সীতাকুণ্ডে বিস্ফোরণ সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের উদ্বেগ

আগের সংবাদ

কেন এত ভবন বিস্ফোরণ? : সেবা সংস্থাগুলোর সমন্বয়ের অভাব, সামর্থ্যরে ঘাটতি আছে রাজউকের

পরের সংবাদ

ওয়ানডে সিরিজ : বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের মাটিতে নামিয়ে আনল টাইগাররা

প্রকাশিত: মার্চ ৭, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: মার্চ ৭, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : টাইগারদের বিপক্ষে তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজের প্রথম দুই ম্যাচ জিতে আগেই সিরিজ নিশ্চিত করেছিল ইংলিশরা। গতকাল তৃতীয় ও শেষ ম্যাচে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডকে ৫০ রানে হারিয়ে দাপুটে জয় তুলে নিয়ে হোয়াইটওয়াশ এড়িয়েছে তামিম বাহিনী। ব্যাট হাতে ৭৫ রান ও বল হাতে ৪ উইকেট নিয়ে ম্যাচসের হন টাইগার অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। আর সিরিজে সর্বোচ্চ ৮ উইকেট নিয়ে টুর্নামেন্ট সেরা নির্বাচিত হন ইংলিশ বোলিং অলরাউন্ডার আদিল রশিদ। আগামী ৯ মার্চ শুরু হবে টাইগারদের টি-টোয়েন্টি মিশন।
বন্দরনগরী চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরি স্টেডিয়ামে গতকাল টসে জিতে ব্যাটিং করার সিদ্ধান্ত নেন টাইগার অধিনায়ক তামিম ইকবাল। আগে ব্যাট করতে নেমে নাজমুল হোসেন শান্ত, মুশফিকুর রহিম ও সাকিব আল হাসানের হাফসেঞ্চুরিতে ৪৮.৫ ওভারে ২৪৬ রানেই গুটিয়ে যায় লাল-সবুজের প্রতিনিধিদের ইনিংস। ২৪৭ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে সাবধানী শুরু করেন দুই ইংলিশ ওপেনার জেসন রয় ও ফিল সল্ট। প্রথম উইকেট জুটিতে তারা তোলে ৫৪ রান। এরপর বোলিংয়ে এসে ২৫ বলে ৩৫ রান করা সল্টকে বিদায় করে জুটি ভাঙেন সাকিব। পরের ওভারেই ওয়ান ডাউনে নামা ডেভিড মালানকে রানের খাতা খুলতে দেননি ইবাদত হোসেন। শূন্য রানে মাহমুদউল্লাহকে ক্যাচ দিয়ে প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন প্রথম ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান। এরপর আরেক ওপেনার রয়কে ১৯ রানে সাজঘরে ফেরান সাকিব। ৫৫ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে ইংলিশরা। দ্রুত উইকেট হারানোর ধাক্কা সামলাতে জুটি গড়ার টেষ্টা করেন স্যাম কারান ও জেমস ভিন্স। তারা দুজন মিলে তোলেন ৪৯ রান। কারান ২৩ রানে বিদায় নেয়ার পর সাকিবের তৃতীয় শিকার হন ভিন্স। ব্যক্তিগত ২৬ রানে প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন তিনি। এরপর ইংলিশ অলরাউন্ডার মঈন আলীকে ২ রানে বোল্ড করেন ইবাদত। দলীয় ১২৭ রানের মাথায় ইংল্যান্ড শিবিরে আঘাত হানেন তাইজুল ইসলাম। অধিনায়ক জস বাটলারকে ২৬ রানে এলবিডাব্লিউর ফাঁদে ফেলেন এ স্পিনার। অধিনায়ক সাজঘরে ফিরলেও চেষ্টা চালিয়ে যান ক্রিস ওকস। এর মাঝে আদিল রশিদ ৮ ও রেহাম আহমেদ ২ রানে প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন। ৯ উইকেট হারানোর পর জয়ের সুবাশ পেতে থাকে টাইগাররা। শেষদিকে ওকস ৩৪ রান করলেও ৪৪তম ওভারের প্রথম বলে মুস্তাফিজুর রহমানের তালুবন্দি হন। ৪৩.১ ওভারে ১৯৬ রানেই গুটিয়ে যায় ইংলিশদের ইনিংস। ৫০ রানের বড় জয় পায় তামিম-সাকিবরা। বল হাতে ৪ উইকেট নেন সাকিব। চট্টগ্রামে ইংলিশদের বিপক্ষে ৪ উইকেট নেয়ার মধ্য দিয়ে ১৪তম বোলার হিসেবে ৩০০ উইকেটের মাইল ফলক
