সিজার হত্যায় গ্রেপ্তার ৬ : অটোরিকশা ছিনতাই করা তাদের পেশা

আগের সংবাদ

বৃষ্টি ও জোয়ারের অপেক্ষায় হালদা নদীতে মাছের পোনা সংগ্রহকারীরা

পরের সংবাদ

নয় বছর পর লঙ্কানদের হারাল টাইগ্রেসরা

প্রকাশিত: মে ১০, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: মে ১০, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : কলম্বোর সিংহলিজ স্পোর্টস ক্লাব মাঠে গতকাল টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম ম্যাচে লঙ্কান নারীদের মুখোমুখি হয় বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দল। ম্যাচটিতে অধিনায়ক নিগার সুলতানা জ্যোতির দাপুটে ব্যাটিংয়ে ৬ উইকেটের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে লালসবুজের প্রতিনিধিরা। এই জয়ের মধ্য দিয়ে লঙ্কান নারীদের বিপক্ষে টাইগ্রেসরা নয় বছর পর জয়ে ফিরল। লঙ্কানদের বিপক্ষে প্রথম দুই টি-টোয়েন্টিতেই জিতেছিল তারা ২০১২ ও ২০১৪ সালে। এরপর টানা সাত ম্যাচ জেতে লঙ্কানরা। সেই ধারায় এবার ছেদ টানতে পারলেন নিগাররা। জয় নিশ্চিত করে বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দল তিন ম্যাচের সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে আছে। একই মাঠে আগামীকাল অনুষ্ঠিত হবে বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কা নারী দলের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি ম্যাচ।
নিজেদের মাঠে টস জিতে প্রথমে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয় লঙ্কান অধিনায়ক চামেরি আতাপাত্তু। ওপেনিংয়ে তিনি ভিশ্মি গুণারতেœকে সঙ্গে নিয়ে ব্যাটিং আক্রমণ শুরু করেন। বিশ ওভারের খেলা হওয়াতে শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক খেলার চেষ্টা করেন দুই ওপেনার। সেই চেষ্টায় তৃতীয় ওভারেই সাজঘরের পথ দরেন ভিশ্মি। তিনি ৮ বলে ২ চার মেরে ১১ রার সংগ্রহ করে ফারিহা তৃষ্ণার বলে উড়িয়ে মারতে গিয়ে রাবেয়া খানের হাতে ধরা পড়েন। প্রথম ব্যাকথ্রুর পর লঙ্কান অধিনায়কের সঙ্গে জুটি গড়ে দলকে এগিয়ে নিতে থাকেন মাধবী। আতাপাত্তু নির্ভয়ে ব্যাট চালিয়ে রানে গতি দিতে থাকেন। অন্যপ্রান্তে অবস্থান থিতু করে ধীরে ধীরে স্কোরবোর্ডের রান বাড়াতে থাকেন মাধবী। দুই ব্যাটারের জুটি ভাঙতে টাইগ্রেসদের অপেক্ষা করতে হয়েছে নবম ওভার পর্যন্ত। এবারো নাহিদা আক্তারের বলে আগ্রাসী ব্যাটিং করতে গিয়ে আতাপাত্তুর ব্যাট থেকে যাওয়া বল ধরা পড়ে সোবহানা মুস্তারির হাতে। ২৮ বলে ২ চার ও ৩ ছক্কায় গড়া ৩৮ রানের ইনিংস নিয়ে বিদায় নেন অধিনায়ক আতাপাত্তু।
