মুজিবুল হক চুন্নু : মানুষ ভোট দিতে পারবে এই আস্থা নেই

আগের সংবাদ

শিক্ষা বাঁচানোর উপায় কী : হরতাল-অবরোধে আটকে আছে প্রায় ২ কোটি পাঠ্যবই, ঢাকায় শুক্র-শনিবার ক্লাস-পরীক্ষা

পরের সংবাদ

জামায়াত নিষিদ্ধ হওয়ার মামলা কি ঝুলে থাকবে?

প্রকাশিত: নভেম্বর ২১, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ২১, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

গত রবিবার রাজনৈতিক দল হিসেবে জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করে হাইকোর্টের দেয়া রায়ের বিরুদ্ধে দলটির করা আপিল খারিজ করে দিয়েছেন সর্বোচ্চ আদালত। ফলে এক দশক আগে জামায়াতের নিবন্ধন বাতিল ও অবৈধ ঘোষণা করে দেয়া হাইকোর্টের রায়ই বহাল থাকছে। এ দেশের জনগণ চায়, জামায়াতকে পুরোপুরি নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হোক। নির্বাচনে লড়াইয়ের অধিকার কেড়ে নিয়ে কোনো লাভ নেই। স্বাধীনতাবিরোধী শক্তিকে নির্মূল করা জরুরি। রাজনৈতিক দল হিসেবে জামায়াতকে নির্বাচন কমিশনের দেয়া নিবন্ধনের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ২০০৯ সালে রিট করেন সৈয়দ রেজাউল হক চাঁদপুরীসহ ২৫ ব্যক্তি। রিটের চূড়ান্ত শুনানি নিয়ে সংখ্যাগরিষ্ঠ মতের ভিত্তিতে রাজনৈতিক দল হিসেবে জামায়াতের নিবন্ধন অবৈধ ঘোষণা করে ২০১৩ সালের ১ আগস্ট রায় দেন হাইকোর্টের তিন সদস্যের বৃহত্তর বেঞ্চ। একই সঙ্গে আদালত এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করার সনদ দেন, যা পরবর্তী সময়ে আপিল হিসেবে রূপান্তরিত হয়। এছাড়া হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে একই বছর দলটির পক্ষ থেকে লিভ টু আপিল (সিপি) করা হয়। ২০১৮ সালের ৭ ডিসেম্বর জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন বাতিল করে প্রজ্ঞাপন জারি করে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। নানা কারণেই গত এক দশকের বেশি সময় ধরে প্রচণ্ড রাজনৈতিক চাপে রয়েছে জামায়াতে ইসলামী। যুদ্ধাপরাধে অভিযুক্ত দলটির প্রথম সারির প্রায় সব নেতা দণ্ডিত হয়েছেন। তাদের কারো কারো ফাঁসিতে ঝুলে জীবনাবসান হয়েছে। কারো প্রাণদণ্ড হয়েছে। কেউ কেউ আজীবন দণ্ড নিয়ে কারাগারের অন্ধকার প্রকোষ্ঠে। এই বাস্তবতার মধ্যেই নিবন্ধন হারানো দলটি আগামী সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে নানা কৌশলে মাঠে নেমেছে। নির্বাচন সামনে রেখে ২৮ অক্টোবর মতিঝিলের আরামবাগে সমাবেশ করে নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধন হারানো এই রাজনৈতিক দলটি। এর আগে গত ১০ জুন সমাবেশ করে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটে। এ নিয়ে নানামহলে আলোচনা-সমালোচনা হয়। জামায়াত-শিবির নতুন করে মাঠে সক্রিয়তার বিষয়টি সচেতন মহলে ঘুরপাক খাচ্ছে। সামনে আসছে জামায়াত নিষিদ্ধের প্রক্রিয়ার বিষয়টিও। জামায়াত-শিবিরের কার্যক্রম দৃশ্যমান না হলেও গোপনে কার্যক্রম চালাচ্ছে। দীর্ঘদিন নিষ্ক্রিয় থাকার পর নানা কৌশলে সংগঠিত হওয়ার চেষ্টা করছে স্বাধীনতাবিরোধী এ দলটি। ভেতরে ভেতরে দল গোছানোর কাজ তারা করছে অতি বিচক্ষণতার সঙ্গে। দলের নিবন্ধন বাতিল হলেও তারা আগামী সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে সক্রিয় হয়ে উঠছে। সরকারবিরোধী বৃহত্তর ঐক্যের পথে হাঁটা বিএনপিসহ রাজপথের বিরোধী দলগুলোর সঙ্গে ‘যুগপৎ’ আন্দোলনে নিজেদের সক্রিয় করতেও প্রস্তুতি নিচ্ছে স্বাধীনতাবিরোধী দলটি। গত এক মাস ধরে বিএনপির সঙ্গে জামায়াত-শিবির দেশের বিভিন্ন স্থানে জ¦ালাও-পোড়াও করে নৈরাজ্য চালিয়ে আসছে।
জামায়াতের নিবন্ধন বাতিলে হাইকোর্টের রায় বহালে রিটকারী পক্ষের আইনজীবী ব্যারিস্টার তানিয়া আমীর বলেন, নিবন্ধন বাতিলের রায়ের বিরুদ্ধে জামায়াতের আপিল খারিজ হয়ে যাওয়ায় দলটির আর কোনো অস্তিত্ব থাকল না। তাই জামায়াত কোনো ধরনের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করতে পারবে না। কোনো মিছিল-মিটিং করতে পারবে না। হাইকোর্টের রায় জামায়াত মানবে কিনা, সেটা দেখার বিষয়। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে শীর্ষ নেতাদের ফাঁসির রায় কার্যকর হওয়ার পর সারাদেশে জামায়াতের রাজনীতিতে একটা শূন্যতা সৃষ্টি হয়। তাছাড়া প্রকাশ্যে সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনার ক্ষেত্রেও প্রশাসনিক বাধার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। এরপরও তারা সাংগঠনিক কার্যক্রম চালাচ্ছে। দলটিকে হালকা করে দেখার সুযোগ নেই। জামায়াত নিষিদ্ধ হওয়ার মামলাটি ঝুলে আছে। জামায়াত নিষিদ্ধ হবে কিনা, নিষিদ্ধ হলে জামায়াত কী কৌশল নেবে, তা দেখার জন্য অপেক্ষা করতে হবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়