সংসদ নির্বাচনের কোনো প্রস্তুতি নেই বিএনপির : রেলপথমন্ত্রী

আগের সংবাদ

জোট নাকি মহাজোট? একক ও জোটগত ভোটের প্রস্তুতি আওয়ামী লীগের > জাতীয় পার্টির সিদ্ধান্ত স্পষ্ট নয়

পরের সংবাদ

বিএনপিকে ক্ষমা চেয়ে ভোটে আসার আহ্বান : দলীয় নির্বাচন কমিটির সভায় শেখ হাসিনা

প্রকাশিত: নভেম্বর ১৮, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ১৮, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : আগুনসন্ত্রাসের জন্য বিএনপিকে জনগণের কাছে ক্ষমা চেয়ে ভোটে আসার আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বিএনপি ২০১৪ সালের মতো আবারো জ্বালাও-পোড়াও শুরু করেছে জানিয়ে তিনি বলেন, আগুন নিয়ে খেলা এ দেশের মানুষ পছন্দ করে না। বিএনপি জোটকে বলব, এই খেলা মানুষ পছন্দ করছে না। মানুষ এটা কখনোই মেনে নেবে না। বিএনপি-জামায়াত ভোট বানচাল করতে চেয়েছিল মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, সেটিও তারা পারবে না। নির্বাচন জনগণের অধিকার। মানুষ ভোটের মাধ্যমে তার পছন্দের প্রার্থী নির্বাচন করবে। গতকাল শুক্রবার রাজধানীর তেজগাঁওয়ে দলের ঢাকা জেলা কার্যালয়ে আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালনা সংক্রান্ত জাতীয় কমিটির সভায় এসব কথা দলের সভাপতি শেখ হাসিনা।
তফসিল ঘোষণা করা হয়েছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, নির্বাচনের দরজা সবার জন্য উন্মুক্ত। নির্বাচন করতে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে এবং নির্বাচনে অংশ নিতে হবে। আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির চেয়ারম্যান শেখ হাসিনা অগ্নিসংযোগ ও সহিংসতায় ভয় না পেয়ে নিয়ম মেনে যথাসময়ে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করার জন্য নির্বাচন কমিশনকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। এ সময় তিনি সময়মতো নির্বাচন যাতে সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠিত হয় সেজন্য দেশবাসীর সহযোগিতা কামনা করেন। শেখ হাসিনা বলেন, জনগণের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে এবং তাদের পছন্দের সরকার গঠনের জন্যই এ নির্বাচন। আমার ভোট আমি দেব, যাকে খুশি তাকে দেব’ স্লোগান দিয়ে আপনারা (নির্বাচনে) ভোট দিন। তিনি প্রশ্ন তোলেন, যারা খুন করেছে এবং সাধারণ মানুষকে হত্যার পরিকল্পনা করেছে, তাদের জনগণ কেন ভোট দিতে যাবে, তাদের ওপর আস্থা রাখবে? জনগণ তাদের বিশ্বাস করে না, কারণ তারা খুনি ও ষড়যন্ত্রকারী হিসেবে চিহ্নিত। নির্বাচন জনগণের অধিকার এবং এটা তাদের সাংবিধানিক অধিকার উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, নির্বাচনের সময় এসেছে এবং জনগণ ভোট দেবে। জনগণ ভোট দিয়ে যে দলকে নির্বাচিত করবে, সেই দলই সরকার গঠন করবে। তিনি বলেন, তারা (বিএনপি-জামায়াত) জনগণের ওপর আস্থা রাখতে ব্যর্থ হয়ে হামলা চালাচ্ছে।
