সংসদ নির্বাচনের কোনো প্রস্তুতি নেই বিএনপির : রেলপথমন্ত্রী

আগের সংবাদ

জোট নাকি মহাজোট? একক ও জোটগত ভোটের প্রস্তুতি আওয়ামী লীগের > জাতীয় পার্টির সিদ্ধান্ত স্পষ্ট নয়

পরের সংবাদ

রোহিঙ্গা গণহত্যা : পক্ষভুক্ত হতে আরো চায় ৭ দেশ

প্রকাশিত: নভেম্বর ১৮, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ১৮, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ ডেস্ক : মিয়ানমারের বিরুদ্ধে গাম্বিয়ার করা রোহিঙ্গা গণহত্যা মামলায় পক্ষভুক্ত হতে ৭টি দেশ নেদারল্যান্ডসে হেগ-এর আর্ন্তজাতিক ন্যায়বিচার আদালতে (আইসিজে) আবেদন করেছে। কানাডা, ডেনমার্ক, ফ্রান্স, জার্মানি, নেদারল্যান্ডস ও যুক্তরাজ্য যৌথভাবে এবং এককভাবে মালদ্বীপ এ আবেদন করে। বৃহস্পতিবার আইসিজের এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
আইসিজে জানিয়েছে, এসব দেশ ১৯৪৮ সালের গণহত্যার অপরাধ প্রতিরোধ ও সাজাবিষয়ক সনদের স্বাক্ষরকারী হিসেবে এই মামলায় পক্ষভুক্ত হওয়ার অধিকার রাখে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়- কানাডা, ডেনমার্ক, ফ্রান্স, জার্মানি, নেদারল্যান্ডস এবং যুক্তরাজ্য বলেছে, সনদের উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের অভিন্ন স্বার্থে তারা এই মামলায় অন্তর্ভুক্ত হওয়ার অধিকার প্রয়োগ করতে চায়।
জার্মান পররাষ্ট্রবিষয়ক কর্মকর্তা তানিয়া ভন উরসুলা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) দেয়া এক পোস্টে বলেন, আমরা বিশেষত নারী ও শিশুদের ওপর সহিংসতার বিষয়টিতে নজর দিচ্ছি। মালদ্বীপ বলেছে, ‘রোহিঙ্গা মুসলমানদের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘন ও বর্বর আক্রমণ অব্যাহত থাকায়’ তাদের গভীর উদ্বেগ থেকে এবং একই সঙ্গে আন্তর্জাতিক সহযোগিতার মাধ্যমে গণহত্যা প্রতিরোধ ও এই অপরাধে শাস্তিবিধানের অভিপ্রায়ে তারা মামলায় পক্ষভুক্ত হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
আইসিজের বিধি অনুযায়ী, গণহত্যা সনদের আওতায় মামলা হলে মামলায় পক্ষ না হলেও সনদে স্বাক্ষরকারী অন্য যে কোনো দেশ শুনানিতে পক্ষভুক্ত হওয়ার আবেদন করতে পারে। এই মামলায় আদালত যে রায় দেবেন, তা পক্ষভুক্ত হওয়া দেশগুলোর ক্ষেত্রেও সমভাবে প্রযোজ্য হবে।
২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট রাখাইনে নিরাপত্তা বাহিনীর বেশ কিছু স্থাপনায় ‘বিদ্রোহীদের’ হামলার পর রোহিঙ্গাদের গ্রামে গ্রামে শুরু হয় সেনাবাহিনীর অভিযান। সেই সঙ্গে শুরু হয় বাংলাদেশ সীমান্তের দিকে রোহিঙ্গাদের ঢল। ৭ লাখের বেশি রোহিঙ্গা প্রাণ বাঁচাতে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। তাদের কথায় উঠে আসে নির্বিচারে হত্যা, ধর্ষণ, জ্বালাও-পোড়াওয়ের ভয়াবহ বিবরণ, যাকে জাতিগত নির্মূল অভিযান বলে জাতিসংঘ। তবে মিয়ানমার গণহত্যার কথা অস্বীকার করেছে এবং জাতিসংঘের সত্যানুসন্ধান মিশনে যে তথ্য বেরিয়ে এসেছে, তা পক্ষপাতদুষ্ট এবং ত্রæটিপূর্ণ বলে বর্ণনা করেছে।
২০১৯ সালের ১১ নভেম্বর ওআইসিভুক্ত দেশ গাম্বিয়া গণহত্যা সনদ লঙ্ঘনের অভিযোগে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে অন্তর্বর্তী আদেশের জন্য আইসিজেতে আবেদন করে। তখন বলা হয়, মিয়ানমারকে তার নিজ দেশের মানুষ রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে আচরণের জন্য জবাবদিহি করানোই গাম্বিয়ার লক্ষ্য। গাম্বিয়া তাদের ৪৬ পৃষ্ঠার অভিযোগে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে রাখাইন রাজ্যে বসবাসরত রোহিঙ্গা মুসলমানদের নির্বিচারে হত্যা, ধর্ষণ এবং তাদের আবাস ধ্বংসের কথা বলেছে।
আদালত শুনানি নিয়ে ২০২০ সালের ২০ জানুয়ারি গণহত্যার ঝুঁকি থেকে রোহিঙ্গাদের রক্ষায় ব্যবস্থা নেয়াসহ বেশ কয়েকটি পদক্ষেপ নিতে অন্তর্বর্তী আদেশ দেন। সে সময় আদালত গণহত্যার অভিযোগের সব সাক্ষ্যপ্রমাণ সংরক্ষণেরও নির্দেশ দেন। এরপর গণহত্যার অভিযোগ সম্পর্কে পূর্ণাঙ্গ শুনানির জন্য উভয় পক্ষকে মামলার আরজি ও তার জবাব লিখিতভাবে পেশ করতে সময় নির্ধারণ করে দেন আদালত। গাম্বিয়া ২০২০ সালের ২৩ অক্টোবরের মধ্যে নির্ধারিত সময়ে আরজি পেশ করে, কিন্তু মিয়ানমার ২০২১ সালের ২০ জানুয়ারি আদালতের এখতিয়ার চ্যালেঞ্জ করে মামলা করে। আদালত ওই আবেদনের ওপরও শুনানি গ্রহণ করেন। ২০২২ সালের ২২ জুলাই আদালত রায় দেন, মামলাটি আইসিজের গ্রহণের এখতিয়ার আছে।
এরপর আদালত গাম্বিয়ার আরজির জবাব দাখিলের জন্য মিয়ানমারকে সময় বেঁধে দেন এবং মিয়ানমারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তিন দফা সময় দেন। সর্বশেষ গত ২৪ আগস্টের সময়সীমার মধ্যে মিয়ানমার তার জবাব দাখিল করেছে। মামলাটি এখন আদালতের শুনানির অপেক্ষায় রয়েছে। তবে এখনো শুনানির তারিখ দেয়া হয়নি।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়