রাজধানীতে পৃথক ঘটনায় দুজনের অস্বাভাবিক মৃত্যু

আগের সংবাদ

সিসিক মেয়রের প্রতি প্রধানমন্ত্রী : মেয়র নয়, সেবক হিসেবে কাজ কর

পরের সংবাদ

ট্রেনে বাড়ি ফেরা শুরু ভিড় নেই কমলাপুরে : স্ট্যান্ডিং টিকেটের জন্য লাইন

প্রকাশিত: জুন ২৫, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ২৫, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : ঈদুল আজহা উপলক্ষে নাড়ির টানে বাড়ি ফেরা মানুষের জন্য রেলের ঈদযাত্রা শুরু হলো গতকাল শনিবার। অনলাইনে সব টিকেট বিক্রি হওয়ার কমলাপুরে যাত্রীদের দীর্ঘলাইন নেই। শুধু ২৫ শতাংশ স্ট্যান্ডিং টিকেটের জন্য বেশকিছু মানুষকে লাইনে দাঁড়াতে দেখা গেছে। সব মিলিয়ে অনলাইনে টিকেট বিক্রি হওয়ায় চিরাচরিত ভোগান্তির দৃশ্য নেই কমলাপুরে। যাত্রীরাও খুশি। এবার ট্রেনে নির্বিঘেœ বাড়ি যাচ্ছেন নগরবাসী।
এর আগে, গত ১৪ জুন ঈদ উপলক্ষে চলাচলকারী ট্রেনগুলোর অগ্রিম টিকেট শতভাগ অনলাইনে বিক্রি শুরু হয়। ওইদিন বিক্রি করা হয় ২৪ জুনের টিকেট। এভাবে ১৫ জুন, ২৫ জুনের, ১৬ জুন ২৬ জুনের টিকেট, ১৭ জুন ২৭ জুনের টিকেট এবং ১৮ জুন ২৮ জুনের টিকেট বিক্রি করা হয়।
ঈদযাত্রার প্রথম দিন গতকাল শনিবার থেকে ঈদের ট্রেন বিভিন্ন গন্তব্যে যাত্রী পরিবহন শুরু করে। যাত্রা নির্বিঘœ করতে নেয়া হয়েছে ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা, বাঁশের বেড়ার মধ্য দিয়ে যাত্রীদের টিকেট চেকিং করে প্ল্যাটফর্মে

