বিরোধীদের এক করতে তৎপর বিএনপি

আগের সংবাদ

পরিবহন খাতের সর্বনাশ : অবরোধ-হরতালে ৩৭০টি গাড়িতে অগ্নিসংযোগ, সব মিলিয়ে ক্ষতি সাড়ে ১০ হাজার কোটি টাকা

পরের সংবাদ

আল শিফা হাসপাতাল ‘মৃত্যুপুরী’, গণকবরে ৮০ মরদেহ : গাজায় আশ্রয়কেন্দ্রে হামলায় নিহত ৮০

প্রকাশিত: নভেম্বর ২০, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ২০, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ ডেস্ক : ইসরায়েলের অভিযানের পর গাজার সর্ববৃহৎ হাসপাতাল আল-শিফা ‘মৃত্যুপুরীতে’ পরিণত হয়েছে বলে জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা-ডব্লিউএইচও। ডব্লিউএইচওর কয়েকজন এবং জাতিসংঘের আরো কয়েকজন কর্মকর্তা শনিবার গাজা সিটির হাসপাতাল আল-শিফা পরিদর্শন করে আসার পর এক মূল্যায়নে এ কথা বলেন বলে জানায় সিএনএন।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নেতৃত্বাধীন ওই পর্যালোচনা দলে আছেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞসহ জাতিসংঘের বিভিন্ন বিভাগের রসদবিষয়ক কর্মকর্তা ও নিরাপত্তা কর্মকর্তারা। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বিবৃতিতে বলা হয়, নিরাপত্তাসংক্রান্ত উদ্বেগের কারণে ১৮ নভেম্বর প্রতিনিধি দলটি মাত্র এক ঘণ্টা ওই হাসপাতালে অবস্থান করেছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দলটি হাসপাতালটিকে ‘মৃত্যুপুরী’ উল্লেখ করে বলেছে, সেখানকার পরিস্থিতি ‘শোচনীয়’। বিশুদ্ধ পানি, জ্বালানি, ওষুধ ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় উপকরণের অভাবে হাসপাতালটি কার্যত অচল হয়ে পড়েছে।
গতকাল রবিবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্স (সাবেক টুইটার) এ ডব্লিউএইচওর পক্ষ থেকে এক পোস্টে বলা হয়, ‘জাতিসংঘের দলটি প্রায় এক ঘণ্টা হাসপাতালের ভেতরে কাটিয়েছে। সে সময়ে হাসপাতালটির খুব কাছে প্রচণ্ড লড়াই চলছিল। দলটি হাসপাতালের প্রবেশ পথে একটি গণকবর দেখতে পেয়েছে এবং বলেছে, ওই গণকবরে ৮০টি মৃতদেহ কবর দেয়া হয়েছে। আল-শিফায় এখন ২৫ জন স্বাস্থ্যকর্মী এবং ২৯১ জন রোগী রয়েছে। চিকিৎসাসেবা পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় গত দুই বা তিন দিনে অনেক রোগী মারা গেছে। ৩২টি শিশুসহ অনেক রোগীর অবস্থা খুবই গুরুতর। দুইজন রোগী কোনো রকম ভেন্টিলেশন ছাড়াই আইসিইউ তে রয়েছে। ২২ জন ডায়ালাইসিসের রোগী জীবন রক্ষাকারী চিকিৎসা পাচ্ছেন না।’
হাসপাতালের কয়েকজন স্বাস্থ্যকর্মী এবং রোগী জাতিসংঘের কর্মীদের বলেছেন, তারা তাদের ‘স্বাস্থ্য এবং জীবনের নিরাপত্তা নিয়ে চরম আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন’।
আল-শিফার রোগী এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের দক্ষিণ গাজার অন্য

দুইটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার বিষয়ে তারা ‘জরুরিভিত্তিতে পরিকল্পনা করছে’ বলেও জানিয়েছে ডব্লিউএইচও। সেখানে বেশির ভাগ রোগীই যুদ্ধাহত, অনেকের শরীরের জটিল সব হাড় ভেঙে গেছে বা অঙ্গচ্ছেদ করা হয়েছে। কেউ কেউ মাথায় আঘাত, পোড়া ক্ষত, বুকে-পেটে গুরুতর আঘাত নিয়ে শয্যায় পড়ে আছেন। ২৯ জন রোগীর মেরুদণ্ডে গুরুতর আঘাত রয়েছে। তারা এমনকি স্বাস্থ্যকর্মীদের সহায়তা ছাড়া নাড়াচাড়া পর্যন্ত করতে পারেন না। হাসপাতালে সংক্রমণ প্রতিরোধের চিকিৎসা ও অ্যান্টিবায়োটিকে অভাবে অনেক রোগীর ক্ষত মারাত্মক রূপ নিয়েছে।
গত বুধবার ভোর থেকে আল-শিফা হাসপাতালের ভেতর অভিযান শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী। যেখানে রোগী ও চিকিৎসাকর্মীদের পাশপাশি প্রাণ বাঁচাতে গাজার বিভিন্ন স্থান থেকে পালিয়ে আসা হাজার হাজার ফিলিস্তিনি আশ্রয় নিয়েছিল।
ইসরায়েলের দাবি, হামাস হাসপাতালটি তাদের সামরিক উদ্দেশে ব্যবহার করছে। তাছাড়া হাসপাতালের নিচে ভূগর্ভে হামাসের একটি কমান্ড সেন্টার রয়েছে। যদিও হামাস এবং হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ উভয়ই ইসরায়েলের ওই অভিযোগ অস্বীকার করেছে। সিএনএন স্বাধীনভাবে কোনো পক্ষের দাবির সত্যতা যাচাই করতে পারেনি। হাসপাতালে অভিযান চালানোর কারণে ইসরায়েলের ওপর আন্তর্জাতিক চাপ বাড়ছে। যদি ইসরায়েল তাদের দাবির পক্ষে প্রমাণ দিতে ব্যর্থ হয় তবে দেশটির বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের গুরুতর লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠবে।
এদিকে, হামাসের স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা বলেছেন, উত্তর গাজার জাবালিয়ায় দুটি বিস্ফোরণে এক সঙ্গে ৮০ জন নিহত হয়েছেন। ইসরায়েলের কর্মকর্তারা বিবিসিকে বলেছেন, তারা জাতিসংঘের একটি স্কুলে- যেটা কিনা আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার হচ্ছিল, সেখানে হামলা চালিয়েছে কিনা তা নিশ্চিত করতে পারেনি, তবে তদন্ত করছে। বিবিসি জাবালিয়ার আল-ফাখৌরা স্কুলের জিওলোকেটেড ফুটেজ ভেরিফাই করে দেখেছে যে, স্কুলটিতে নারী ও শিশুসহ অনেক মানুষ গুরুতর জখম অবস্থায় পড়ে আছে। ভবনের বিভিন্ন অংশে মানুষকে মেঝেতে নিশ্চল অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা যায়। ফুটেজে এমন ২০টিরও বেশি হতাহতের ঘটনা দেখা গিয়েছে এবং এর মধ্যে প্রায় অর্ধেককে নিচ তলায় একটি নির্দিষ্ট ঘরে দেখা যায়। এমনটা দেখে ধারণা করা যায়, ওই আশ্রয়কেন্দ্রটি যথেষ্ট ক্ষয়ক্ষতির শিকার হয়েছে।
ফিলিস্তিনি উদ্বাস্তুদের জন্য জাতিসংঘের সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএর প্রধান ফিলিপ লাজারিনি বলেছেন যে, তিনি তার এজেন্সির একটি স্কুলে অসংখ্য মানুষ হতাহত হওয়ার ভয়ংকর ছবি এবং ফুটেজ দেখেছেন। ওই স্কুলটিতে ‘হাজার হাজার বাস্তুচ্যুতকে আশ্রয় দেয়া’ হয়েছিল।
‘এই হামলাগুলোকে সাধারণ ঘটনা বানিয়ে ফেলা যাবে না, তাদের অবশ্যই থামাতে হবে,’ তিনি বলেন।