নির্বাচনের জন্য সবার দরজা খোলা জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, পেছনের দরজা দিয়ে ক্ষমতায় বসার আর কোনো সুযোগ নেই। গণতান্ত্রিক ধারার মধ্যে দিয়ে দেশ এগিয়ে যাবে। সাধারণ মানুষকে বললে তারাই বলবে, তারা কাকে পছন্দ করে। তারা বলবে আওয়ামী লীগকে পছন্দ করে। এবারের নির্বাচনী ইশতেহারের মূল লক্ষ্য থাকবে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার, জানান শেখ হাসিনা। যুব সমাজের প্রতি ইঙ্গিত করে শেখ হাসিনা বলেন, তার সরকার ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়ন করছে। এখন সবাই এর সুফল পাচ্ছে। এখন তার সরকার আগামীতে দেশকে স্মার্ট বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তোলার প্রচেষ্টায় রয়েছে। তিনি বলেন, আমরা আশা করি, আমরা তাদের (তরুণদের) সহযোগিতা নিয়ে এটি করতে পারব।
গত ১৪ বছরে দেশে বড় একটা ইতিবাচক পরিবর্তন করা সম্ভব হয়েছে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকলে জনপ্রিয়তা ধরে রাখা কঠিন। কিন্তু আওয়ামী লীগ সেই জনপ্রিয়তা ধরে রাখতে পেরেছে। মানুষের অধিকার নিশ্চিত করেছে বলে, আওয়ামী লীগের ওপর মানুষের আস্থা রয়েছে। আর জনগণের ওপর আস্থা রাখতে না পেরে বিএনপি-জামায়াত হামলা চালাচ্ছে। ভোট চুরি করে ক্ষমতায় এলে মানুষ তাদের ক্ষমা করে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিএনপি এক কোটি ভুয়া ভোটার তৈরি করে ক্ষমতায় যাওয়ার চেষ্টা করেছিল। ’৭৫- এর পর হত্যাযজ্ঞের পাশাপাশি জনগণের ভোটের অধিকার কেড়ে নেয়া হয় সেনাশাসনের মাধ্যমে। কিন্তু জনগণের ভোটের অধিকার নিশ্চিত করার জন্য সবকিছুই করেছে আওয়ামী লীগ সরকার। কেননা, আমরা চেয়েছি ভোটের মাধ্যমেই দেশে ক্ষমতার বদল ঘটুক। অস্ত্র হাতে নয়, রাতের অন্ধকারে নয়, ভোটের মধ্য দিয়ে সরকার গঠন হবে বাংলাদেশে। আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, প্যালেস্টাইনের ওপর ইসরাইয়েল যা করছে, তার প্রতিবাদ করছে বাংলাদেশ। অতিবাম, অতিডান সবাই এখন এক হয়েছে আওয়ামী লীগকে ক্ষমতাচ্যুত করতে। আমাদের দোষটা কোথায়? যারা অগ্নিসন্ত্রাস করছে তাদের কোনো ক্ষমা নেই জানিয়ে তিনি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, জনগণকে সেবা দেয় এমন কোনো প্রতিষ্ঠান বা স্থাপনায় হামলা করা হলে তা বরদাশত করা হবে না।
প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, গার্মেন্টস শ্রমিকদের ৫৬ শতাংশ বেতন বাড়ানোর পরও কেন কারখানা ভাঙচুর? অন্য সরকারগুলোতো তাদের বেতন বাড়ায়নি। শেখ হাসিনা বলেন, খালেদা জিয়ার চিকিৎসাকে বিএনপি ইস্যু হিসেবে দেখে। তার নিজের ছেলেই তো দেখতে এলো না একদিনও। ওদের দুর্নীতি-দুঃশাসন তো আন্তর্জাতিক পর্যায়েও সবার জানা। তিনি বলেন, পলাতক আসামি তারেক রহমানের হুকুমে যারা অগ্নিসন্ত্রাস করছে, তাদেরকে বলি, খালেদা-তারেক কেউই নির্বাচন করবে না। কিন্তু তাদের হুকুম মেনে যারা সন্ত্রাস করছে, তারা তো অভিশপ্ত হবেন। সাধারণ মানুষকে নির্যাতন করা বিএনপিকে মানুষ আস্থায় নেয় না। জনগণের ওপর হামলা চালানো বিএনপি সম্পর্কে সতর্ক থাকতে হবে দেশবাসীকে। এবার আর কোনো ছাড়াছাড়ি নেই। জনগণের ভোটের অধিকার নিয়ে যাতে কেউ ছিনিমিনি খেলতে পারে, সেই ব্যাপারে সজাগ থাকতে হবে সবাইকে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়