ডেঙ্গু পরিস্থিতি : ১৫ দিনে মৃত্যু হয়েছে ১৯৭ জনের

আগের সংবাদ

চিকিৎসার নামে লোক ঠকানো : অবৈধ ক্লিনিকের বিরুদ্ধে অভিযান আজ থেকে > অব্যাহত রাখলে জনগণ উপকৃত হবে

পরের সংবাদ

সতর্ক থেকেই ভোটের মাঠে আওয়ামী লীগ

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৭, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: সেপ্টেম্বর ১৭, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

ঝর্ণা মনি : দরজায় কড়া নাড়ছে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। নির্বাচন ঘিরে বেড়েই চলেছে রাজনৈতিক উত্তাপ। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন করার দাবিতে রাজপথে আন্দোলন করছে বিএনপি ও সমমনা দলগুলো। সেই সঙ্গে আছে বৈদেশিক চাপ ও ভূ-রাজনৈতিক পরিস্থিতি। এই প্রেক্ষাপটেই নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। তাদের দৃষ্টি এখন ভোটের মাঠে। সরকারের টানা পনের বছরের উন্নয়ন-সাফল্য তুলে ধরে নৌকার বিজয় নিশ্চিত করতে তৎপর দলের কেন্দ্র থেকে তৃণমূল। যদিও ‘বিএনপি-জামায়াতের ষড়যন্ত্র’ রুখতে সতর্ক থেকে ভোটের মাঠ গোছানোকেই অগ্রাধিকার দিচ্ছে দলটি।
আওয়ামী লীগের একাধিক নেতাকর্মী জানিয়েছেন, আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সংবিধান অনুযায়ী যথাসময়ে অনুষ্ঠিত হবে। সরকারের পদত্যাগ ও নির্বাচনকালীন সরকারের দাবি মানার সুযোগ নেই। আর এ লক্ষ্যে ভোটের প্রস্তুতির পাশাপাশি রাজপথে বিএনপির আন্দোলন মোকাবিলায় প্রস্তুতিও রয়েছে তাদের। বিরোধী রাজনৈতিক জোটগুলোর আন্দোলন মোকাবিলা করার পাশাপাশি ভোটের প্রস্তুতি নিতে দলের নেতাকর্মীরা কাজ শুরু করেছে। এছাড়া আন্দোলন করলেও শেষ পর্যন্ত বিএনপিসহ নিবন্ধিত সব রাজনৈতিক দল নির্বাচনে অংশ নেবে বলেও আশা প্রকাশ করছেন তারা।
স্থানীয় সরকার দিবস উপলক্ষে গত বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে তৃণমূলের জনপ্রতিনিধিদের মিলনমেলায় নির্বাচন পর্যন্ত ভোটের মাঠে থাকার প্রতিশ্রæতি ব্যক্ত করেছেন নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা। টানা ১৫ বছর আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে সারাদেশে যে উন্নয়ন হয়েছে তা তুলে ধরার অঙ্গীকারও করেন তারা। নৌকায় ভোট দেয়ার জন্য জনগণকে উদ্বুদ্ধ করার পাশাপাশি নিজ এলাকায় শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখতে বিএনপি ও জামায়াতের যে কোনো সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড রুখে দেয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন জনপ্রতিনিধিরা। ওই অনুষ্ঠানে দেশের মানুষ যাতে ভোট দিতে পারে সেই পরিবেশ নিশ্চিত করার জন্য জনপ্রতিনিধিদের প্রতি আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের মতে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পরিষ্কার বার্তা সবার কাছে পৌঁছে গেছে। জনপ্রতিনিধিরা এলাকায় ফিরে গেছেন। উন্নয়ন-সাফল্য তুলে ধরে ভোটের প্রস্তুতি শুরু হয়ে গেছে। এছাড়া সংসদ অধিবেশন শেষ। সংসদ সদস্যরাও এখন নিজ এলাকায় জনগণের সঙ্গে সময় কাটাচ্ছেন। দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কর্নেল (অব.) ফারুক খান ভোরের কাগজকে বলেন, আওয়ামী লীগের টানা ১৫ বছরের শাসনামলে বদলে গেছে বাংলাদেশ। পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে দেশের চেহারা পাল্টে দিয়েছে। অর্থনৈতিক উন্নয়নে বাংলাদেশ বিশ্বে রোলমডেল। গ্রামে গ্রামে বিদ্যুতের আলো। শিক্ষা-স্বাস্থ্য, গড় আয়ু বেড়েছে। এসব উন্নয়ন বার্তা জনগণের কাছে তুলে ধরতে হবে।
