উকিল আবদুস সাত্তারকে বহিষ্কার করেছে বিএনপি

আগের সংবাদ

মন্দা মোকাবিলায় দুই চ্যালেঞ্জ : ডলারের দাম যৌক্তিক জায়গায় রাখা > মূল্যস্ফীতি কমিয়ে ৫ শতাংশের মধ্যে নামিয়ে আনা

পরের সংবাদ

দেশে সশস্ত্র জিহাদ করার পরিকল্পনা করছিল জঙ্গিরা > গ্রেপ্তার ৬ জন রিমান্ডে : সিটিটিসি

প্রকাশিত: জানুয়ারি ৩, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ৩, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : রাজধানীর সায়েদাবাদ বাস টার্মিন্যাল, চট্টগ্রাম ও টেকনাফ থেকে ৬ জনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কাউন্টার টেরোরিজম এন্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- আব্দুর রব, সাকিব, শামীম হোসেন, নাদিম শেখ, আবছার ও সাইদ উদ্দিন। ডিএমপি কাউন্টার টেরোরিজম এন্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিট জানিয়েছে, গ্রেপ্তারকৃতরা অনলাইন থেকে জঙ্গিবাদে উদ্বুদ্ধ হয়ে বাংলাদেশের সশস্ত্র জিহাদ করার পরিকল্পনা নিয়েই সংঘটিত হচ্ছিল। গ্রেপ্তারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৫ দিনের রিমান্ডে নেয়া হয়েছে। ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে গতকাল সোমবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানিয়েছে সিটিটিসি।
সিটিটিসির অতিরিক্ত কমিশনার মো. আসাদুজ্জামান বলেন, আব্দুর রব কুরআনে হাফেজ ও কওমী মাদ্রাসার শিক্ষার্থী। গত ২০১৯ সালের জুন মাসে সৌদি আরব চলে যান। সেখানে তিনি অনলাইনে বিভিন্ন জিহাদি পোস্ট ও ভিডিও দেখে জিহাদের জন্য অনুপ্রাণিত হন। অনলাইনে রোহিঙ্গা নির্যাতনের একটি ভিডিও কমেন্টের সূত্র ধরে সাইদের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। একইভাবে শামীম, সাকিব, নাদিমসহ আরো কয়েকজনের সঙ্গে পরিচয় হয়। গ্রেপ্তারকৃত আব্দুর রব সমন্বয়ক হিসেবে কাজ করছিলেন। তিনি সবাইকে অনলাইনে একত্রিত করে শরীয়াহভিত্তিক রাষ্ট্র গঠন, জিহাদ ও অন্যান্য বিষয় নিয়ে আলোচনা করতেন। তাদের সম্মিলিত

আলোচনায় সিদ্ধান্ত হয় আব্দুর রব, শামীম, সাকিব, নাদিম, সাইদসহ অন্য যারা হিজরতে রাজি তারা প্রথমে টেকনাফ গিয়ে তাদের স্থানীয় সহযোগীদের মাধ্যমে প্রশিক্ষণ নেবে। পরবর্তীতে তারা বাংলাদেশে ইসলামী শাসন কায়েমের জন্য জিহাদ করবে।
তিনি বলেন, গত বছরে নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে সবাইকে নিজ নিজ ব্যবস্থাপনায় টেকনাফে যাওয়ার পরামর্শ দেন আব্দুর রব। সেই অনুসারে গত ১৬ নভেম্বর সাকিব ও নাদিম টেকনাফ যায় ও স্থানীয় সহযোগী এবং গ্রেপ্তার আবছার তাদের টেকনাফে ভাড়া বাসায় থাকার ব্যবস্থা করে দেন। আব্দুর রব ছুটি না পাওয়ায় যথাসময়ে দেশে আসতে ব্যর্থ হলে তারা টেকনাফের বাসায় অবস্থান করে তার জন্য অপেক্ষা করতে থাকে।
গত ২২ নভেম্বর গ্রেপ্তার আব্দুর রব দেশে ফিরলে তার সহযোগী শামীম ঢাকা শাহজালাল বিমানবন্দর থেকে রিসিভ করে পূর্ব পরিকল্পনানুযায়ী তাদের অন্য সহযোগীর ভাড়া করা বাসায় নিয়ে যায়। সেখানে অবস্থান করে বিভিন্ন শলা-পরামর্শ করে দুদিন পর তারা সাকিবদের সঙ্গে মিলিত হয়ে তাদের অন্য সহযোগীদের জন্য অপেক্ষা করতে থাকে।
সিটিটিসির দাবি- প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তারকৃতরা জানায়, তারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও অনলাইনভিত্তিক অ্যাপসে যোগাযোগ স্থাপনের মাধ্যমে দল গঠন করে। পরে স্থানীয় সহযোগীদের নিয়ে প্রশিক্ষণ নিয়ে দেশে জঙ্গিবাদের জন্য টেকনাফে হিজরত করে অবস্থান করছিল। তারা সংঘটিত হচ্ছিল, সশস্ত্র জিহাদের প্রস্তুতি নিচ্ছিল এটা কি কোন সাংগঠনিক ব্যক্তি ছাড়া সম্ভব সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে সিটিটিসির অতিরিক্ত কমিশনার বলেন, এখনো তারা সাংগঠনিক কাঠামো দাঁড় করাতে পারে নাই। এটা ছিল তাদের প্রথম প্রচেষ্টা। তারা নিজেদের মধ্যে সশস্ত্র জিহাদের আলোচনা করে, এভাবে হিজরত করছিল। এদের প্রথমই তেমন সদস্য সংখ্যা থাকে না, এরা ধীরে ধীরে সদস্য সংখ্যা বাড়ায়। তারা টেকনাফ পাহাড়ি এলাকায় অবস্থান নেয়ার পরিকল্পনা করে।
আলকায়েদার সঙ্গে গ্রেপ্তার জঙ্গিদের কোনো যোগাযোগ আছে কিনা জানতে চাইলে সিটিটিসির কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান বলেন, আল কায়েদার সঙ্গে তাদের কোনো যোগাযোগ নেই। গ্রেপ্তারকৃত জঙ্গিরা আলকায়দার মতাদর্শ অনুসরণ করে। অনলাইনে বিভিন্ন ভিডিও কনটেন্ট দেখে তারা মতাদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়েছে বলে আমরা জানতে পেরেছি। গ্রেপ্তারদের বিরুদ্ধে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা হয়েছে বলেও জানান এই কর্মকর্তা। এদিকে গতকালই গ্রেপ্তারকৃতদের আদালতে হাজির করে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সিটিটিসির এসআই রফিকুল ইসলাম ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করেন। শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. রশিদুল আলমের আদালত তাদের পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়