অমিত শাহের আশ্বাস : রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে বাংলাদেশের পাশে থাকবে ভারত

আগের সংবাদ

বিশ্বকাপের বাঁশি বাজল কাতারে

পরের সংবাদ

বিদ্যুৎ ও জ¦ালানির দুর্ভোগ ডিসেম্বর থেকে থাকবে না > বর্তমান রিজার্ভে ৫ মাস চলবে : প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশিত: নভেম্বর ২০, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ২০, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : বিদ্যুৎ ও জ্বালানির জন্য আগামী মাস থেকে জনগণকে আর বেশি ভোগান্তিতে পড়তে হবে না বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সবাইকে সাশ্রয়ী হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেছেন, এরপরও আমি বলব, তেল-পানি ব্যবহার করার ক্ষেত্রে সবাইকে সাশ্রয়ী হতে হবে। মিতব্যয়ী হতে হবে। কারণ, সারা বিশ্বে অর্থনৈতিক মন্দা দেখা দিয়েছে। তার প্রভাব থেকে আমরা মুক্ত নই। গতকাল শনিবার গণভবনে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, কথা ছিল সব ঘরে আলো জ্বালব। ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ দিতে সক্ষম হয়েছি। এখন ইউক্রেন যুদ্ধের পর তেল কিনতে অসুবিধা হচ্ছে, গ্যাস আনতে অসুবিধা হচ্ছে। এটি শুধু আমাদের দেশ না, ইংল্যান্ড, আমেরিকা, জার্মানি সব জায়গায়। তারাই জ্বালানি সাশ্রয়ের দিকে নজর দিচ্ছে। তারা নিজেরাই হিমশিম খাচ্ছে। এ কারণে কিছুদিনের জন্য আমাদের কষ্ট পেতে হয়েছে। হয়তো আগামী মাস থেকে এত কষ্ট আর থাকবে না।
সবাইকে উৎপাদন বাড়ানোর আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এক ইঞ্চি জমি যেন খালি না থাকে। যা পারেন উৎপাদন করেন। ছাদ বাগান করেন, জমিতে ফসল ফলান। সারা বিশ্বে অর্থনৈতিক অবস্থা খুবই খারাপ। নিজেদের উৎপাদন নিজেরা বাড়াতে পারলে দুর্ভিক্ষের আঁচ বাংলাদেশে কোনো দিন লাগবে না। এটিই বাস্তবতা। আমাদেরটা আমাদেরই করে নিতে হবে। আমরা খাদ্য উৎপাদন বাড়িয়েছি। আপৎকালের জন্য সব সময় মজুত রাখি। যেন আমার দেশের মানুষের কোনো রকম কষ্ট না হয়।
মানুষকে বিনামূল্যে এবং কমমূল্যে খাদ্য সরবরাহ করার কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, বেশি দাম দিয়ে সব জিনিস কিনে নিয়ে এসে কম দামে দিচ্ছি, যাতে কোনো মানুষ খাদ্যে কষ্ট না পায়। টিসিবির কার্ডের মাধ্যমে চাল, ডাল, তেল, চিনি ভর্তুকিতে দিচ্ছি। ১ কোটি

মানুষ এটা পাচ্ছে। প্রায় ৫০ লাখ মানুষকে আমরা ১৫ টাকায় দিচ্ছি আর ৫০ লাখ পরিবার পাচ্ছে বিনা পয়সায়। এখানে যারা বয়োবৃদ্ধ তাদের দিচ্ছি।
তিনি বলেন, গৃহহীন-ভূমিহীনদের ঘর করে দিচ্ছি। জাতির পিতা এই প্রকল্পটা হাতে নিয়েছিলেন। আগামীতে আরো ঘর আমরা দেব। যাদের ঠিকানা ছিল না, এ ধরনের যত মানুষ পাচ্ছি খুঁজে খুঁজে বের করে আমরা বিনা পয়সায় ঘর দিচ্ছি। কিছু দিন আগে বন্যা হয়ে গেল। নদী ভাঙনে যারা ভূমিহীন আমরা তাদেরও ঘর করে দেব।
গণতন্ত্র আছে বলেই উন্নয়ন হয়েছে : প্রধানমন্ত্রী বলেন, গণতন্ত্র রয়েছে বলেই গত এক যুগে বাংলাদেশে উন্নয়ন হয়েছে। ২০০৮-এর নির্বাচনের পর আওয়ামী লীগ সরকারে আসার পর এই একটানা ২০২২ এ দেশে গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত আছে বলেই আজকে বাংলাদেশের উন্নতি হয়েছে। নইলে এত উন্নতি হতো না। এর আগে ‘প্রকৃত গণতন্ত্রিক অধিকার’ এ দেশের মানুষের ছিল না মন্তব্য করে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারে আসার পর থেকে এই গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া আমরা শুরু করি। আজকে নির্বাচনে যতটুকু স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা সৃষ্টি হয়েছে, সেটা কিন্তু আমাদের এই আন্দোলন, সংগ্রামের ফসল।
বিএনপি শাসনামলের সঙ্গে তুলনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপি যখন জামায়াতকে নিয়ে সরকার গঠন করেছে, তারপর থেকে এ দেশে হত্যা, গুম, জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস, দুর্নীতি, মানি লন্ডারিং, এমন কোনো অপকর্ম নেই যে তারা করেনি। কথাই ছিল, ১০টা হোন্ডা ২০টা গুণ্ডা, নির্বাচন ঠাণ্ডা। ভোটের বাক্সে সিল মারা থেকে শুরু করে নানা অপকর্ম হতো। ১ কোটি ২৩ লাখ ভুয়া ভোটার দিয়ে ভোটার লিস্ট করেছিল ২০০৬ এ ইলেকশন করার জন্য বিএনপি। অবশ্য তাদের মুখে এখন খুব গণতন্ত্রের কথা শোনা যায়!
আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় ফেরার পর বাংলাদেশ উন্নতির ধারায় ফেরে মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, মানুষের আর্থসামাজিক অবস্থার উন্নতি করা, স্বাক্ষরতার হার বৃদ্ধি, মানুষের গড় আয়ু বৃদ্ধি, দারিদ্র্যের হার হ্রাস করাসহ প্রত্যেকটা ক্ষেত্রে বাংলাদেশ সাফল্য অর্জন করেছে। করোনাভাইরাস মহামারি মোকাবিলায় নানা পদক্ষেপ নেয়ার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, দেশের মানুষের কল্যাণ করাই আওয়ামী লীগের লক্ষ্য।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের উন্নয়নেই রিজার্ভের টাকা খরচ হয়েছে। এখন যে রিজার্ভ আছে তা দিয়ে পাঁচ মাসের খরচ মেটানো যাবে। রিজার্ভের টাকায় গম, ভুট্টা, সার ও ভোজ্যতেলসহ মানুষের খাদ্য এবং দৈনন্দিন চাহিদা মেটানোর জন্য খরচ হয়েছে। 

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়