ডেঙ্গুতে কমেছে রোগী ও মৃতের সংখ্যা

আগের সংবাদ

দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচন ৭ জানুয়ারি : সব দলকে নির্বাচনে অংশ নেবার উদাত্ত আহ্বান > আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে কঠোরভাবে দায়িত্ব পালনের নির্দেশ

পরের সংবাদ

সবার নজর ইসির দিকে : জাতির উদ্দেশে সিইসির ভাষণ আজ সন্ধ্যায়, ঘোষণা করবেন ভোটের তফসিল

প্রকাশিত: নভেম্বর ১৫, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ১৫, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : সব জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে আজ বুধবার আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করতে যাচ্ছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। সন্ধ্যা ৭টায় প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেবেন বলে ইসি সূত্রে জানা গেছে। এ উপলক্ষে ইসিতে কমিশনার, সচিবসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের দৌড়ঝাঁপ যেমন বেড়েছে; তেমনি বাড়ানো হয়েছে নিরাপত্তাও। চলছে বৈঠকের পর বৈঠক। একজন নির্বাচন কমিশনার নাম না প্রকাশ করার শর্তে জানান, বুধবার বিকালে নির্বাচন কমিশনের বৈঠকের পর সন্ধ্যা ৭টার দিকে বাংলাদেশ টেলিভিশনে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের ভাষণ সরাসরি সম্প্রচার করা হবে। সাধারণত জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগে বৈঠক করে নির্বাচন কমিশন। এরপর বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বেতারে প্রচারের জন্য প্রধান নির্বাচন কমিশনারের ভাষণ রেকর্ড করা হয়। সন্ধ্যায় ওই ভাষণ প্রচার করা হয়। ওই ভাষণেই মূলত তফসিল ঘোষণা করা হয়।
সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল তার ভাষণে সংবিধানের আলোকে গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত রাখতে সব নিবন্ধিত দলকে আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে অংশ নেয়ার আহ্বান জানানোর পাশাপাশি ভোটারদের প্রতি নির্ভয়ে পছন্দমতো প্রার্থীকে ভোটাধিকার প্রয়োগ করে গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত রাখার কথা বলবেন। একইসঙ্গে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও ভোট কর্মীরা যাতে নিজ নিজ দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করে এই ভোটানুষ্ঠানকে সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য করে তুলেন তার জন্য নির্দেশনা দেবেন। তিনি দেশবাসীকে উৎসবমুখর পরিবেশে ভোটানুষ্ঠান করতে ইসিকে সহায়তার আহ্বানও জানাবেন। তফসিল ঘোষণায় তিনি ভোটের দিনক্ষণ সবিস্তারে তুলে ধরবেন।
তফসিলে বিষয়ে গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে ইসি সচিব মো. জাহাংগীর আলম সাংবাদিকদের বলেন, আমি আগেই বলেছি- নভেম্বরের প্রথমার্ধেই তফসিল ঘোষণা করা হবে। আমি আগামীকাল (আজ বুধবার) সকাল ১০টায় আপনাদের চায়ের আমন্ত্রণ জানাচ্ছি, সেখানে তফসিলের বিষয়ে বিস্তারিত অবগত করব। এরপর বিকালে কমিশন বৈঠক আছে। তারপর সন্ধ্যায় সিইসি জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেবেন। নির্বাচন কবে- এমন প্রশ্নের জবাবে ইসি সচিব বলেন, আগামী জানুয়ারির প্রথমার্ধে দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে সিইসি আগেই ঘোষণা করেছেন।
