কুমিল্লাকে হারের স্বাদ দিল রংপুর

আগের সংবাদ

বাংলাদেশ-ব্রাজিল বাণিজ্য বাড়ানোয় জোর প্রধানমন্ত্রীর

পরের সংবাদ

ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে ভারতের মধ্যস্থতা আশা করে যুক্তরাষ্ট্র

প্রকাশিত: জানুয়ারি ৮, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ৮, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

শাহরিয়ার বিপ্লব : যুদ্ধের প্রায় ১০ মাস গত হতে চলেছে। ইতোমধ্যে ইউক্রেনের মাটি আগুনে পুড়ে তামাটে হয়ে গেছে। বসতবাড়িতে বারুদের গন্ধ। রাতের নিশুতি অন্ধকার ভর করেছে দিনের নগরে। নারীরা ছেড়েছে সংসার। শিশুরা হয়েছে পিতৃহীন। শরণার্থী শিবিরে আর ইউরোপের রাস্তায় রাস্তায় বাড়ছে অবাঞ্চিত শিশুদের ভিড়। কিয়েভ এখন শুধুই ধ্বংসস্তূপ। বিরাণভূমি হয়েছে সমগ্র ইউক্রেন। আর এসবের পেছনে উসকানিদাতা হিসেবে যারা এতদিন প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে অস্ত্র ও অর্থ দিয়ে সহযোগিতা করেছে- তারাই এখন যুদ্ধ সমাপ্তির জন্য তৃতীয় পক্ষ খুঁজছে। গতকাল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর এই রকম একটি বিবৃতি দিয়েছে। যাতে পরিষ্কার হয়ে যায় ইউক্রেন নিয়ে তাদের সর্বশেষ অবস্থান।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র নেড প্রাইস গতকাল শুক্রবার এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বাস করে- ভারত এবং অন্য কয়েকটি দেশ যারা মস্কো ও কিয়েভের সংগে সুসম্পর্ক বজায় রেখেছে, তারা ইউক্রেন বিরোধ নিষ্পত্তিতে সহায়তা করতে পারে। নেড প্রাইসের মতে, রাশিয়াকে জবাবদিহি করতে এবং রাশিয়ার ওপর চাপ অব্যাহত রাখতে আমরা কী কী করতে পারি সে বিষয়ে ভারতের সঙ্গে নিয়মিত ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রাখছি। আমরা ক্রেমলিনের সর্বশেষ বিবৃতিটি পর্যবেক্ষণ করেছি, ক্রেমলিন বলছে, তারা সংলাপে ইচ্ছুক। যদি নতুন আঞ্চলিক বাস্তবতা স্বীকৃত হয়। এটি স্পষ্ট, মস্কোর সংলাপ এবং কূটনীতিতে জড়িত হওয়ার প্রকৃত অর্থ হলো নতুন বাস্তবতাকে স্বীকৃতি দেয়া। মস্কো সেই অবস্থান থেকে সরে আসবে বলে মনে করি। শেষ পর্যন্ত সেই সমীকরণটি পরিবর্তন করার আশা করি। আমরা ইউক্রেনকে প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা সহায়তা প্রদান অব্যাহত রেখে সেই হিসাব বদলাতে চাই। আমরা আত্মবিশ্বাসী এই কারণে যে, এই মুহূর্তে ভারতের মতো দেশগুলোর একটি বিশেষ ভূমিকা পালন করার সুযোগ আছে এবং তারা এটা করতে পারবে। আমরা ভারতকে স্বাগত জানাই।
বিবৃতিতে ওই মার্কিন কমকর্তা বলেন, ওয়াশিংটন এবং নয়াদিল্লি সর্বদা একই নীতিগত পন্থা অবলম্বন করলেও কৌশলগত কারণে সব সময় তা এক নাও হতে পারে। তবে নীতিগত পন্থা আমাদের একই। আমরা উভয়েই একটি নিয়মভিত্তিক আন্তর্জাতিক ব্যবস্থা বজায় রাখার প্রতিশ্রæতি লালন করি- যা আঞ্চলিক অখণ্ডতা এবং সার্বভৌমত্বকে সম্মান করে। যা ভারতের সংগে আমাদের বৈশ্বিক কৌশলগত অংশীদারিত্বের প্রশ্ন একই কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে। তিনি আারো বলেন, আমরা ভারতের সংগে একমত যে ইউক্রেনে স্থায়ী শান্তি পুনরুদ্ধার অপরিহার্য। প্রাইস বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বাস করে, ভারতের মতো দেশ রাশিয়ার সংগে সংলাপ এবং কূটনীতির মাধ্যমে একদিন ইউক্রেন সংঘাতের অবসান ঘটাতে পারে।
