চরমোনাই পীর : দেশ ভয়াবহ সংঘাতের মুখে নিপতিত

আগের সংবাদ

৩০ বছরেও শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছেনি থানচির দুর্গম অঞ্চলে

পরের সংবাদ

বিশ্বকাপে দুই মাসকট ব্লেজ ও টঙ্ক

প্রকাশিত: অক্টোবর ১, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: অক্টোবর ১, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ ডেস্ক : বিশ্বকাপ মাঠে গড়াতে বাকি আর মাত্র ৪ দিন। এর মধ্যেই গতকাল ভারতের মাটিতে অনুষ্ঠিতব্য এই বৈশ্বিক টুর্নামেন্টের মাসকটের নাম ঘোষণা করেছে বিশ্ব ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইসিসি। লিঙ্গ সমতাকে তুলে ধরতে বিশ্বকাপে দুই মাসকট উন্মোচন করে আইসিসি। উন্মোচিত লাল পোশাক পরা মাসকটটি ছিল নারী আর নীল পোশাকেরটা পুরুষ। ক্রিকেট ভক্তদের কাছে নেয়া এক ভোটাভুটির পর গতকাল তাদের নাম প্রকাশ করা হয়। ক্রিকেটপ্রেমীদের ভোটে যে দুটি নাম নির্বাচিত হয়েছে, সেগুলো হলো ব্লেজ ও টঙ্ক। আগামী ৫ অক্টোবর আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামে গতবারের দুই ফাইনালিস্ট ইংল্যান্ড বনাম নিউজিল্যান্ডের ম্যাচ দিয়ে মাঠে গড়াবে এবারের বিশ্বকাপের মূল আসর।
বিশ্ব ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থা কাজটা এবারের বিশ্বকাপে মাসকটের নাম নির্ধারণের কাজটা সমর্থকদের ওপর ছেড়ে দেয়। এর জন্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও আইসিসির অফিশিয়াল ওয়েবসাইটে ভোটাভুটির আয়োজন করে। আইসিসি ইভেন্টের প্রধান ক্রিস টেটলি এই ব্যাপারে জানান, ক্রিকেটপ্রেমীরা যে দুটি নাম প্রস্তাব করবে তার ভিত্তিতেই মাসকটের নাম চূড়ান্ত করা হবে। বিশ্বকাপ শুরুর মাত্র তিন দিন আগে সেই নাম দুটি প্রকাশ করেছে আইসিসি। গতকাল নিজেদের ওয়েবসাইটে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে আইসিসি। ব্লেজ হলো নারী মাসকট, যে দ্রুতগতিতে বোলিং করে ব্যাটসম্যানদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে দিতে পারে। তার নির্ভুলতা, অতুলনীয় প্রতিফলন, সীমাহীন নমনীয়তা ও দৃঢ় সংকল্পের কারণে সে একজন ফাস্ট বোলিং সেনসেশন। ব্লেজ লাল রঙের পোশাকের সঙ্গে কোমরে একটি বেল্ট বেঁধেছে, যেটার সঙ্গে ছয়টি ক্রিকেট বলের মতো ক্ষমতাসম্পন্ন গোলাকার বস্তু রয়েছে। প্রতিটিই খেলার কৌশল পরিবর্তনের জন্য ব্যবহার করা হয়। অন্যদিকে টঙ্ক হলো পুরুষ মাসকট। নীল পোশাক পরা হিমশীতল স্বভাবের টঙ্ক একজন চ্যাম্পিয়ন ব্যাটসম্যান। সে এক ধরনের তড়িৎ চুম্বকীয় ব্যাট দিয়ে ক্রিকেট খেলে। এই ব্যাট দিয়ে সে সব ধরনের শট খেলতে পারে। তার একেকটা শট চমকে দেয়ার মতো। তার দর্শনীয় ব্যাটিং দর্শকদের আনন্দের উপলক্ষ এনে দেয় এবং ক্রিকেটের সর্বৃবহৎ মঞ্চকে আলোকিত করে। ব্লেজ ও