সাভারে সাংবাদিকের গাড়িতে দুর্বৃত্তদের হানা

আগের সংবাদ

তিন কলেজের শিক্ষার্থীর সংঘর্ষ সায়েন্স ল্যাবে : ঢাকা কলেজ বন্ধ ঘোষণা

পরের সংবাদ

কে হচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী মানিক না প্রতিমা?

প্রকাশিত: মার্চ ৫, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: মার্চ ৫, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

ভ্রাম্যমাণ প্রতিবেদক, আগরতলা (ত্রিপুরা) থেকে : ত্রিপুরায় ভোটে জয়ী হয়েছে গেরুয়া শিবির। তাৎপর্যপূর্ণভাবে এবারের বিধানসভা ভোটে মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে কাউকে তুলে ধরেনি বিজেপি বরং কেন্দ্রীয় মন্ত্রী প্রতিমা ভৌমিককে বিধানসভা ভোটে দাঁড় করিয়ে নতুন এক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী সিপিএমের মানিক সরকারকে হারিয়ে প্রতিমা ভৌমিকও মুখ্যমন্ত্রীর দাবিদার হয়ে রইলেন। তবে পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী কে, সেটি জানা যাবে আগামী ৮ মার্চ। এদিন আগরতলার স্বামী বিবেকানন্দ ময়দানে শপথ অনুষ্ঠান হবে। এতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি থেকে শুরু করে বিজেপির বড় বড় নেতারা উপস্থিত থাকবেন।
সংশ্লিষ্টরা বলেছেন, ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী পদে দুটি নাম সামনে চলে এসেছে। এর মধ্যে একটি নাম বর্তমান বিদায়ী মুখ্যমন্ত্রী ডা. মানিক সাহা এবং আরেকজন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী প্রতিমা ভৌমিক। মানিক সাহা বিপ্লব দেবকে সরিয়ে ত্রিপুরার রাজনীতির কুর্সিতে বসেছিলেন। তার একটা পরিচ্ছন্ন ভাবমূর্তি আছে। প্রচার আছে, তার এই পরিচ্ছন্ন ভাবমূর্তি এবারের নির্বাচনে বিজেপিকে জিততে সাহায্য করেছে। আবার একথাও ঠিক অনেকে বলছেন, প্রতিমা ভৌমিক হচ্ছেন ত্রিপুরায় বিজেপির দুর্দিনের সৈনিক। এখানে যখন সেই অর্থে বিজেপির কর্মী সমর্থক ছিল না, নেতৃত্ব ছিল না তখন কিন্তু এই প্রতিমা ভৌমিকরা নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী থাকার পরও তাকে বিধানসভা ভোটে দাঁড় করানো হয়েছে। নিশ্চয়ই কোনো ভাবনা চিন্তা রয়েছে। কিন্তু দুই ব্যক্তিরই একই জবাব, দল যে দায়িত্ব দেবে আমরা সেই দায়িত্ব পালন করব।
মুখ্যমন্ত্রী ডা. মানিক সাহা বলেছেন, দেখা যাক কী হয়। আর প্রতিমা ভৌমিক ঘনিষ্ঠ মহলে বলছেন, দল যে দায়িত্ব দেবে সেই দায়িত্ব পালন করা হবে। ত্রিপুরা রাজ্য বিজেপি সভাপতি রাজীব ভট্টাচার্য্যরে বক্তব্য, এই বিষয়ে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব সিদ্ধান্ত নেবে। এ বিষয়ে পরিষদীয় দলের যে বৈঠক হবে সেখানেই পরিষদীয় দলনেতা বাছাই হবে। যিনি পরিষদীয় দলনেতা নির্বাচিত হবেন তিনিই পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব নেবেন।