এরপর চারে নেমে শক্ত অবস্থান গড়ে ক্রিজে দাঁড়ান নিলাকশি। এই ব্যাটারও থিতু হয়ে সাবধানে ব্যাট চালাতে থাকেন। নিলাকশি-মাধবীর জুটি ভাঙে ১৬তম ওভারে মাধবীর বিদায়ে। ৪৪ বলে ৪৫ রানের ইনিংস গড়ে তিনি সুলতানা খাতুনের বলে সাজঘরে ফিরে যান। এরপর আর কেউ নিলাকশির সঙ্গে ভালোভাবে সঙ্গ দিতে পারেনি। টাইগ্রেস বোলারদের তোপের মুখে হাসিনি প্যারারা বিদায় নেন ৩ বলে ১ রান করে, কাভিশা দিলহারি বিদায় নেন গোল্ডেন ডাক মেরে, অনুষ্কা বিদায় নেন ডাক মেরে। শেষ পর্যন্ত লঙ্কান নারীদের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৬ উইকেট হারিয়ে ১৪৫ রান।
রান তাড়ায় বাংলাদেশের শুরুটা তেমন ভালো ছিল না। পাঁচ ওভারের মধ্যে ফিরে যান দুই ওপেনার। শামিমা সুলতানা করেন ৫ রান। অভিষিক্ত রুবাইয়া হায়দার ৯ রান করতে খেলেন ১৬ বল। সোবহানাকে নিয়ে তৃতীয় উইকেট জুটিতে প্রাথমিক ধাক্কা সামাল দেন টাইগ্রেস অধিনায়ক জ্যোতি। অসাধারণ ব্যাটিংয়ে দলের সামনে থেকে নেতৃত্ব দেন তিনি। দুই ওপেনারকে দ্রুত হারানোর পর পাওয়ার প্লের মধ্যে নেমে শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থেকে করেন ৭৫ রান। ৫১ বলের অধিনায়কোচিত ইনিংস সাজান তিনি ৭ চার ও ২ ছয়ে। জ্যোতি-সোবহানা জুটি মিলে স্কোরবোর্ডে ৪০ বলে ৫১ রান যোগ করেন। যেখানে বড় অবদান ছিল জ্যোতির। দ্বাদশ ওভারে ওশাদি রানাসিংহেকে ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে মারতে গিয়ে স্টাম্পড হন সোবহানা। ১ চারে ২৪ বলে তিনি করেন ১৭ রান। তখনো বাংলাদেশের জয়ের জন্য দরকার ৫৩ বলে ৭২ রান। এমন পরিস্থিতিতে অধিনায়কের সঙ্গী হয়ে দাঁড়ান ঋতু। তাকে সঙ্গে নিয়ে রানের গতি বাড়াতে থাকেন জ্যোতি। নিয়মিত বাউন্ডারির সঙ্গে তিনি এক-দুই রান নিয়ে গড়েন দারুণ এক জুটি। পঞ্চাশ পর্যন্ত পৌঁছাতে এই জুটির প্রয়োজন হয় মাত্র ৩৮ বল।
এর মধ্যে ক্যারিয়ারের পঞ্চক ফিফটি পর্যন্ত পৌঁছে যান নিগার সুলতানা জ্যোতি। অর্ধশতক ছোতে তিনি ৩৬ বলে ৬টি চারের সঙ্গে হাঁকান একটি ছক্কা। ফিফটির পর আরো আক্রমণাত্মক হয়ে উঠেন তিনি। লঙ্কান বোলারদের ভাসাতে থাকেন চার-ছক্কায়। শেষ তিন ওভারে প্রয়োজন ছিল ৩৫ রান। ঋতুর বাউন্ডারিতে ১৮তম ওভার থেকে আসে ১০ রান। শেষ দুই ওভারে ২৫ রানের সমীকরণে বল হাতে আসেন লঙ্কান অধিনায়ক চামেরি আতাপাত্তু। ব্যাটে-বলে তিনি অতীতে অসংখ্যবার বাংলাদেশের পরাজয়ের কারণ হয়েছেন। তবে এবার ভিন্ন অভিজ্ঞতার শিকার হলেন এই লঙ্কান অধিনায়ক। শেষ ওভারের প্রথম বলে দারুণ স্কয়ার ড্রাইভে চার মেরে জয় আরো সহজ করেন ঋতু।
তবে শেষ পর্যন্ত থাকতে পারেনি এই জুটি। ৩ বলে ১ রান বাকি থাকতে ঝুঁকিপূর্ণ রান নিতে গিয়ে রান আউট হন ঋতু। আসল কাজ অবশ্য ততক্ষণে সেরে ফেলেছেন ৩০ বছর বয়সি এই অলরাউন্ডার। ২৩ বলে চারটি চারে তার সংগ্রহ ৩৩ রান। তিনি ফিরে গেলেও ১ বল হাতে রেখে দলকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন নিগার। টি-টোয়েন্টিতে এটিই বাংলাদেশের সবচেয়ে বেশি রান তাড়া করে জয়।
২০১৮ সালের এশিয়া কাপ ফাইনালে ভারতের বিপক্ষে ১৪২ রান তাড়া করে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলেন সালমা খাতুন, রুমানা আহমেদরা।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়