কাগজ প্রতিবেদক : বাংলাদেশ ও ব্রাজিলের মধ্যে ব্যবসাবাণিজ্য বাড়ানোর ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, দুদেশের মধ্যে ব্যবসা স¤প্রসারণের বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে। দুদেশের মধ্যে ব্যবসাবাণিজ্য বাড়াতে ব্রাজিল সরকারকে পদক্ষেপ নেয়ার অনুরোধ করেন প্রধানমন্ত্রী। এই প্রেক্ষাপটে সরকারপ্রধান অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্যচুক্তি (পিটিএ) অথবা মুক্তবাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) সইয়ের ওপর জোর দেন। মার্কোসুর দেশগুলোর (আর্জেন্টিনা, প্যারাগুয়ে ও উরুগুয়ে) সঙ্গে পিটিএ বা এফটিএ সইয়ের বিষয়ে আলোচনা চলার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শিগগিরই চুক্তিগুলোর সই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে বলেন। গতকাল রবিবার বাংলাদেশে নিযুক্ত ব্রাজিলের রাষ্ট্রদূত পাওলো ফার্নান্দো দিয়াস ফেরেস গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে এলে এসব কথা বলেন তিনি। বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রীর স্পিচ রাইটার মো. নজরুল ইসলাম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।
বাংলাদেশ ও ব্রাজিলের মধ্যে কৃষি সহযোগিতা বাড়ানোর ওপর জোর দেন প্রধানমন্ত্রী। ব্রাজিলের বাজারে বাংলাদেশের প্রধান রপ্তানি পণ্য ফার্মাসিউটিক্যালস প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ব্রাজিলের বাজারে রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়ার কারণে ফার্মা আইটেমগুলো এখন কিছু সীমাবদ্ধতার সম্মুখীন হচ্ছে। শেখ হাসিনা ব্রাজিলের কর্তৃপক্ষকে নিষেধাজ্ঞা শিথিল করতে বলেছেন।
রোহিঙ্গা ইস্যুতে শেখ হাসিনা বলেন, ১১ লাখের বেশি জোরপূর্বক বিতাড়িত মিয়ানমারের রোহিঙ্গা নাগরিককে আশ্রয় দিয়েছে বাংলাদেশ। এটি এখন বাংলাদেশের জন্য অনেক বড় বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে। তিনি বলেন, বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা জনসংখ্যা ক্রমেই বেড়ে চলছে। প্রতি বছর ৩০ হাজার নতুন শিশু জন্ম নিচ্ছে। রোহিঙ্গা ইস্যুতে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে ব্রাজিলকে শক্তিশালী ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।
ব্রাজিলের নতুন প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিও লুলা দা সিলভাকে অভিনন্দন জানান শেখ হাসিনা। ব্রাজিলের কিংবদন্তি ফুটবলার পেলের মৃত্যুতে শোক এবং পেলের পরিবার ও ব্রাজিলের জনগণের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান তিনি। ব্রাজিলিয়ান রাষ্ট্রদূত বলেন, তার দেশের বাজারে বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। ব্রাজিল বাংলাদেশের জন্য তৈরি পোশাক শিল্পের বড় একটি বাজার হতে পারে। দুদেশের মধ্যে বিশেষ করে বাণিজ্য ও প্রযুক্তির ক্ষেত্রে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা জোরদার করার বিশাল সুযোগ রয়েছে। পাওলো ফার্নান্দো দুদেশের মধ্যে জনগণ থেকে জনগণ এবং ব্যবসায়ী থেকে ব্যবসায়ী যোগাযোগ বাড়ানোর ওপর জোর দেন। কৃষিতে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা বাড়ানোর বিষয়ে রাষ্ট্রদূত বলেন, কৃষি ক্ষেত্রে ভালো অভিজ্ঞতা, চর্চা ও প্রযুক্তি বিনিময় হতে পারে।
সাক্ষাৎকালে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, প্রধানমন্ত্রীর এম্বাসেডর এট লার্জ মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন, মুখ্য সচিব মো. তোফাজ্জাল হোসেন মিয়া এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মাসুদ বিন মোমেন।