যুদ্ধবিরতির বিষয়ে কোনো চুক্তি হয়নি : নেতানিয়াহু
প্রায় অর্ধশত জিম্মিকে মুক্তির বিনিময়ে গাজায় পাঁচ দিনের যুদ্ধবিরতির বিষয়ে একটি চুক্তির খুব কাছে পৌঁছে যাওয়ার যে খবর ওয়াশিংটন পোস্ট দিয়েছে তা উড়িয়ে দিয়েছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। কূটনীতিকদের বরাত দিয়ে শনিবার ওয়াশিংটন পোস্ট একটি খবর প্রকাশ করে। যেখানে বলা হয়, কাতারের মধ্যস্থতায় ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে আলোচনায় অগ্রগতি হয়েছে এবং উভয় পক্ষ একটি চুক্তির বিষয়ে একমত হয়েছে।
ওয়াশিংটন পোস্ট ‘ছয় পাতার ওই চুক্তি’ সম্পর্কে ‘বিস্তারিত তথ্য’ দিয়ে বলে, চুক্তিতে ‘অন্তত পাঁচ দিনের যুদ্ধবিরতির কথা বলা হয়েছে। যে সময়ে প্রাথমিকভাবে ৫০ জন বা তার বেশি জিম্মিকে মুক্তি দেয়া হবে। প্রতি ২৪ ঘণ্টায় জিম্মিদের এক একটি ব্যাচকে মুক্তি দেয়া হবে’।
সেই সঙ্গে চুক্তিতে গাজায় পাঠানো ‘মানবিক ত্রাণের পরিমাণ উল্লেখযোগ্য হারে বাড়ানোর’ কথাও বলা হয়েছে। ওই ত্রাণের মধ্যে বিশেষ করে ‘জ্বালানির’ কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
ওয়াশিংটন পোস্টের ওই প্রতিবেদন প্রকাশের পর টাইমস অব ইসরায়েল থেকে এ বিষয়ে জানতে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদে যোগাযোগ করা হলে তাদের একজন মুখপাত্র বলেন, ‘আমরা এখনো কোনো চুক্তিতে পৌঁছাইনি। তবে একটি চুক্তিতে উপনীত হতে আমরা কঠোর পরিশ্রম করে যাচ্ছি।’
শনিবার ইসরায়েলের চ্যানেল ১২ এর খবরে বলা হয়, ইসরায়েল জিম্মি মুক্তির আলোচনায় এক একটি পরিবারের সব সদস্যকে এক সঙ্গে মুক্তি দেয়ার বিষয়ে জোর দিয়েছে। তবে সেদিনই দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু জিম্মি মুক্তির বিষয়ে গত কয়েক দিনে প্রকাশ পাওয়া ‘অনেক খবরই অসত্য’ বলে উড়িয়ে দেন। বলেন, ‘এখন পর্যন্ত কোনো চুক্তি হয়নি।’ শনিবারের ব্রিফিংয়ে তিনি আরো বলেন, ‘এখন পর্যন্ত কোনো চুক্তির বিষয়ে আমরা একমত হতে পারিনি। আমরা সব জিম্মিকে মুক্ত করে আনতে চাই। এজন্য আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি, যাতে সম্ভাব্য সবচেয়ে বেশি জিম্মিকে ফিরিয়ে আনা যায়। এবং আমরা ঐক্যবদ্ধ আছি। অবশ্যই আমরা পুরো পরিবারকে একসঙ্গে ফিরিয়ে আনতে চাই।’
গত ৭ অক্টোবর গাজার সশস্ত্র বাহিনী হামাস ইসরায়েলে হামলায় চালিয়ে ১৪শর বেশি মানুষ কে হত্যা করে। জিম্মি করে নিয়ে যায় ২৪২ জনকে। এখন পর্যন্ত মাত্র চারজন জিম্মিকে তারা মুক্তি দিয়েছে।
হামাসের হামলার দিন থেকেই গাজায় পাল্টা হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। বিমান হামলা করে তারা প্রথমে গাজাকে মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দেয়া চেষ্টা করে। এখন বিমান হামলার পাশপাশি হামাসকে গাজার মাটি থেকে সম্পূর্ণ নিশ্চিহ্ন করতে সেখানে স্থল অভিযান চালাচ্ছে। এর মধ্যে ইসরায়েলি বাহিনী গাজার উত্তরাংশ ঘিরে ফেলেছে।

