গণতন্ত্র মঞ্চের হুঁশিয়ারি : সমাবেশে বাধা দিলে পরিণতি ভালো হবে না

আগের সংবাদ

পাহাড় কাটার হিড়িক, দুই ফসলি জমির টপ সয়েল যাচ্ছে ভাটায়

পরের সংবাদ

জাতীয় দলে ডাক পেয়ে রোমাঞ্চিত দিপু-মুশফিক

প্রকাশিত: জুন ৬, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ৬, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : আফগানিস্তানের বিপক্ষে বাংলাদেশের একমাত্র টেস্ট ম্যাচের সিরিজকে সামনে রেখে গত সোমবার দল ঘোষণা করে বিসিবি। সেই দলে চমক হিসেবে আছেন চট্টগ্রামের ব্যাটার শাহাদাত হোসেন দিপু এবং রংপুরের পেসার মুশফিক হাসান। গতকাল তারা জাতীয় দলের সঙ্গে অনুশীলন করেন। অনুশীলনের মাধ্যমে নিজেদের আরো ভালো করার চেষ্টায় ব্যস্ত থাকলেও এখনি একাদশ নিয়ে ভাবছেন না তারা। তবে দুজনই জানান, একাদশে জায়গা পেলে নিজেদের সেরাটা দেয়ার চেষ্টা করবেন তারা।
শাহাদাত হোসেন দিপু সর্বশেষ খেলেছেন ওয়েস্ট ইন্ডিজ ‘এ’ দলের বিপক্ষে বাংলাদেশ ‘এ’ দলের হয়ে। বয়সভিত্তিক ক্রিকেট থেকেই তিনি নিখুঁত ব্যাটিংয়ের কৌশল ও ব্যাটিং টেম্পারমেন্টের জন্য প্রশংসিত হয়ে এসেছেন। চট্টগ্রামের এই তরুণ ২০২০ অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপজয়ী দলেও ছিলেন।
নানা কাঠখড় পুড়িয়ে জাতীয় দলে ডাক পাওয়া দিপু গতকাল জাতীয় দলের সঙ্গে অনুশীলন করেন। সকালে দলের সঙ্গে ওয়ার্ম আপ, ফিল্ডিং অনুশীলন এবং ব্যাটিং অনুশীলনের সময় তিনি ছিলেন সবার আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে। অনুশীলন শেষে এই তরুণ ব্যাটার সংবাদ সম্মেলনে গণমাধ্যমের মুখোমুখি হন।
দলে ডাক পেয়ে প্রথমেই মাকে জানিয়েছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘সোমবার মাগরিবের আজানের সময় জানলাম জাতীয় দলে ডাক পেয়েছি। দলে ডাক পেয়েই প্রথম আম্মুকে ফোন দিয়েছি। মাঠে আসার পর প্রথমে কোচের সঙ্গে দেখা হয়েছে, তিনি আমাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন।’
এরপর তিনি জাতীয় দলের অনুশীলনে যোগ দেয়ার মুহূর্ত জানিয়ে বলেন, ‘সবাই অভিনন্দন জানাচ্ছিল। এটা ভালো লাগছিল। সবারই স্বপ্ন থাকে জাতীয় দলে খেলার।
আমারও তা-ই ছিল।’ এরপর দিপু জানান তিনি দিন দিন আরো উন্নতি করতে চান। তার কথায় যোগ হয় বাবাকে ছাড়া বেড়ে ওঠার গল্প। তিনি বলেন, ‘আমার বাবা যখন মারা যায়, আমি অনেক ছোট ছিলাম।
তখন বুঝতে পারিনি। আস্তে আস্তে যখন বড় হই, তখন আমার বড় ভাই অনেক সাহায্য করেছে।’ নিজের ক্রিকেটীয় দক্ষতার ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমার স্কিল ভালো বলে সবাই। তবে আমি মনে করি, মানসিকভাবে আরো শক্তিশালী হওয়া দরকার এখানে খেলার জন্য।’ তিনি আরো যোগ করেন, ‘আমি দিন দিন নিজের স্কিল আরো উন্নত করার চেষ্টা করব। মানসিকভাবে আরো শক্ত হওয়ার চেষ্টা করব। এটাই আমার কাজ। এসব কাজে যত উন্নতি করব, আমার জন্য খেলাটা আরো সহজ হবে বলে আমি মনে করি।’
