচুরের অভিযোগ উঠেছে নৌকা প্রার্থীর সমর্থকদের বিরুদ্ধে। হামলায় সুলতান মামুদ গামার অন্তত তিন সমর্থক গুরুতর আহত হয়েছেন।
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ আসনের জাতীয় পার্টির প্রার্থী বর্তমান সংসদ সদস্য লিয়াকত হোসেন খোকার পক্ষে প্রচারণার সময় হামলার অভিযোগ করেছেন তার নির্বাচন সমন্বয়কারী হাফেজ মাহমুদুল আনোয়ার। প্রচার কাজে ব্যবহৃত একটি অটোরিকশা ও মাইক ভাঙচুর এবং চালককে আওয়ামী লীগের লোকজন মারধর করে বলে তিনি অভিযোগ করেন।
মুন্সীগঞ্জের নৌকা সমর্থন করায় চাচাতো ভাই ওমর ফারুককে পিটিয়ে গুরুতর আহতের অভিযোগ উঠেছে মুন্সীগঞ্জের স্বতন্ত্র প্রার্থী মোহাম্মদ ফয়সাল বিপ্লবের সমর্থক যুবলীগ নেতা আফজাল হাওলাদারের বিরুদ্ধে। অন্যদিকে স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকের বাড়িতে গুলিবর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। বগুড়া-৪ আসনে বাংলাদেশ কংগ্রেস মনোনীত প্রার্থী আশরাফুল হোসেন ওরফে হিরো আলমের নির্বাচনী প্রচারণায় হামলার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগরে নৌকা প্রার্থীর পোস্টার ছেঁড়ায় স্বতন্ত্র প্রার্থী ফিরোজুর রহমান ওলি ও তার কয়েকজন সমর্থককে জরিমানা করা হয়েছে। পিরোজপুর-১ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এ কে এম এ আউয়ালের বিরুদ্ধে সশস্ত্র ক্যাডার দিয়ে নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর অফিস ভাঙচুর, পুড়িয়ে দেয়া, সমর্থক ও কর্মীদের বাসায় গিয়ে প্রকাশ্যে গুলি করা এবং শহরে সশস্ত্র মহড়ার অভিযোগ তুলেছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ও বর্তমান সংসদ সদস্য শ ম রেজাউল করিম। প্রচারণায় সরকারি গাড়ি ব্যবহারের অভিযোগে শোকজ করা হয়েছে কুষ্টিয়া-৩ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী পারভেজ আনোয়ার তনুকে। একইভাবে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মাহবুব-উল আলম হানিফের সমর্থক সদর উপজেলার হাটশ হরিপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মিলন মণ্ডল ও ছাত্রলীগ নেতা শামীমকে আলাদাভাবে শোকজ নোটিস দেয়া হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে স্বতন্ত্র প্রার্থী পারভেজ আনোয়ার তনুর ঈগল প্রতীকের নির্বাচনী প্রচারণায় নিয়োজিত কর্মীদের বাধা দেয়া ও মারধর করার অভিযোগ রয়েছে। কুষ্টিয়া-৪ আসনে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী সেলিম আলতাফ জর্জকে উসকানিমূলক বক্তব্য ও হুমকি দেয়ার অভিযোগে শোকজ করা হয়েছে।
সংসদ নির্বাচনে আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে টাঙ্গাইল-৭ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী মীর এনায়েত হোসেন মন্টু এবং উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শরীফ মাহমুদকে কারণ দর্শানোর নোটিস দিয়েছে নির্বাচন অনুসন্ধান কমিটি। টাঙ্গাইল-২ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থীর নির্বাচনী অফিস ভাঙচুরের অভিযোগে নৌকার মনোনীত প্রার্থী তানভীর হাসান ছোট মনিরকে ঝাওয়াইল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের অফিসে প্রবেশ করে বঙ্গবন্ধুর ছবি, আসবাবপত্র ভাঙচুর ও কেন্দ্র খরচের টাকা ছিনিয়ে নেয়ার অভিযোগে শোকজ করা হয়েছে। ঝালকাঠি-১ আসনের পাঁচবারের সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর। বিএনপি থেকে বহিষ্কৃত এই রাজনীতিক নৌকার প্রার্থী হয়ে প্রথমবার এলাকায় গিয়ে নেতাকর্মীদের সঙ্গে বৈঠকে প্রকাশ্যে লাইসেন্স করা বন্দুক প্রদর্শন করায় তাকেও শোকজ করেছে ইসি। নোয়াখালী-২ আসনের আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মোরশেদ আলমকে হত্যার হুমকি দেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম মানিক।
