পররাষ্ট্রমন্ত্রী : সোমবার ২৮৫ বিজিপি সদস্যকে ফিরিয়ে নেবে মিয়ানমার

আগের সংবাদ

শিশু হাসপাতালে আগুন : রোগীদের নিরাপত্তার দায়িত্ব কার?

প্রকাশিত: এপ্রিল ২১, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: এপ্রিল ২১, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

জীবন বাঁচাতে এসে, উল্টো প্রতি মুহূর্ত শঙ্কায় কাটছে বাংলাদেশ শিশু হাসপাতালের রোগী ও স্বজনদের। গত শুক্রবার দুপুরে চতুর্থ তলার কার্ডিয়াক আইসিইউ বিভাগে এসি বিস্ফোরণ থেকে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। পরে ফায়ার সার্ভিসের পাঁচটি ইউনিট প্রায় ১ ঘণ্টা চেষ্টার পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। এর আগে গত ১৬ এপ্রিল একই হাসপাতালের তৃতীয় তলায় বি-ব্লকে ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের সামনের বারান্দায় ইন্টারনেটের ক্যাবল থেকে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। তবে দুটি ঘটনায় কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। এসব ঘটনায় হতাহত না থাকলেও আতঙ্ক কাটছে না। ঢাকা শিশু হাসপাতালে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা অনভিপ্রেত। স্বস্তির বিষয়, আগুন নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি ফায়ার সার্ভিসের কর্মী, কর্তৃপক্ষ ও রোগীর স্বজনরা হাসপাতালে ভর্তি শিশু রোগীদের নিরাপদে বাইরে বের করতে সক্ষম হয়েছেন। তবে আগুনের সঙ্গে সঙ্গে বেশকিছু যন্ত্রপাতি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, কিছু ভালো আছে। পাশাপাশি আইসিইউ রুমে যে অক্সিজেন সংযোগ ছিল সেটি আগুনের কারণে পুড়ে যায়। একই হাসপাতালে তিন দিনের ব্যবধানে দুবার অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ক্ষুব্ধ রোগীর স্বজনরা। তারা বলছেন, অসুস্থ শিশুদের নিয়ে নানা বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে। এটি দেশের সবচেয়ে বড় শিশু হাসপাতাল অথচ পর্যাপ্ত অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা নেই। বাংলাদেশের মধ্যে বড় ঢাকা শিশু হাসপাতাল। ফায়ার সার্ভিস কর্তৃপক্ষ বলছে, দেশের এত বড় একটি শিশু হাসপাতাল অথচ এখানে ফায়ার এক্সটিংগুইশার ছাড়া আর কিছুই নেই। যার ফলে কার্ডিয়াক আইসিইউতে লাগা আগুন নিয়ন্ত্রণ করতে কিছুটা সময় লেগেছে। কার্ডিয়াক আইসিইউতে থাকা শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র (এসি) বিস্ফোরণে আগুন লেগেছে বলে প্রাথমিক ধারণা করা হচ্ছে। তবে তদন্তের পর ঘটনা সম্পর্কে পুরোপুরি জানা যাবে। আগুনের ঘটনা তদন্তে পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। কার্ডিয়াক আইসিইউ বিভাগের প্রধানকে আহ্বায়ক করে একজন মেইনটেন্যান্স ইঞ্জিনিয়ার, ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার, ওয়ার্ড মাস্টার, একজন সিনিয়র নার্স ও ফায়ার সার্ভিসের প্রতিনিধি রয়েছেন। তারা তিন দিনের মধ্যে তদন্ত শেষ করে প্রতিবেদন জমা দেবেন। দ্রুত আগুন নিয়ন্ত্রণ ও হাসপাতালে অবস্থানরত সবাইকে নিরাপদে সরিয়ে নেয়ার তথ্য দিয়ে কর্তৃপক্ষ আমাদের আশ্বস্ত করলেও হাসপাতালের মতো একটি স্পর্শকাতর স্থানে কেন অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটল, এ প্রশ্ন এড়িয়ে যাওয়ার সুযোগ নেই। বিশেষজ্ঞদের মতে, শর্টসার্কিট থেকে সৃষ্ট অগ্নিকাণ্ডের দুর্ঘটনাগুলোর অধিকাংশই প্রতিরোধ করা সম্ভব। উন্নতমানের বৈদ্যুতিক তার ব্যবহার এবং প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ও দক্ষ ইলেকট্রিশিয়ান দ্বারা ওয়্যারিংয়ের কাজ সম্পন্ন করা হলে শর্টসার্কিটজনিত দুর্ঘটনার হার নিঃসন্দেহে হ্রাস পাবে। শিশু হাসপাতালে অগ্নিকাণ্ডের প্রকৃত কারণ ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ উদ্ঘাটন করে ভবিষ্যতে এ ধরনের দুর্ঘটনা রোধে কী ধরনের সতর্কতা ও প্রতিরোধমূলক পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিত, এ সম্পর্কে কমিটিগুলোর স্পষ্ট দিকনির্দেশনা থাকা উচিত বলে আমরা মনে করি।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়