এবার ডিএনসিসির গাড়িচাপায় বাইক চালকের মৃত্যু : মেশিনে পেঁচিয়ে নিহত ১

আগের সংবাদ

আতঙ্কের বসতি পুরান ঢাকা : কেমিক্যাল গোডাউন না সরায় ক্ষোভ, নিমতলীর ১৭ দফা বাস্তবায়ন জরুরি

পরের সংবাদ

অগ্নিঝরা মার্চ : বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বকে ভাসানীর সমর্থন

প্রকাশিত: মার্চ ৯, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: মার্চ ৯, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : বঙ্গবন্ধুর নির্দেশেই তখন পুরো পূর্ব পাকিস্তান পরিচালিত হচ্ছিল। তার নির্দেশ মেনেই ঢাকা হাইকোর্টের বিচারকরা ‘বাংলার কসাই’ আখ্যা পাওয়া লেফটেন্যান্ট জেনারেল টিক্কা খানকে গভর্নর হিসেবে শপথ পাঠ করাতে অস্বীকার করেন। বঙ্গবন্ধুর ঘোষিত আন্দোলনের কর্মসূচি অনুযায়ী, সচিবালয়সহ সারাদেশে সব সরকারি ও আধাসরকারি অফিস, হাইকোর্ট ও জেলা আদালতসহ সবখানে সর্বাত্মক হরতাল পালিত হয়। বঙ্গবন্ধু যেসব সরকারি অফিস খুলে রাখার নির্দেশ দিয়েছিলেন, শুধু সেসব অফিস চালু থাকে। ঢাকার ঐতিহাসিক পল্টন ময়দানে অনুষ্ঠিত এক বিশাল জনসভায় বাঙালির স্বাধীনতা আন্দলনের প্রতি একাত্মতা প্রকাশ করে মজলুম জননেতা মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী তার চিরাচরিত দরাজ কণ্ঠে ঘোষণা দেন, হে বাঙালিরা, আপনারা মুজিবের ওপর বিশ্বাস রাখুন, তাকে খামোখা কেউ অবিশ্বাস করবেন না, কারণ মুজিবকে আমি ভালোভাবে চিনি। তিনি ওই সময় ইয়াহিয়া খানের উদ্দেশে বলেন, অনেক হয়েছে আর নয়, তিক্ততা বাড়িয়ে লাভ নেই। লা-কুম দ্বিনিকুম অলইয়াদ্বিনের মতো অর্থাৎ তোমার ধর্ম তোমার, আমার ধর্ম আমার বলে পূর্ব বাংলার স্বাধীনতা স্বীকার করে নাও। তার একথা শুনে উপস্থিত জনতার করতালি আশপাশ প্রকম্পিত করে তুলে। ভাসানী আরো বলেন, মুজিবের নির্দেশ মতো আগামী ২৫

তারিখের মধ্যে কিছু না হলে আমি শেখ মুজিবের সঙ্গে মিলে ১৯৫২ সালের মতো তুমুল আন্দোলন গড়ে তুলবো। তার এ বক্তব্যে স্বাধীনতা সংগ্রামে বামপন্থিদের অংশগ্রহণ আরো শক্তিশালী হয়।
এদিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্জেন্ট জহুরুল হক হলের ক্যান্টিনে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সংসদের এক জরুরি সভায় ছাত্রলীগ ও ডাকসুর নেতৃত্বে গঠিত স্বাধীন বাংলাদেশ ছাত্রসংগ্রাম পরিষদের ছাত্রসভায় নেয়া ‘স্বাধীন বাংলাদেশ’ ঘোষণার প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়। ছাত্রলীগ শেখ মুজিবের প্রতি অবিলম্বে জাতীয় সরকার গঠনের আহ্বান জানায়। সকালে পাকিস্তান এয়ালাইন্সের (পিআইএ) বাঙালি কর্মচারীরা তেজগাঁও বিমানবন্দর থেকে মিছিল করে ধানমন্ডিতে বঙ্গবন্ধুর বাসভবনে গিয়ে তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।
অন্যদিকে সামরিক কর্তৃপক্ষ রাজশাহীতে অনির্দিষ্টকালের জন্য প্রতিদিন নৈশ কারফিউ জারির পর আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়, সেনাবাহিনীকে ছাউনিতে ফিরিয়ে নেয়া হয়েছে বলে ঘোষণার পর রাজশাহীতে হঠাৎ সান্ধ্য আইন জারির কারণ বোধগম্য নয়। বিবৃতিতে অবিলম্বে কারফিউ প্রত্যাহারের দাবি জানানো হয়।
চট্টগ্রামে অবাঙালিরা রেলওয়ে কলোনি এবং এ কে খান রোডে সংঘর্ষে জড়ায় দুপুরের দিকে। বিকালে হালিশহর থেকে দেওয়ানহাট হয়ে আগ্রাবাদ পর্যন্ত অস্ত্র নিয়ে মিছিল করে অবাঙালিরা। অন্যদিকে চট্টেশ্বরী রোডে ‘চট্টগ্রাম শিল্প-সাহিত্য পরিষদ’ এর অফিসে গণসংগীতের মহড়া শুরু হয়। জাতিসংঘ মহাসচিব উ থান্ট এদিন পূর্ব পাকিস্তান থেকে কর্মকর্তা ও তাদের পরিবারের সদস্যদের ফিরিয়ে নেয়ার জন্য ঢাকায় উপ-আবাসিক প্রতিনিধিকে নির্দেশ দেন। জাপানের পররাষ্ট্র দপ্তর পূর্ব পাকিস্তানে অবস্থানরত তাদের নাগরিকদেরও প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেয়।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়