স্পর্শ করেন। তাইজুল ও ইবাদত নেন ২টি করে উইকেট। আর ১টি করে উইকেট নেন মুস্তাফিজ ও ও মেহেদী হাসান মিরাজ।
এর আগে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে প্রথম ওভারেই প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন টাইগার ওপেনার লিটন দাস। দ্বিতীয় ম্যাচের মতো তৃতীয় ম্যাচেও রানের খাতা খুলতে পারেননি তিনি। এরপর দলীয় ১৭ রানের মাথায় ব্যক্তিগত ১১ রানে আউট হন তামিম। শুরুর চাপ সামলে নিয়ে সাবধানে এগুতে থাকেন নাজমুল হোসেন শান্ত ও মুশফিকুর রহিম। ২৫তম ওভারে মুশফিকের সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝিতে ৭১ বলে ৫৩ রান করে রানআউট হন শান্ত। এরপর ইংলিশ স্পিনার আদিল রশিদের গুগলিতে সুইপ করতে গিয়ে ৯৩ বলে ৭০ রানে বোল্ড হন মুশফিক। উইকেটে এসে সুবিধা করতে পারেননি মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। ৮ রানে সাজঘরে ফেরেন এই মিডল অর্ডার। সাকিব একপ্রান্ত আগলে রেখে খেললেও এর মাঝে আফিফ হোসেন ১৫, মেহেদি হাসান মিরাজ ৫, তাইজুল ইসলাম ২ ও মুস্তাফিজ শূন্য রানে আউট হন। শেষ ব্যাটার হিসেবে ইংল্যান্ডের পেসার জোফরা আর্চারের বলে ৭১ বলে ৭৫ রান করে সাকিব আউট হলে ২৪৬ রানের সংগ্রহ পায় টাইগাররা। ইংল্যান্ডের হয়ে আর্চার ৩টি, কারান ২টি, রশিদ ২টি, রশিদ ১টি ও ওকস ১টি উইকেট নেন।
১৯৬ রানে গুটিয়ে দেয়ার পেছনেও বড় অবদান রাখা সাকিব ম্যান অব দ্য ম্যাচ নির্বাচিত হন। আর সিরিজে সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি ইংল্যান্ডের লেগ স্পিনার আদিল রশিদ ৮ উইকেট নিয়ে সিরিজসেরা নির্বাচিত হন। ম্যাচ শেষে টাইগার অধিনায়ক তামিম বলেন, ‘আমরা সত্যিই এই ম্যাচের জন্য অপেক্ষা করছিলাম। প্রথম ম্যাচে আমরা ভালো অবস্থানে থেকেও জিততে পারিনি। তবে ইংল্যান্ড অসাধারণ খেলেছে। এই জয় তাদের প্রাপ্য। এই ম্যাচেও আমাদের ২৬০-২৭০ রান করা উচিত ছিল। আমাদের বোলাররা সত্যিই ভালো করেছে। আমাদের উন্নতির আরো জায়গা আছে। আমাদের নিজেদের চ্যালেঞ্জ নিতে হবে এবং বিভিন্ন পরিস্থিতিতে মানিয়ে নিতে হবে।’
ম্যাচ শেষে ইংলিশ অধিনায়ক জস বাটলার বলেন, ‘আমরা মরিয়া হয়ে এই ম্যাচটি জিততে চেয়েছিলাম। তারপরেও আমরা সিরিজ জিততে পেরে আনন্দিত। বাংলাদেশ বল হাতে কঠিন লড়াই করেছিল। এই সিরিজ থেকে আমরা যা চেয়েছিলাম তা পেয়েছি। এটা বিশ্বকাপের জন্য দারুণ প্রস্তুতি হিসেবে কাজ করবে। আমরা সত্যিই টি-টোয়েন্টি সিরিজের জন্য উন্মুখ। ওয়ানডের মতো এটিও উত্তেজনাপূর্ণ সিরিজ হবে বলে আশা করছি।’

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়