রুশ রাষ্ট্রদূত : বাংলাদেশ নিয়ে পশ্চিমাদের সঙ্গে প্রতিযোগিতা নয়

আগের সংবাদ

স্বতন্ত্রের চাপে নৌকার প্রার্থীরা

পরের সংবাদ

বিনামূল্যের বই বাজারে : দায়ীদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নিন

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ২১, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: ডিসেম্বর ২১, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

প্রতি বছরের শুরুতে শিশুদের হাতে বিনামূল্যে পাঠ্যবই তুলে দেয় সরকার। এ বছরও তার ব্যতিক্রম হবে না। প্রস্তুতি চলছে। ১ জানুয়ারি সারাদেশে বই উৎসবের মাধ্যমে শিশুদের হাতে বই তুলে দেয়া হবে। ২০২৪ শিক্ষাবর্ষে শিক্ষার্থী সংখ্যা ধরা হয়েছে ৩ কোটি ৮১ লাখ ২৭ হাজার ৬৩০ জন। তাদের জন্য বই ছাপা হচ্ছে মোট ৩০ কোটি ৭০ লাখ ৮৩ হাজার ৫১৭টি। ২০১০ সাল থেকে উৎসবের মাধ্যমে পাঠ্যবই বিতরণ করে আসছে সরকার। শিক্ষার্থীদের হাতে নির্দিষ্ট সময়ে নতুন বই তুলে দেয়া সরকারের একটি চ্যালেঞ্জ, তাতে কোনো সন্দেহ নেই। বলা যায়, নববর্ষে শিক্ষার্থীদের জন্য এটি একটি বাড়তি আনন্দের দিন। কিন্তু দেখা যাচ্ছে বিনামূল্যের এসব বই বিক্রি হচ্ছে কালোবাজারে। রাজধানীর নীলক্ষেত, টিকাটুলিসহ বিভিন্ন বইয়ের দোকানগুলোতে চড়া দামে এসব পাঠ্যপুস্তক বিক্রি হওয়ার খবর পাওয়া যাচ্ছে। রাজধানীর নীলক্ষেত ও বাংলাবাজারে প্রাক-প্রাথমিক থেকে শুরু করে মাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত বিভিন্ন শ্রেণির বই পাওয়া যাচ্ছে। ফুটপাতের লাইব্রেরিসহ প্রসিদ্ধ দোকানেও মিলছে এসব বই। আর দোকানিরা বইগুলো বিক্রি করছে চড়া দামে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, এসব বইয়ের একটি অংশ আসে মুদ্রণ প্রতিষ্ঠান থেকে। তারা কিছু বই অতিরিক্ত ছাপায়। আরেকটি অংশ আসে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে। ওইসব প্রতিষ্ঠানের প্রধান বা শিক্ষকদের সঙ্গে সিন্ডিকেটের যোগসাজশে এসব বই বিক্রি করা হয়। এমনকি জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) কর্তৃপক্ষও দায়সারা বক্তব্য দিয়ে দায়িত্ব শেষ করছে বলে খবরে উঠে এসেছে। বিনামূল্যে পাঠ্যবই বিতরণ সরকারের একটি গণমুখী ও প্রগতিশীল পদক্ষেপ, যা প্রান্তিক ও দরিদ্র পরিবারের শিশুদের শিক্ষা বলয়ে অন্তর্ভুক্তির জন্য অত্যন্ত কার্যকর বলে ইতোমধ্যে প্রমাণিত হয়েছে। সংশ্লিষ্ট বিভাগের অসৎ কর্মচারীদের জন্য সরকারের এ পদক্ষেপ ব্যাহত হচ্ছে। অতীতে আমরা দেখেছি, বই বিপণন নিয়ে নানা ঘটনা। বিনামূল্যে বিতরণের বই কালোবাজারে বিক্রি, বইয়ের সঙ্গে নোটবই কিনতে অভিভাবকদের বাধ্য করার মতো অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা ঘটেছে। মাধ্যমিক স্তরের বিভিন্ন শ্রেণির বই বছরের পর বছর সময় মতো শিক্ষার্থীদের হাতে পৌঁছাতে ব্যর্থ হয়েছেন প্রকাশকরা। অন্যদিকে পাঠ্যপুস্তকের মান নিয়েও সংশয় ছিল। অস্পষ্ট ছাপা, নিম্নমানের কাগজ ব্যবহার করা হতো এসব পাঠ্যপুস্তকে। কিন্তু বর্তমানে যে ঝকঝকে ছাপা রঙিন বইগুলো শিক্ষার্থীর হাতে দেয়া হচ্ছে, তাতে শিক্ষার্থীদের বই পাঠের আনন্দ বহুগুণ বেড়ে যাবে। সদিচ্ছা থাকলে এসব অন্তরায় দূর করা যায়, সেটা প্রমাণ করেছে সরকার। সুশিক্ষিত জাতি গড়ে তোলার লক্ষ্যে বিনামূল্যে দশম শ্রেণি পর্যন্ত পাঠ্যবই বিতরণ ও নারীদের অবৈতনিক শিক্ষার যে পদক্ষেপ সরকার নিয়েছে তা বিশ্ব সমাজেরও প্রশংসা অর্জন করেছে। তবে অভিযোগ রয়েছে, সরকারি বিনামূল্যের বই এখনো বাজারে পাওয়া যায়। ফলে এটা মনে করার যথেষ্ট কারণ রয়েছে, দেশে পাঠ্যপুস্তক প্রকাশ ও বিতরণকে ঘিরে যে কায়েমি চক্র গড়ে উঠেছিল তারা এখনো সক্রিয়। এ ক্ষেত্রে সরকারের অনমনীয় মনোভাবই প্রত্যাশিত। অসাধু চক্রটি দমন করতে সরকারকে মূল ভূমিকায় নামতে হবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়