আফগানিস্তান টেস্টের দলে জায়গা করে নেয়া আরেক নতুন মুখ রংপুরের মুশফিক হাসান। ২০২২ সালের অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ দলে ছিলেন তিনি। গত আসরের যুব বিশ্বকাপে বাংলাদেশ অষ্টম স্থানে ছিল।
তবে সেই আসরেও মুশফিকের বোলিং ছিল যথেষ্ট আক্রমণাত্মক। নিজের প্রথম মৌসুমেই ৬ ম্যাচে ১০ ইনিংসে বোলিং করে নেন ২৫ উইকেট। বাংলাদেশ ক্রিকেট লিগে তার নামের পাশে আছে ৪ ম্যাচের ৭ ইনিংসে তোলা ১৭ উইকেট। ধারাবাহিক পারফর্ম করে জাতীয় দলে জায়গা পাওয়ার পর তিনি গণমাধ্যমকে জানান, ‘জাতীয় দলে ডাক পেয়ে ভালো লাগছে। সবারই আশা থাকে নিজেকে এই পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার। দল ঘোষণার সময় আমি মাঠে ছিলাম, সঙ্গে ফোন ছিল না। পরে বাসায় এসে জানতে পারি খবরটা।’
অবশ্য স্কোয়াডে ডাক পেলেও টেস্ট অভিষেকের জন্য কঠিন লড়াইয়ের সামনে পড়তে হবে মুশফিককে। তিনি ছাড়াও স্কোয়াডে আরো চারজন পেসার রয়েছে। তারা হলেন- তাসকিন আহমেদ, ইবাদত হোসেন, শরীফুল ইসলাম, সৈয়দ খালেদ আহমেদ। তারা প্রত্যেকেই জাতীয় দলে খেলেছেন। তবে জাতীয় দলের জন্য অপেক্ষা করতে আপত্তি নেই মুশফিকের। তিনি বলেন, ‘আফগানিস্তানের বিপক্ষে এখন তো এক ম্যাচ শুধু। একাদশে সুযোগ পাব কিনা- তা পরে জানা যাবে। তবে সুযোগ পেলে নিজের সেরাটা দেয়ার চেষ্টাই থাকবে।’
দিপু-মুশফিককে জাতীয় দলে ডেকে গণমাধ্যমের প্রশ্নের মুখোমুখি হন জাতীয় দলের প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন। তিনি জানান তারা বিসিবির পর্যবেক্ষণে ছিল এবং টেস্ট ক্রিকেটের চ্যালেঞ্জ নেয়ার জন্য তারা প্রস্তুত। দিপু ও মুশফিককে তাড়াতাড়ি দলে টানা হলো কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে মিনহাজুল আবেদীন উল্টো প্রশ্ন করে বলেন, ‘তাড়াতাড়ি কেন হবে? ওরা তো এইচপিতে ছিল, আমাদের পর্যবেক্ষণেই ছিল। আমরা মনিটর করছিলাম। এ-দলে তো এমনি এমনি খেলাইনি।’ দিপুর প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘শাহাদাত হোসেন দিপুকে আমরা অনেক দিন থেকেই লঙ্গার ভার্সনের জন্য নজরে রাখছিলাম। ওর মধ্যে সেই টেম্পারমেন্ট আমরা অনেক আগে থেকেই দেখছি। একটি-দুটি ম্যাচ বা মৌসুম দেখে সিদ্ধান্ত নেই না। এবার জাতীয় লিগে ভালো না করলেও আগের দুইবার করেছে।’
মুশফিক হাসান এবারের জাতীয় লিগ দিয়ে আলোচনায় আসেন। রংপুরের হয়ে ৬ ম্যাচে তার শিকার ২৫ উইকেট। তাই দ্রুতই তাকে বাংলাদেশ ‘এ’ দলে নিয়ে নেন নির্বাচকরা।
ভারত ‘এ’ দলের বিপক্ষে কক্সবাজারে খুব ভালো না করলেও কিছুটা সম্ভাবনার ছাপ রাখেন ৩ উইকেট নিয়ে আর কয়েকটি স্পেলে ভালো বোলিং করে। এরপর বিসিএলে মুশফিক ৪ ম্যাচে ১৬টি উইকেট তোলেন। তার প্রসঙ্গে মিনহাজুল আবেদীন বলেন, ‘মুশফিক ধারাবাহিকভাবে এক জায়গায় বল করতে পারে ভালো গতিতে। গতিটা ধরে রাখতে পারে সব স্পেলে। শারীরিকভাবে বেশ শক্তিশালী। এ দলের ম্যাচগুলোতে ভালো বল করেছে। হয়তো অনেক উইকেট পায়নি, কিন্তু বোলিং ভালো করেছে।’

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়