পীরেরবাগে ভাঙারির দোকানে বিস্ফোরণে দগ্ধ এক

আগের সংবাদ

কী বার্তা পেল জাতীয় পার্টি : গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে জি এম কাদেরের বৈঠক, আসন সমঝোতার আলোচনা

পরের সংবাদ

স্ব স্ব প্রতীকে লড়বে ১৪ দল! : প্র্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে শরিকদের বৈঠকের সিদ্ধান্ত জানাতে আজ সংবাদ সম্মেলন ডেকেছে আ.লীগ

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৫, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: ডিসেম্বর ৫, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : আদর্শিক জোট ১৪ দলের সঙ্গে আওয়ামী লীগের আসন সমঝোতা নিয়ে কয়েকদিন ধরেই চলছে নানা আলোচনা-পর্যালোচনা। এর মধ্যে শরিক দলের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় গণভবনে দীর্ঘ বৈঠক করলেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বৈঠকে শরিক দলের নেতাদের কী বার্তা দিলেন জোটপ্রধান শেখ হাসিনা? এ নিয়ে আগ্রহ নিয়ে সবাই তাকিয়ে ছিলেন গণভবনের দিকে। সন্ধ্যায় ৬টার কিছু সময় পর শুরু হওয়া বৈঠক চলে রাত ১০টা পর্যন্ত। দীর্ঘ এ বৈঠকে আগামী জাতীয় নির্বাচনের কৌশল নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা হয়। জোট শরিকদের কয়েকটি আসনে ছাড় দেয়ার বিষয়ে আলোচনা হয়। তবে কোন কোন আসনে ছাড় পাচ্ছেন ১৪ দলের শরিকরা, কোন প্রক্রিয়ায় ছাড় দেয়া হবে- তা স্পষ্ট করা হয়নি। তবে ১৪ দলের নেতারা স্ব স্ব প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্ব›িদ্বতা করবেন বলে সিদ্ধান্ত হয়েছে। বৈঠক সূত্র এমন তথ্য নিশ্চিত করেছে। আজ মঙ্গলবার বেলা ১২টায় ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ে সাংবাদিকদের বিস্তারিত জানাবেন দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। গতকাল রাতে দলের দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়য়া সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
গণভবনে অনুষ্ঠিত বৈঠকে অংশ নেন কেন্দ্রীয় ১৪ দলের সমন্বয়ক ও মুখপাত্র আমির হোসেন আমু, ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন ও সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা, জাতীয় পার্টি- জেপির চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মঞ্জু ও মহাসচিব শেখ শহীদুল ইসলাম, জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু ও সাধারণ সম্পাদক শিরিন আখতার, সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়–য়া, তরিকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান সৈয়দ নজীবুল বশর মাইজভাণ্ডারীসহ অন্য শরিক দলের শীর্ষ নেতারা। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম।
বৈঠকসূত্র জানা গেছে, সভার শুরুতে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর আগামী জাতীয় নির্বাচন সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক করার বিষয়ে আলোচনা হয়। জোটের শীর্ষ নেতারাও বক্তব্য রাখেন। বৈঠকের এক পর্যায়ে ১৪ দলের পক্ষ থেকে আসন বণ্টন নিয়ে আলোচনা শুরু হয়। জোটের সমন্বয়কসহ শরিক দলগুলোর শীর্ষ নেতারা নিজ নিজ দলের প্রার্থী তালিকা প্রধানমন্ত্রীর কাছে তুলে দেন। এরপর সেগুলো নিয়ে শরিকদের মধ্যে দীর্ঘ আলোচনা হয়। তবে জোটের কোন দলকে কয়টা আসন ছাড় দেয়া হবে, কোন প্রক্রিয়ায় দেয়া হবে- সে বিষয়ে কিছু জানা যায়নি।
১৪ দল সূত্র জানায়, এবার নির্বাচনে জাসদ আসন চেয়েছে ৮টি। বর্তমানে দলটির সংসদ সদস্য আছেন ৩ জন। বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি আসন চায় ৭টি। এই সংসদে দলটির সদস্য আছেন ৩ জন। তরিকত ফেডারেশনের বর্তমানে ১ জন সংসদ সদস্য থাকলেও এবার ৫টি আসন আশা করছে তারা। জাতীয় পার্টি (জেপি) ৫টি আসন দাবি করলেও বর্তমানে দলটির ১ জন সংসদ সদস্য আছেন। সাম্যবাদী দলের কোনো সংসদ সদস্য না থাকলেও এবার ১টি আসন চায় তারা। জোটের বাকি শরিক দলগুলোর বর্তমান সংসদে প্রতিনিধিত্ব নেই, তাদের প্রত্যাশাও কম নয়।
১৪ দলীয় জোট শরিকদের মধ্যে যারা বিভিন্ন আসনে মনোনয়ন ফরম দাখিল করেছেন তাদের মধ্যে

