করমণ্ডল এক্সপ্রেস : চেন্নাইগামী ট্রেন দুর্ঘটনায় নিহত শতাধিক, বাংলাদেশি যাত্রী থাকার আশঙ্কা

আগের সংবাদ

দেয়াল

পরের সংবাদ

স্বস্তি নেই ডেঙ্গুতে : সর্বোচ্চ সংখ্যক রোগী একদিনে ভর্তি

প্রকাশিত: জুন ৪, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ৪, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : ডেঙ্গুতে স্বস্তির কোনো খবর নেই। সরকারি হিসাবেও বলছে দৈনিকই বাড়ছে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সাধারণত দেশে জুন মাস থেকেই ডেঙ্গুজ্বরের প্রাদুর্ভাব শুরু হয়। কিন্তু এবার মে মাসেই সর্বাধিক ডেঙ্গুরোগী সারাদেশে শনাক্ত হয়। এজন্য এ বছর বাড়তি সতর্কতা জরুরি।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের বিজ্ঞপ্তির তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুরোগীর সংখ্যা ছিল ১৪১ জন। যা চলতি বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। তবে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, শুক্রবার সরকারী ছুটির দিন হওয়ার বেশির ভাগ হাসপাতাল ডেঙ্গু রিপোর্ট দেয়নি। শনিবারের রিপোর্টের সঙ্গে তা যোগ করা হয়েছে।
এদিকে জ্বর হলে আতঙ্কিত না হয়ে চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়ার এবং জ্বরের প্রথম দিনেই ডেঙ্গু পরীক্ষা এনএস ওয়ান পরীক্ষা করানোর পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা।
ডেঙ্গুর পরিবর্তনশীল প্যাটার্ন, উপসর্গ নিয়ে গতকাল শনিবার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) বিশেষ সেমিনারে তারা এ পরামর্শ দেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ ডা. মিলন হলে এর আয়োজন করে প্রতিষ্ঠানটির ইন্টারনাল মেডিসিন বিভাগ। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা রোগ প্রতিরোধে এডিস মশা নিধন, ডেঙ্গুজ্বরের চিকিৎসার ক্ষেত্রে গাইডলাইন অনুসরণের পাশাপাশি রোগ ও রোগীর অবস্থাভেদে চিকিৎসার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
সেমিনারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ইমেরিটাস অধ্যাপক ডা. এবিএম আব্দুল্লাহ বলেন, জ্বর হলে প্রয়োজন ছাড়া অযথা বাড়তি টেস্ট এবং বার বার টেস্ট না দেয়া হয়। ডেঙ্গুজ্বরের কারণে প্লাটিলেট কমে গেলেই রক্ত দিতে হবে এ ধারণা ভুল। আবার রক্ত দেয়া যাবেই না এটাও ঠিক না। রোগীর অবস্থা বুঝে চিকিৎসক সিদ্ধান্ত নেবেন রোগীকে কী কী চিকিৎসা দিতে হবে।
অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, এ বছর জুন মাস আসার আগেই ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছে ২ হাজার। এরই মধ্যে ১৩ জন মারা গেছেন যা উদ্বেগের বিষয়। ডেঙ্গু প্রতিরোধে গুরুত্ব দিতে হবে। ডেঙ্গু হয়েছে কিনা তা জানতে জ্বর হলে শুরুতেই এনএস ওয়ান টেস্টটি করে নিতে হবে এবং জ্বর হলেই অ্যাসপিরিন জাতীয় ওষুধ খাওয়া যাবে না। ডেঙ্গু প্রথমবার হলে মৃত্যুর হার কম, কিন্তু দ্বিতীয় ও তৃতীয়বার হলে মৃত্যু হার বেশি। যারা ডায়াবেটিসসহ বিভিন্ন ধরনের রোগে ভুগছেন তাদের আরো বেশি সতর্ক হতে হবে।
বিএসএমএমইউর ইন্টারনাল মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ বলেন, ডেঙ্গু ও কোভিডে একই ধরনের উপসর্গ দেখা দেয়। উভয় রোগেই জ্বর, সর্দি, কাশির লক্ষণ দেখা যায়। এজন্য জ্বর হলেই ডেঙ্গু ও কোভিড পরীক্ষা করাতে হবে। বর্তমানে পানিবাহিত রোগ টাইফয়েড আক্রান্ত রোগীও অনেক পাওয়া যাচ্ছে। এজন্য জ্বর হলেই প্রথম দিনেই এনএস ওয়ান পরীক্ষা করাতে হবে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ডেঙ্গু আক্রান্ত ১৪১ জনের মধ্যে ১২৮ জন ঢাকার এবং ১৩ জন ঢাকার বাইরের রোগী। বর্তমানে দেশের বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা ৩৯৭ জন। এর মধ্যে ঢাকার ৫৩টি হাসপাতালে ৩৪৫ জন, আর অনান্য বিভাগে ভর্তি ৫২ জন।
শুক্রবার ৪ জন, বৃহস্পতিবার ১১২ জন, বুধবার ৯৫ জন, মঙ্গলবার ৮৪ জন, সোমবার ৭২ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছে। পহেলা জানুয়ারি থেকে ৩ জুন সকাল ৮টা পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ২ হাজার ২৭৯ জন। মৃত্যু হয়েছে ১৩ জনের। মাসভিত্তিক বিশ্লেষণে জানুয়ারি মাসে রোগীর সংখ্যা ছিল ৫৬৬ জন ও মৃত্যু হয়েছে ৬ জনের। ফেব্রুয়ারি মাসে রোগী ১৬৬ জন ও ৩ জনের মৃত্যু, মার্চ মাসে রোগী ছিল ১১১ জন। তবে এই মাসে কারো মৃত্যু হয়নি। এপ্রিলে ১৪৩ জন রোগী ও ২ জনের মৃত্যু, আর মে মাসে রোগীর সংখ্যা ছিল ১ হাজার ৩৬ জন। আর মৃত্যু হয়েছে ২ জনের। জুন মাসের ৩ তারিখ পর্যন্ত রোগী শনাক্ত হয়েছে ২৫৭ জন। আর মৃতের তালিকাটি শূন্য।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়