পররাষ্ট্রমন্ত্রী : সোমবার ২৮৫ বিজিপি সদস্যকে ফিরিয়ে নেবে মিয়ানমার

আগের সংবাদ

সড়কে চাই জীবনের নিরাপত্তা

প্রকাশিত: এপ্রিল ২১, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: এপ্রিল ২১, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুর মিছিলের শেষ কোথায় তা আমাদের জানা নেই। ট্রাফিক শৃঙ্খলার অভাবে ঘটছে একের পর এক সড়ক দুর্ঘটনা। সব সম্ভবের এই দেশে মহাসড়ক বা হাইওয়েগুলোতেও চলে নসিমন, করিমন ও অটোরিকশার মতো যানবাহন।
সড়ক দুর্ঘটনার পেছনে যেসব কারণ দায়ী, তার মধ্যে অন্যতম হলো আইন অমান্যের প্রবণতা। যানবাহন চালক, পথচারী সবার মধ্যে এ প্রবণতা ক্রিয়াশীল।
সড়ক দুর্ঘটনার রাশ টানতে হলে যেমন ইচ্ছা তেমন চলার প্রবণতায় বাঁধ সৃষ্টি করতে হবে। মোটরসাইকেলের ফ্রি স্টাইল চলাচলে বাধা সৃষ্টি করা দরকার। সবচেয়ে আগে কী কারণে একের পর এক সড়ক দুর্ঘটনা ঘটছে, তা উদঘাটন করে মূল জায়গায় হাত দিতে হবে। আমাদের বিশ্বাস, সড়কে যানবাহন চলাচলে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা করা গেলে দুর্ঘটনার সংখ্যা ৮০ শতাংশ কমিয়ে আনা সম্ভব হবে। এ জন্য লক্কড়ঝক্কড় যানবাহন চলাচল নিষিদ্ধ করা দরকার। যথাযথ প্রশিক্ষণ ছাড়া কেউ যাতে যান্ত্রিক যানবাহন চালাতে না পারে সে বিষয়েও নিশ্চিত হতে হবে। সড়ক দুর্ঘটনায় প্রতিদিনই বিপুলসংখ্যক প্রাণ ঝরবে তা কোনোভাবেই কাম্য হতে পারে না। হতাহতের মিছিল আর দীর্ঘায়িত করতে না চাইলে যানবাহনে চালক, যাত্রী, পথচারী এবং ট্রাফিকব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণে যারা জড়িত, তাদের সবাইকে সচেতন হতে হবে। জনসচেতনতা গড়ে তোলাও জরুরি। নানা ব্যবস্থা নেয়ার পরও প্রতিদিনই দেশজুড়ে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটছে। বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির প্রকাশিত মাসিক দুর্ঘটনার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সারাদেশে গত মার্চে ৫৫২টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৫৬৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এসব দুর্ঘটনায় আহত হয়েছে অন্তত ১ হাজার ২২৮ জন।
লাইসেন্সহীন অদক্ষ চালকের হাতে, এমনকি অপ্রাপ্তবয়স্ক চালকের হাতে গাড়ির চাবি তুলে দেয়া হয়। এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, দেশের প্রায় ৪০ শতাংশ চালকের বৈধ ড্রাইভিং লাইসেন্স নেই। আমাদের দেশে চালকদের আরেকটি বড় সীমাবদ্ধতা হচ্ছে প্রয়োজনীয় শিক্ষাগত যোগ্যতা না থাকা। চালকদের মাদকাসক্তিও সড়ক দুর্ঘটনার বড় কারণ। মাদকাসক্ত অবস্থায় গাড়ি চালানো বন্ধে চালকদের ডোপ টেস্ট করানোর ব্যবস্থা নিতে প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা দিয়েছিলেন। সেই নির্দেশনা কি মেনে চলা হচ্ছে? সেই সময়ে ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদ থেকে জানানো হয়েছিল চালকরা মাদকাসক্ত কিনা, তা রাস্তায়ই পরীক্ষা করা হবে। চালকদের সেই ডোপ টেস্ট কত দূর?
বাংলাদেশ এরই মধ্যে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে উত্তীর্ণ হয়েছে এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশে উন্নীত হওয়ার লক্ষ্য নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। কোনো দেশের আর্থসামাজিক অবস্থার উন্নয়নের জন্য উন্নত পরিবহন ও যোগাযোগ ব্যবস্থা অপরিহার্য। আর্থসামাজিক অগ্রগতির পূর্বশর্ত উন্নত পরিবহন ও যোগাযোগ ব্যবস্থা। অর্থাৎ অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং উন্নত পরিবহন ও যোগাযোগ ব্যবস্থা এ দুটি বিষয় অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত। এছাড়া উন্নত পরিবহন ব্যবস্থা সভ্যতার পরিচয় বহন করে। সুতরাং উন্নত দেশের উপযোগী পরিবহন ব্যবস্থা নিয়ে পরিকল্পনা ও কাজ এখনই শুরু করতে হবে।
সড়ক দুর্ঘটনার আরেকটি বড় কারণ ফিটনেসহীন যানবাহন। সড়ক নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, ত্রæটিপূর্ণ যানবাহন, বেপরোয়া গতি, চালকের বেপরোয়া মানসিকতা, অদক্ষতা ও শারীরিক-মানসিক অসুস্থতা, বেতন ও কর্মঘণ্টা নির্দিষ্ট না থাকা ইত্যাদি কারণে দুর্ঘটনা বাড়ছে। আমরা চাই, সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণে সব ব্যবস্থা নেয়া হোক। চালকদের ডোপ টেস্ট করে প্রয়োজনে নতুন ড্রাইভিং লাইসেন্স দেয়া হোক।

আর কে চৌধুরী : মুক্তিযোদ্ধা ও শিক্ষাবিদ।
[email protected]

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়