দলটির নেতারা বলছেন, বিএনপিসহ সব বিরোধী দলের কর্মকাণ্ড অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। বিএনপিকে কখনোই মাঠ ছেড়ে দেয়া হবে না। তারা যখন যে কর্মসূচি দেয় তার বিপরীতে আওয়ামী লীগও নিজেদের মতো কর্মসূচি দিয়ে মাঠে থাকবে। রাজপথ যেন বিএনপি কোনোভাবেই দখল না পায়, সেই বিষয়টি আওয়ামী লীগের নেতাদের নজরে রয়েছে এবং সমান্তরাল কর্মসূচির মাধ্যমে মাঠে থাকবে ক্ষমতাসীনরাও। এছাড়া মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমাদের নিষেধাজ্ঞা, আপত্তি এবং নজরদারির মতো বাধা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার ব্যক্তিগত কূটনীতি দিয়ে অতিক্রম করেছেন বলেই এখন সুস্পষ্টভাবে প্রতীয়মান হচ্ছে। আসন্ন জাতিসংঘ সম্মেলনেও বিশেষ কূটনৈতিক মিশন রয়েছে ঢাকার। সব মিলিয়ে বিএনপির আস্ফালন আমলে নেয়ার মতো কিছু নেই বলে মনে করছেন তারা। তবে বিএনপির এক দফা আন্দোলন কর্মসূচি যাতে সহিংসতায় রূপ না নেয়, সেই বিষয়টিও খেয়াল রাখবে আওয়ামী লীগ। গণতান্ত্রিক পন্থায় শান্তির কর্মসূচি দেবে আওয়ামী লীগ। সেই সঙ্গে জগণের জানমাল রক্ষায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকেও নির্দেশনা দেয়া হয়েছে, যাতে বিএনপি-জামায়াত কোনো ক্ষতি করতে না পারে।
আওয়ামী লীগের সভপতিমণ্ডলীর সদস্য, কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, আওয়ামী লীগকে আন্দোলনের ভয় দেখিয়ে লাভ নেই। আওয়ামী লীগ ভয় পায় না। যে কোনো আঘাতের বিরুদ্ধে অতীতে যেভাবে মোকাবিলা করেছি, আগামী দিনেও মোকাবিলা করব।
নেতারা বলছেন, রাজনীতির মাঠে বছরজুড়েই সক্রিয় আওয়ামী লীগ। নির্বাচন, সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড ও বিএনপিকে মোকাবিলায় ব্যস্ত ছিলেন নেতাকর্মীরা। এছাড়া বিএনপির হুমকি মোকাবিলায় রাজপথেও সক্রিয় ছিল ক্ষমতাসীন দলটি। নতুন করে সহিংসতার পাঁয়তারা করলে হার্ডলাইনে যাওয়া ছাড়া কোনো উপায় থাকবে না। রাজপথে থেকেই তাদের সন্ত্রাসের জবাব দেয়া হবে। দলের সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন বলেন, বিএনপির কিসের এক দফা। তারা কি শেখ হাসিনার পদত্যাগ চায়? শেখ হাসিনার পদত্যাগ চেয়ে মাঠে নামলে জনগণ বসে থাকবে না। আর তারা যদি এক দফার নামে কোনো সন্ত্রাস করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মোকাবিলা করবে।
এদিকে দলীয়প্রধান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বার্তা পেয়ে উন্নয়ন তুলে ধরতে জনগণের কাছে যাচ্ছেন জনপ্রতিনিধিরা। সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলা চেয়ারম্যান করুনা সিন্ধু চৌধুরী বাবুল ভোরের কাগজকে বলেন, স্থানীয় সরকার দিবসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে পুনরায় প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নির্বাচিত করার অঙ্গীকার করেছেন জনপ্রতিনিধিরা। সেই সঙ্গে ১৫ বছরের উন্নয়ন তুলে ধরার প্রতিশ্রæতি করা হয়েছে। আমরা সরকারের উন্নয়ন-সাফল্যের কথা তুলে ধরে আগামী নির্বাচনে নৌকার জন্য ভোট চাইব।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়