টঙ্ককে বিশ্বকাপের সব ভেন্যুতেই দেখা যাবে। এছাড়া বিশ্বকাপের উন্মাদনা বাড়াতে নির্মিত ফ্যানস পার্কগুলোয়ও থাকবে তারা। মাসকট দুটি দর্শক-সমর্থকদের সঙ্গে মিশে গিয়ে তাদের আরো উজ্জীবিত করবে। ক্রিস টেটলি আগেই বলেছিলেন, ‘একতা ও আবেগের আলোকবর্তিকা হিসেবে মাসকট দুটি সীমানা ও সংস্কৃতি ছাড়িয়ে যাওয়া ক্রিকেটের আবেদনকে নির্দেশ করবে। উভয় লিঙ্গের প্রতিনিধিত্বের মাধ্যমে গতিশীল বিশ্বে লিঙ্গ সমতার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকাকে প্রতিফলিত করবে।’ আইসিসির বিভিন্ন মাধ্যমে ব্লেজ ও টঙ্ক লিঙ্গ সমতা ও ক্রিকেটের বিশ্বায়নের দিকগুলোকেই প্রতিফলিত করেছে।
ফুটবল বিশ্বকাপে ১৯৬৬ সাল থেকে চালু হয়েছে মাসকটের প্রচলন। এখন পর্যন্ত অনুষ্ঠিত ফিফা বিশ্বকাপের একুশ আসরের মধ্যে মাসকট ব্যবহৃত হয়েছে চৌদ্দ আসরে। তবে ওয়ানডে বিশ্বকাপের ১২টি আসর অনুষ্ঠিত হলেও মাসকট ব্যবহৃত হয়েছে মাত্র তিন আসরে। ইংল্যান্ড ও ওয়েলসে আয়োজিত সর্বশেষ বিশ্বকাপেও ছিল না কোনো মাসকট। আইসিসি বিশ্বকাপে সর্বপ্রথম মাসকট প্রচলন হয় ২০০৩ সালে। সেবার বিশ্বকাপ বসেছিল আফ্রিকার তিন দেশ- দক্ষিণ আফ্রিকা, কেনিয়া এবং জিম্বাবুয়েতে। ওই আসরে মাসকটের নাম ছিল ড্যাজল। ২০০২ সালের সেপ্টেম্বর মাসে জেব্রা আকৃতির এ মাসকট উন্মোচন করে দক্ষিণ আফ্রিকা। এরপর ২০০৭ সালের আসরেও মাস্কটের ব্যবহার হয়েছিল। সেবার বিশ্বকাপ আয়োজিত হয় ক্যারিবিয়ান সাগরের দ্বীপপুঞ্জ ওয়েস্ট ইন্ডিজে। ওই টুর্নামেন্টের মাসকটের নাম ছিল মেলো।
এটি ছিল কমলা রঙের কুকুর সদৃশ একটি প্রাণীর প্রতিচ্ছবি। সেবার শ্রীলঙ্কাকে ৫৩ রানে হারিয়ে শিরোপা জিতেছিল অস্ট্রেলিয়া। ২০১১ সালের বিশ্বকাপে টানা তৃতীয়বারের ক্রিকেটের বড় মঞ্চে মাসকট ব্যবহৃত হয়। এ আসরটি বসেছিল ভারত, বাংলাদেশ এবং শ্রীলঙ্কায়। এ আসরের মাসকটের নাম ছিল স্টাম্পি, যা ছিল একটি তরুণ হাতির প্রতিচ্ছবি। ২০১০ সালের ২ এপ্রিল শ্রীলঙ্কার কলম্বোয় এটি সর্বপ্রথম প্রদর্শন করা হয়। তবে তখনো এর নাম ঠিক করা হয়নি। একই বছরের আগস্ট মাসে আইসিসির উদ্যোগে অনলাইন ভোটাভুটির মাধ্যমে এর নাম ঠিক করা হয়েছিল। এই মাস্কটের জন্য ধারণা নেয়া হয়েছিল মূলত ১৯৮২ সালে নয়াদিল্লিতে এশিয়ান গেমসের মাস্কট থেকে। ওই আসরের মাস্কট হিসেবে হাতির প্রতিচ্ছবি ব্যবহার করা হয়েছিল, যা দ্বারা বোঝানো হয়েছিল ক্রিকেটের উৎসাহ-উদ্দীপনাকে। এরপর যৌথভাবে অস্ট্রেলিয়া এবং নিউজিল্যান্ডে বিশ্বকাপে ও ২০১৯ এ ইংল্যান্ড ও ওয়েলসে আয়োজিত সর্বশেষ ওয়ানডে বিশ্বকাপেও ছিল না কোনো মাসকট। তবে এবারের বিশ্বকাপে লিঙ্গ সমতার মতো বিষয়গুলোকে প্রাধান্য দেয়া ব্লেজ ও টঙ্ক মাসকট বিশ্বকাপে মাঠের বাইরে দর্শকদের উৎসাহের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়