এছাড়াও যাদের শোকজ করা হয়েছে তাদের মধ্যে আছেন- বস্ত্রমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা প্রতিমন্ত্রী এনামুর রহমান, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল, পটুয়াখালী-৪ আসনে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য মহিবুর রহমান, নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য শামীম ওসমান, মাগুরা-১ আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী সাকিব আল হাসান, সুনামগঞ্জ-৪ আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মোহাম্মদ সাদিক, নাটোর-২ আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য শফিকুল ইসলাম শিমুল, রাজশাহী-১ আসনের সাবেক প্রতিমন্ত্রী ওমর ফারুকসহ অনেক হেভিওয়েট প্রার্থী।
যদিও নির্বাচনী আচরণবিধির ১৮ ধারায় বলা হয়েছে, প্রার্থীরা নির্বাচনী বিধি লঙ্ঘন করলে ছয় মাসের কারাদণ্ড বা ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডের বিধান রয়েছে। ইসি প্রয়োজনে প্রার্থিতাও বাতিল করার ক্ষমতা রাখে। এই ধারায় রাজনৈতিক দলগুলোকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানাও করতে পারে নির্বাচন কমিশন। কিন্তু এখন পর্যন্ত শোকজেই সীমাবদ্ধ রয়েছে ইসি।
যদিও নির্বাচন কমিশন থেকে আচরণবিধি লঙ্ঘন ঠেকাতে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর। যেসব প্রার্থী নির্বাচনের আচরণবিধি অমান্য করবেন, তাদের ক্ষমা করা হবে না- এমন হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি বলেন, কোনো প্রার্থী বারবার আচরণবিধি ভাঙলে আর ক্ষমা করা হবে না। তিনি বলেন, অপেক্ষা করেন, দেখুন। আমাদের অনেকগুলো পরিকল্পনা আছে। এই মুহূর্তে বলছি না। সব পরিকল্পনা তো আর ফাঁস করা যায় না। আগে বলার সুযোগ নেই। আমরা অবস্থা বুঝে ব্যবস্থা নেব। তবে প্রার্থিতা বাতিলের ক্ষেত্রে আমাদের এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।
কুমিল্লা-৬ আসনের সংসদ সদস্য আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহারের নির্দেশে সাংবাদিকদের ওপর হামলার বিষয়ে তিনি বলেন, এখনো ২৪ ঘণ্টা হয়নি। তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর বিশ্লেষণ করে ব্যবস্থা নেয়া হবে। কার প্রার্থিতা বাতিল করবো, কার প্রার্থিতা বাতিল করব না, সেটি অগ্রিম বলা যাবে না। রিপোর্ট দেখার পর দেখতে হবে, সেখানে কি আছে। রিপোর্ট হাতে এলে তখন আমরা বসব, আলোচনা করে দেখব এবং নিয়ম অনুযায়ী তাকেও তো আমাদের শুনতে হবে। তাকে বলতে হবে, আপনার বিরুদ্ধে এই অভিযোগ আছে। এই বিষয়ে আপনার বক্তব্য কী। তারপর যাচাই-বাছাই করে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
মো. আলমগীর আরো বলেন, বিএনপি ভোট বর্জনে শান্তিপূর্ণ আহ্বান জানাচ্ছে। তবুও অগ্নিসংযোগ, রেললাইন কেটে ফেলার মতো ঘটনা ঘটছে। তারা নির্বাচনে এলে এসব হতো না। তিনি বলেন, সবাই এলে আরো ব্যালেন্সড নির্বাচন হতো। বিভিন্ন দলের অংশগ্রহণে নির্বাচনে ভারসাম্য থাকে। তিনি বলেন, নির্বাচনে বাধা দেয়া যাতে না হয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সেদিকে ব্যস্ত আছে। তারা বিভিন্ন জায়গায় বাসে আগুন দিচ্ছে, রেললাইন কেটে দিচ্ছে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ওই দিকে সময় দিচ্ছে। বিএনপি এলে এই সময়টাতো তাদের দিতে হতো না। তারা ভোটের ব্যবস্থাপনায় সময় দিতে পারত।
সাবেক নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, রিটার্নিং কর্মকর্তার উচিত ছিল নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের মাধ্যমে আচরণবিধি লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেয়া। এর পরিবর্তে ইসি নির্বাচনী তদন্ত কমিটির ওপর নির্ভর করছে, যাদের তিন দিনের মধ্যে এই জাতীয় অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত ও সুপারিশ করার দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশনকে এ বিষয়ে কোনো কঠোর পদক্ষেপ নিতে তো দেখিনি এখনো।
এবারের সংসদ নির্বাচনে নিবন্ধিত ২৮টি রাজনৈতিক দল ও স্বতন্ত্র মিলে মোট দুই হাজার ৭১৬ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিল করেন। তাদের মধ্যে এক হাজার ৯৮৫ জনের প্রার্থী নির্বাচনী মাঠে প্রচারে রয়েছেন। আগামী ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়