শুধু মুখ্যমন্ত্রী নয়, উপমুখ্যমন্ত্রী পদে কে আসবেন সে নিয়েও চর্চা শুরু হয়েছে। তার কারণ বর্তমান উপমুখ্যমন্ত্রী যীষ্ণু দেববর্মা নির্বাচনে হেরে গিয়েছেন। সে কারণে এই পদে নতুন মুখ আসতে পারে বলে আলোচনা হচ্ছে। সেক্ষেত্রে একজন নারী বিধায়কের কথা ভাবা হচ্ছে। তার পাশাপাশি বিরোধী দলনেতা কে হবেন সে নিয়েও জোর আলোচনা রয়েছে। কারণ ত্রিপুরার রাজনীতিতে তিপ্রা মথা নামের দলটি বিজেপির পর দ্বিতীয় বৃহত্তম শক্তি হয়েছে। যদিও কংগ্রেস ও বামশিবিরের একাংশ দাবি করছে তাদের মধ্যে আসন সমঝোতা হয়েছিল, জোট হয়নি। ফলে তিপ্রা মথাই বিরোধীদলের ভূমিকা পালন করবেন এমন কথা শোনা যাচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে ত্রিপুরার বিভিন্ন জায়গায় রাজনৈতিক সহিংসতা চলছে। সেই কারণে বিধায়ক যারা হয়েছেন তারা শহরে খুব একটা আসতে পারছেন না। এলাকাতেই তাদের থাকতে হচ্ছে। এর ফলে বিধায়কদের নিয়ে যে বৈঠক হওয়ার কথা সেই বৈঠকও বিজেপি কিংবা তিপ্রা মথা করতে পারেনি।
তবে বৈঠক নিয়ে এখানে খুব একটা আগ্রহ নেই। মুখ্যমন্ত্রী, উপমুখ্যমন্ত্রী ও বিরোধী দলীয় নেতা কে হচ্ছেন সেই নিয়ে ব্যাপক আগ্রহ তৈরি হয়েছে। বিজেপি ২০১৮ সালের মতো এবারের বিধানসভা ভোটেও কোনো ‘মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী’ ঘোষণা করেনি। ভোটের পর বেছে নেয়া হয়েছিল প্রথমবার বিধানসভায় নির্বাচিত বিপ্লব দেবকে। কিন্তু গত বছর মে মাসে তাকে সরিয়ে আগরতলার কুর্সি দেয়া হয় মানিককে। এবার কি আবার পালাবদলের পালা- প্রশ্নের উত্তর কেউ দিচ্ছেন না। যদিও শুক্রবার রাতে মানিক সাহা দিল্লি উড়ে গেছেন।
ভোটের হিসাব বলছে, মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহা হাজারের একটু বেশি ভোটের ব্যবধানে জিতলেও হেরে গিয়েছেন উপমুখ্যমন্ত্রী জিষ্ণু দেববর্মা, রাজ্য বিজেপির সভাপতি রাজীব ভট্টাচার্যের মতো প্রথম সারির নেতারা। ২০১৮ সালের বিধানসভা ভোটে ত্রিপুরার ৬০টি বিধানসভা আসনের মধ্যে ৫১টি লড়ে ৩৬টিতে জিতেছিল বিজেপি। পেয়েছিল প্রায় ৪৪ শতাংশ ভোট। তাদের সহযোগী জনজাতি দল আইপিএফটি ৯টিতে প্রার্থী দিয়ে ৮টিতেই জেতে। ভোট পেয়েছিল প্রায় ৭ দশমিক ৪ শতাংশ। অর্থাৎ, ২০১৮ সালের বিধানসভা ভোটের তুলনায় প্রায় ১০ শতাংশ ভোট কমে গিয়েছে বিজেপি জোটের। এবার ৫৫টিতে লড়ে ৩২টি আসনে জিতেছে। সহযোগী আইপিএফটি ৬টিতে লড়ে জিতেছে মাত্র ১টিতে। বিজেপির ঝুলিতে গিয়েছে প্রায় ৩৯ শতাংশ ভোট। সঙ্গী আইপিএফটি এবার ভোট পেয়েছে মাত্র ১ দশমিক ২ শতাংশ। বাম-কংগ্রেস জোট প্রায় ৩৮ শতাংশ ভোট পেয়ে ১৪টি আসনে জিতেছে। আর এক বিরোধীদল তিপ্রা মথা প্রায় ২০ শতাংশ ভোট পেয়ে ১৩টি আসনে জিতেছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়