খাগড়াছড়িতে পাহাড় ধসে যান চলাচল ব্যাহত

আগের সংবাদ

ব্রিকসের সদস্যপদ পাওয়ার চিন্তা ছিল না, চেষ্টাও করিনি : সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

পরের সংবাদ

শিশুর সুরক্ষায় যত্নশীল হোন

প্রকাশিত: আগস্ট ২৯, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: আগস্ট ২৯, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

দেশের জনসংখ্যার প্রায় ৬ কোটি শিশু অর্থাৎ দেশের জনসংখ্যার ৪০ শতাংশ শিশু। অথচ তারা প্রতিদিন প্রতি মুহূর্ত ভয়ানক অত্যাচার, নির্যাতন, হত্যা, ধর্ষণের শিকার। দেশে শিশু নির্যাতন, হত্যা, ধর্ষণ আশঙ্কাজনক হারে বেড়েই চলেছে। সব ধর্মেই বলা আছে- শিশু পবিত্র, নিষ্পাপ; কিন্তু এই পবিত্র নিষ্পাপ, সতেজ, কোমলমতি ও পবিত্র প্রাণগুলো একের পর এক নিষ্ঠুরভাবে নির্যাতন, হত্যা, ধর্ষণের ঘটনা সচেতন জাতিকে ভাবিয়ে তুলছে। প্রচলিত রীতিনীতি, আচার-আচরণ, আইন-কানুন ও মূল্যবোধের গণহত্যাকারী এক চরম অমানবিক চিত্র। এর থেকে পরিত্রাণের পথ কি আমাদের খোলা নেই। কুঁড়ে কুঁড়ে সমাজ সংসারের সৌন্দর্যকে ছিঁড়ে চৌচির করে ফেলছে। কেবল সমাজের নিম্নবিত্তদের মধ্যেই এসব ঘটনা সীমাবদ্ধ, তা কিন্তু নয়। সমাজের সর্বস্তরে এই নির্যাতনের ঘটনা ঘটছে। সবচেয়ে দুঃখজনক যে শিশু নির্যাতনের সঙ্গে এমপি, রাজনীতিবিদ, নাম করা খেলোয়াড় এবং ব্যবসায়ীরাও জড়িত। বলা যায়, শিশু ধর্ষণ ও নির্যাতন সামাজিক অবক্ষয়ের ফসল।
দেশে শিশু নির্যাতন, ধর্ষণ ও হত্যার হার মারাত্মক বেড়েছে, শিশু অধিকার নিয়ে কর্মরত সংগঠনগুলোর পরিসংখ্যান থেকে জানা যায়। পরিসংখ্যান বলছে, পারিবারিক কলহ, সম্পত্তি নিয়ে বিরোধ, ব্যক্তিগত লোভ-লালসা, চরিত্রার্থ, স্বার্থ আদায়ের জন্য শিশুদের টার্গেট করা হয়। বড়দের লোভ-লালসা প্রতিহিংসার শিকার হচ্ছে শিশুরা। শিশুদের অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায় করা এবং টাকা না পেলে প্রায় তাদের নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করা হয়। মা-বাবার ওপর প্রতিশোধ নিতে যৌন নিপীড়ন মুক্তিপণ জমিসংক্রান্ত বিরোধ এমনকি তুচ্ছ মোবাইল চুরি বা মাছ ধরার মতো অপবাদ দিয়েও শিশুদের হত্যা করা হচ্ছে। মেয়ে শিশুদের ধর্ষণের পর হত্যা করা হচ্ছে নির্মমভাবে। থেমে নেই গৃহকর্মী নির্যাতন ও হত্যার মতো ঘটনা।
এসব পরিসংখ্যান জরিপ সাধারণ মানুষকে ভাবিয়ে তুলছে। মনে হয় দেশে মানুষের মনুষ্যত্বের অপমৃত্যু হচ্ছে। মানুষের বিবেক বোধ হারিয়ে যাচ্ছে। মানুষগুলো কেমন যেন দয়ামায়াহীন হয়ে পড়ছে, নিষ্ঠুর হয়ে যাচ্ছে। কিছু কিছু মানুষ আজ জন্তু জানোয়ারের মতো হয়ে গেছে, তাদের শিকার এখন শিশু। দেশে এমন ঘটনা ঘটেছে বা ঘটছে, যা আদিম বর্বরতাকেও হার মানায়। মনে হয় আজ সমাজের মূল্যবোধের অবক্ষয় হতে হতে তলানিতে চলে এসেছে। আজ যেন ঘুমন্ত সব রাজনৈতিক নেতারা। গণমাধ্যমে পত্রিকায় শিশুদের নিয়ে কিছু পরিসংখ্যান তুলে ধরলেই কিছু সময়ের জন্য জাগ্রত হয়ে নড়েচড়ে আবার ঘুমিয়ে যান। আজ আমাদের দেশে কেমন যেন অস্থিরতা বিরাজ করছে। আস্থাহীন হচ্ছেন সাধারণ জনগণ প্রশাসনের ওপর। অপরাধী মনে করেন কিছুই হবে না আমার। আমি অনেক টাকার মালিক, বড় সাহেবদের সঙ্গে আমার বন্ধুত্ব ভালো। আমি দল করি ইত্যাদি। শিশু হত্যা ধর্ষণ নির্যাতন নির্মূল করা সরকারের একার পক্ষে সম্ভব না। সব দায়িত্ব কেনইবা সরকার নেবে, আমাদের কি কোনো দায়িত্ব নেই। এসব রোধে, এসব নিষ্ঠুর ঘটনাগুলো বন্ধ করতে জনসচেতনতাই মানুষের বিবেকের আদালতই যথেষ্ট। আমার মতে, সামাজিক ও নৈতিক অবক্ষয়ই এই সর্বহীন অপকর্মের মূল কারণ। ধর্মীয় নৈতিকতাপূর্ণ বিকাশই পারে এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণ দিতে। সত্যিকার্থে এসব অন্যায়ের বিরুদ্ধে আমাদের রুখে দাঁড়াতে হবে। সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। কেবল আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর দায়িত্ব চেপে দিলেই হবে না। সরকারের ওপর দায়িত্ব চেপে দিলেই হবে না। সবার সম্মিলিত চেষ্টায় এর প্রতিকার করতে হবে। উদ্ঘাটন করতে হবে কেন শিশুরা একের পর এক ধর্ষণ হত্যার শিকার হচ্ছে এবং সে অনুযায়ী দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে প্রশাসনকে। পরিশেষে বলতে চাই, শিশু নির্যাতন ধর্ষণ হত্যার মতো জঘন্য ঘটনা যে কোনো উপায়ে প্রতিরোধ করতেই হবে। এসব ঘটনা প্রতিরোধে জনসচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে। নৈতিকতার শিক্ষাসহ সর্বস্তরের জনমত গড়ে তুলতে হবে।

শিক্ষার্থী, ফুলছড়ি সরকারি কলেজ, গাইবান্ধা।
সফংযধসরসসরধ১২০৯১৯৯৬@মসধরষ.পড়স

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়