এদিকে বর্তমান সরকারের পদত্যাগ এবং নিরপেক্ষ নির্বাচনকালীন সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে বিএনপিসহ সমমনা দলগুলো দেশজুড়ে হরতাল, অবরোধ, গাড়িতে অগ্নিসংযোগ করেই চলেছে। কোনো রাজনৈতিক সমঝোতা ছাড়াই তফসিল ঘোষণা করা হলে ইসি ঘেরাও কর্মসূচি দিয়েছে ছোট কয়েকটি দল। এসবের মধ্যে দ্বাদশ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা এক বিশেষ মাত্রা পাচ্ছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন। এদিকে তফসিল ঘোষণাকে কেন্দ্র করে নির্বাচন ভবনে বাড়তি নিরাপত্তা পরিলক্ষিত হয়েছে। নির্বাচন ভবনের আশপাশে গাড়ি পার্ক করতে দেয়া হচ্ছে না। ইসিতে প্রবেশে কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে। কার্ডধারী সাংবাদিক ছাড়া কাউকে ইসি ভবনে প্রবেশ করতে দিচ্ছে না নিরাপত্তা রক্ষীরা। আজ বুধবার থেকে ইসি ভবন নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে ফেলা হবে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।
আবার যুক্তরাষ্ট্রের সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডনাল্ড লুর সংলাপের চিঠি নিয়ে নির্বাচন কমিশন ‘ভাবছে না’ বলে জানিয়েছেন কমিশন সচিব মো. জাহাংগীর আলম। তিনি বলেন, নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার ক্ষেত্রে এর কোনো প্রভাব পড়বে না। নির্বাচন ঘিরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতা নিয়ে এক প্রশ্নে ইসি সচিব বলেন, সে ধরনের কোনো হুমকি নেই। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারীর সঙ্গে যে সভা করা হয়েছে, তাতে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। তারা সবকিছু দেখবে। তিনি বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাজ। তারাই দেখবে। কমিশন ইতোমধ্যে সংশ্লিষ্টদের জানিয়েছে।
এদিকে গত ১ নভেম্বর থেকে দ্বাদশ নির্বাচনের ক্ষণগণনা শুরু হয়েছে। সংবিধানের নিয়ম অনুযায়ী, গত ১ নভেম্বর থেকে ২০২৪ সালের ২৯ জানুয়ারির মধ্যে এ নির্বাচন শেষ করতে হবে নির্বাচন কমিশনকে। এরই মধ্যে সব ধরনের আনুষ্ঠানিকতা সেরে ফেলেছে ইসি। প্রথানুযায়ী গত ৯ নভেম্বর রাষ্ট্রপতির সঙ্গে দেখা করে নির্বাচনের প্রস্তুতি সম্পর্কে তাকে অবহিত করেছেন সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়ালসহ অন্য চার কমিশনার। এ সময় রাষ্ট্রপতি তাদের সংবিধান অনুযায়ী ভোট আয়োজনের ব্যবস্থা করতে পরামর্শ দেন। এর আগে সংবিধান প্রদত্ত ক্ষমতা, অর্থাৎ নির্বাচনী আইন-কানুন, প্রয়োগ ও সর্বোচ্চ ব্যবহার নিয়ে প্রধান বিচারপতির সঙ্গে দেখা করে আলোচনা করেছেন সিইসি ও অন্য চার কমিশনার। এদিকে নির্বাচনের সব ধরনের প্রস্তুতি সেরে ফেলেছে ইসি। এ বিষয়ে ইসির অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ জানান, দ্বাদশ নির্বাচনের জন্য সম্পূর্ণ প্রস্তুত কমিশন। সব ধরনের প্রস্তুতি শেষ করে ফেলেছে। নির্বাচন সংক্রান্ত সব ধরনের কেনাকাটা এমনকি প্রশিক্ষণও শেষ হয়েছে। ইতোমধ্যে মাঠে চলে গেছে নির্বাচনী সরঞ্জাম। গত ৩ ও ৪ নভেম্বর সিনিয়র জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে।
ইসির নির্বাচনী শাখা জানিয়েছে, সাধারণত তফসিল ঘোষণা পর ন্যূনতম ৪৫ দিন পরে ভোটগ্রহণ করা হয়ে থাকে। এবারও ১৫ নভেম্বর তফসিল ঘোষণার পর প্রার্থীদের মনোনয়ন জমা দেয়ার সময়সীমা থাকবে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত। মনোনয়ন যাচাই-বাছাই ১ ও ২ ডিসেম্বর, প্রত্যাহার ৩ ডিসেম্বর এবং
৭ জানুয়ারি ভোটগ্রহণ করা হতে পারে বলে ইসির একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়