এবার খান ইউনিস ছাড়তে বলেছে ইসরায়েল :
উত্তর গাজা এলাকার পর এখন দক্ষিণ গাজার খান ইউনিস শহর ছাড়ার জন্য ফিলিস্তিনিদের নির্দেশ দিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। গাজার উত্তরাঞ্চলে ইসরায়েলি বাহিনী স্থল অভিযান শুরু করার পর লাখ লাখ মানুষ সেখান থেকে পালিয়ে খান ইউনিসে এসে আশ্রয় নিয়েছে। কিন্তু ইসরায়েলি বাহিনীর নতুন নিদের্শনার ফলে ধারণা করা হচ্ছে যে, দক্ষিণ গাজা এলাকাতেও খুব তাড়াতাড়ি অভিযান শুরু করা হবে। ইসরায়েল জানিয়েছে, হামাসকে একেবারে নির্মূল করে ফেলাই হচ্ছে তাদের প্রধান উদ্দেশ। হামাসের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরায়েলি হামলায় এ পর্যন্ত ১২ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছে, যাদের মধ্যে ৫০০০ শিশু রয়েছে।
শনিবার খান ইউনিসের একটি বাড়িতে ইসরায়েলি ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ২৬ জন নিহত হয়। ওই ঘটনার বিষয়ে এখনো কোনো মন্তব্য করেনি ইসরায়েল। কিন্তু খান ইউনিসে লিফলেট বিতরণ করেছে ইসরায়েল। সেখানে মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যাওয়ার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর একজন উপদেষ্টা মার্ক রেজেভ বলেছেন, আমরা মানুষকে অন্যত্র চলে যেতে বলছি, কারণ আমরা চাই না বেসামরিক মানুষ ক্রসফায়ারে পড়ে মারা যাক।
তিনি বলেন, ভূগর্ভস্থ টানেলে লুকিয়ে থাকা হামাস যোদ্ধাদের নিমূর্ল করতে ওই শহরের দিকে অগ্রসর হওয়ার দরকার হতে পারে ইসরায়েলি বাহিনীর।
হামলাকারীদের বিরুদ্ধে ভিসা নিষেজ্ঞার হুঁশিয়ারি বাইডেনের :
পশ্চিম তীরে বসবাস করা ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে নৃশংসতা বন্ধের আহ্বান জানিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, সেখানকার বেসামরিক নাগরিকদের ওপর হামলা করা ‘চরমপন্থিদের’ বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র ভিসা নিষেধাজ্ঞা জারি করতে প্রস্তুত।

একই সঙ্গে তিনি আবারো পশ্চিম তীর ও গাজার ফিলিস্তিনিদের জন্য একটি আলাদা রাষ্ট্রের পক্ষে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান নিশ্চিত করেছেন। ওয়াশিংটন পোস্টে এক নিবন্ধে বাইডেন লেখেন, ‘এটা খুবই পরিষ্কার যে, ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনি জনগণের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা নিরাপত্তা সংকটের অবসান একমাত্র একটি দ্বিরাষ্ট্র সমাধানের মাধ্যমে সম্ভব।’
শনিবার ওয়াশিংটন পোস্টে ওই প্রতিবেদনটি প্রকাশ পায় বলে জানায় সিএনএন। যেখানে বাইডেন আরো লেখেন, ‘আমি ইসরায়েলের নেতাদের জোর দিয়ে বলেছি, পশ্চিম তীরে ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে চরমপন্থি সহিংসতা বন্ধ করতেই হবে এবং যারা সহিংসতা চালাচ্ছে তাদের অবশ্যই জবাবদিহি করতে হবে। যুক্তরাষ্ট্র পশ্চিম তীরে বেসামরিক নাগরিকদের ওপর হামলাকারী চরমপন্থিদের বিরুদ্ধে ভিসা নিষেধাজ্ঞা জারিসহ আমাদের নিজস্ব পদক্ষেপ নিতে প্রস্তুত।’

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়