প্রবেশ করতে দেয়া হচ্ছে। টিকেটের সঙ্গে কোনো কোনো সময় যাত্রীর জাতীয় পরিচয়ত্র (এনআইডি) ও মোবাইল নম্বর মিলিয়ে দেখা হয়।
দিনের প্রথমে আন্তঃনগর ট্রেন ধূমকেতু এক্সপ্রেসের মাধ্যমে ঈদযাত্রা শুরু হয়। সকাল ৬টা থেকে পর পর সুন্দরবন, উপবনসহ বেশ কিছু ট্রেন ছেড়ে যায়। নির্বিঘেœ সিটে বসে যাত্রা করতে পেরে রেলওয়ের এ ব্যবস্থাপনাকে স্বাগত জানিয়েছেন যাত্রীরা। আবার স্টেশনে টিকেটের জন্য হন্যে হয়ে ঘোরা কয়েকজন গার্মেন্টস কর্মী সব টিকেট অনলাইনে বিক্রি করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তারা বলেন, সবার স্মার্ট ফোন না থাকায় এবং কয়েক মিনিটের মধ্যে সব টিকেট বিক্রি হওয়ায় তারা টিকেট কাটতে পারেননি। শেষ মুহূর্তে অনেকে স্টান্ডিং টিকেটের জন্য লাইনে দাড়িয়েছেন। তারা ট্রেনের বগি বাড়ানোর দাবিও আহ্বান জানান।
গত ৩০ মে রেলপথমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজনের দেয়া তথ্যানুযায়ী, ২৪ জুন শুরু হয়ে ২৮ জুন পর্যন্ত ঈদ সার্ভিস চলবে। একইভাবে ঈদের ফিরতি ট্রেনের সার্ভিস শুরু হবে ১ ?জুলাই চলবে ৬ জুলাই পর্যন্ত।
চলবে বিশেষ ট্রেন : রেলের কর্মপরিকল্পনা অনুযায়ী, ২৬ জুন থেকে ঈদের আগের দিন পর্যন্ত এবং ঈদের পরদিন থেকে পাঁচদিন চাঁদপুর-চট্টগ্রাম ২ জোড়া, ঢাকা-দেওয়ানগঞ্জ ১ জোড়া, চট্টগ্রাম – ময়মনসিংহ ১ জোড়া, ঢাকা পঞ্চগড় ১ জোড়া, ঢাকা- লালমনিরহাট ১ জোড়া এবং ঈদের দিন শোলাকিয়া ঈদ স্পেশাল কিশোরগঞ্জ -ভৈরববাজার, ১ জোড়া এবং ময়মনসিংহ – কিশোরগঞ্জ ১ জোড়া, মোট ৭ জোড়া বিশেষ ট্রেন চলাচল করবে।
এছাড়া রাষ্ট্রপতির ঘোষণা অনুযায়ী ঢাকা- পাবনা এক্সপ্রেস ছাড়াও ঢাকা-চিলাহাটি এক্সপ্রেস নামে ২টি আন্তঃনগর ট্রেন চালু করেছে রেলওয়ে। তবে ঈদ উপলক্ষে গত ২৩ জুন থেকে ৩ জুলাই পর্যন্ত মৈত্রী ও বন্ধন ট্রেন দুটির যাত্রা স্থগিত করেছে রেলওয়ে।
চার কাউন্টারে স্ট্যান্ডিং টিকেট : ঈদযাত্রায় ঢাকা থেকে বিভিন্ন গন্তব্যে প্রতিদিন ৩২ হাজার আসনে যাত্রী পরিবহনের পরিকল্পনা রয়েছে রেলওয়ের। মোট আসনের ২৫ শতাংশ টিকেট দাঁড়িয়ে (স্ট্যান্ডিং টিকেট) যাওয়া যাত্রীদের কাছে বিক্রি করা হবে। স্ট্যান্ডিং টিকেট পাওয়া যাবে শুধু ঢাকার কমলাপুর, ক্যান্টনমেন্ট, বিমানবন্দর এবং গাজীপুরের জয়দেবপুর স্টেশনে। মাঝপথে বিরতি নেয় এমন কোনো স্টেশনে স্ট্যান্ডিং টিকেট পাওয়া যাবে না।
এদিকে বিনা টিকেটের যাত্রী ঠেকাতে ঢাকামুখী সবগুলো আন্তঃনগর ট্রেনের স্টপেজ বাতিল করা হয়েছে। কয়েকটি ট্রেনের যাত্রীদের কমলাপুর থেকে উঠতে বলা হয়েছে। ভীড় ও ছাদে ওঠা যাত্রী ঠেকাতে এসব ট্রেন বিমান বন্দর থামবে না।
কমলাপুর স্টেশন ম্যানেজার মাসুদ সারওয়ার বলেন, প্রতিদিন অর্ধশত ট্রেনে করে ৩২ হাজার মানুষ বাড়ি যেতে পারবেন। যুক্ত হচ্ছে অতিরিক্ত ইঞ্জিন ও বগি। আশা করি, ঈদে কোনো সমস্যা হবে না। সিডিউল বিপর্যয় ঘটবে না।
এদিকে রেলে, ঈদযাত্রায় স্পেশাল ট্রেন চালাতে ৬৫টি অতিরিক্ত বগি যুক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে পাহাড়তলী ওয়ার্কশপ থেকে ৪০টি মিটারগেজ ও সৈয়দপুর ওয়ার্কশপ থেকে ২৫টি ব্রডগেজ বগি রেল বহরে যুক্ত হয়েছে। এছাড়া ঈদকে কেন্দ্র করে পূর্বাঞ্চলে ১১৬টি ও পশ্চিমাঞ্চলে ১০২টি মিলিয়ে মোট ২১৮টি ইঞ্জিন যুক্ত রয়েছে।
এবারের ঈদযাত্রা নির্বিঘœ করতে সব আন্তঃনগর ট্রেনের সাপ্তাহিক ছুটি বাতিল করা হয়েছে। বাড়তি সতর্কতা নিয়েছে রেলওয়ে কতৃপক্ষ। একজনের টিকেটে অন্য যাত্রীর ভ্রমণ আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ বলে জানিয়েছে রেলওয়ে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়