আরো মাস কয়েক যুদ্ধ চলবে : এদিকে ইউক্রেনে যুদ্ধ কার্যক্রম আরো মাস কয়েক ধরে চলবে বলে আরেকটি বিবৃতি দিয়েছে মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিল। হোয়াইট হাউস থেকে মার্কিন কর্তৃপক্ষ গতকাল শুক্রবার ইউক্রেনের জন্য আরো একটি সহায়তা প্যাকেজ ঘোষণা করেছে, যার মূল্য ৩ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি। মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলের কৌশলগত যোগাযোগের সমন্বয়কারী জন কিরবি বলেছেন, ইউক্রেনের ভূখণ্ডে সামরিক তৎপরতা আগামী কয়েক মাস অব্যাহত থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। আমরা অবশ্যই আগামী কয়েক মাসের মধ্যে আশা করি যে, রাশিয়ানরা কেবল তাদের হাত তুলে সমর্পণ না করলেও ইউক্রেনে ধ্বংসলীলা থামাবে। কিরবি একটি সংবাদ ব্রিফিংয়ে কথা বলতে গিয়ে গতকাল বলেছেন, আমি রাশিয়ার সুনির্দিষ্ট কৌশলগত পরিকল্পনার কথা বলব না। তবে তারা ইউক্রেনের যেসব জায়গাগুলোতে অমানবিক অপরাধ করে যাচ্ছে তা থেকে সরে যাবে এবং তারা বুঝে গেছে, আমরা ইউক্রেনকে গভীরভাবে প্রতিরক্ষা দিতে পারি। পেরেছিও।
সাহায্য এবার শুধু ইউক্রেন নয় : রুশ অভিযানে ক্ষতিগ্রস্ত ইউক্রেন এবং এর প্রতিবেশী দেশগুলোর জন্য নতুন সামরিক সহায়তা ঘোষণা করেছে যুক্তরাষ্ট্র। গতকাল শুক্রবার মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন বলেন, এসব দেশকে ৩৭৫ কোটি ডলার মূল্যের সহায়তা দেয়া হবে। গতকাল এক বিবৃতিতে ব্লিনকেন বলেন, ওয়াশিংটন ইউক্রেনকে ব্র্যাডলি যুদ্ধ যান, স্বচালিত হাউইটজার কামান, সামরিক যান, ভূমি থেকে আকাশে নিক্ষেপযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র, গোলা বারুদসহ বিভিন্ন সামরিক উপকরণ সরবরাহ করবে। হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি কারিন জাঁ পিয়েরে বলেন, এ সামরিক সহায়তার মধ্যে আছে স্থলমাইন প্রতিরোধকারী যান, জিএমএলআরএস রকেটব্যবস্থা, ভূমি থেকে আকাশে উৎক্ষেপণযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র, যান বিধ্বংসী স্থলমাইন ও গোলাবারুদ। আকাশ প্রতিরক্ষায় ব্যবহৃত আরআইএম-৭ সি স্প্যারো ক্ষেপণাস্ত্রও ইউক্রেনে পাঠানো হবে। সোভিয়েত যুগের ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা বাক লঞ্চার থেকে ক্ষেপণাস্ত্রগুলো ছুড়তে হয়। ইউক্রেন এ ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা ব্যবহার করছে। রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা ঠেকাতে ইউক্রেনের জন্য প্যাট্রিয়ট ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা পাঠানোর অঙ্গীকার করেছে জার্মানি।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়