উল্লেখযোগ্যরা হলেন বরিশাল-২ ও ৩ আসনে ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন। তিনি বর্তমানে

ঢাকা-৮ আসনের সংসদ সদস্য। মেনন টানা তিন মেয়াদে নৌকা প্রতীকে এই আসনটি থেকে নির্বাচন করে বিজয়ী হয়ে আসছিলেন। তাকে এবার বরিশাল ২ ও ৩ আসনের যে কোনো একটি ছেড়ে দেয়া হতে পারে বলে আলোচনা হয়েছে। কুষ্টিয়া-২ আসনে আওয়ামী লীগ কাউকেই দলীয় মনোনয়ন দেয়নি। এখানে টানা তিন মেয়াদে নৌকার প্রতীকে নির্বাচিত হয়ে আসছেন জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু। এবার আসনটি ফাঁকা রাখা হয়েছে। হাসানুল হক ইনু-ই এখানে ১৪ দলের প্রার্থী।
পিরোজপুর-২ আসনে জোটের প্রার্থী হিসেবে বাইসাইকেল প্রতীকে টানা তিন মেয়াদে নির্বাচিত হয়ে আসছিলেন জাতীয় পার্টি-জেপির (মঞ্জু) চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মঞ্জু। এবারো তিনি এই আসন থেকেই প্রার্থী হয়েছেন। কিন্তু আওয়ামী লীগ এখানে এবার দলীয় প্রার্থী হিসেবে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কানাই লাল বিশ্বাসকে মনোনয়ন দিয়েছে। এখানে নৌকার প্রার্থী শেষ পর্যন্ত মনোনয়ন প্রত্যাহার করবেন বলে জানা গেছে।
ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা নৌকা প্রতীকে রাজশাহী-২ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য। এবার এখানে নৌকার প্রার্থী মোহাম্মদ আলী। শেষ পর্যন্ত বাদশাকেই আসনটি ছেড়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। তিনি নৌকা প্রকীকে এখানে নির্বাচন করবেন।
তরিকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান সৈয়দ নজীবুল বশর মাইজভাণ্ডারী চট্টগ্রাম-২ আসনে জোটের প্রার্থী হিসেবে নৌকা প্রতীকে নির্বাচন করে আসছিলেন। এবার এখানে আওয়ামী লীগ প্রার্থী করেছে সংরক্ষিত সংসদ সদস্য খাদিজাতুল আনোয়ারকে। আসন সমঝোতা হলে নিজেদের প্রার্থী প্রত্যাহার করে নিতে পারে আওয়ামী লীগ। জোটের প্রার্থী হিসেবে নজীবুল বশর এখানে নৌকার প্রতীকে প্রতিদ্ব›িদ্বতা করতে অনড় অবস্থানে রয়েছেন।
ইতোপূর্বে সংসদ সদস্য না হলেও টেকনোক্র্যাট কোটায় মন্ত্রী ছিলেন ১৪ দলীয় জোটের অন্যতম শরিক সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়–য়া। এবার চট্টগ্রাম-১ আসনে প্রার্থী হয়েছেন তিনি। এখানে আওয়ামী লীগ মনোনয়ন দিয়েছে দলটির সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনের ছেলে মাহবুবুর রহমানকে। এখানে জোটের কাউকে মনোনয়ন দেয়া হচ্ছে না বলে জানান গেছে। এছাড়া ফেনী-১ আসনে নৌকা প্রতীকে বর্তমান সংসদ সদস্য জাসদ সাধারণ সম্পাদক শিরিন আখতার। এবার এখানে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আলাউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী নাসিম। এই আসনটি এবার জোটকে ছেড়ে দেয়া হচ্ছে না বলে জানা গেছে। যদিও আসনটির জন্য বেশ দেনদরবার করছে জাসদ। এছাড়া জোটের অন্যান্য শীর্ষ নেতারাও তাদের নিজ নিজ এলাকায় মনোনয়ন চান বলে জানা গেছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়