কাগজ প্রতিবেদক : কাতারের আল খোর শহরের আল বাইত স্টেডিয়ামে জমকালো আয়োজনের মধ্য দিয়ে গতকাল পর্দা উঠল বিশ্বকাপ ফুটবলের ২২তম আসরের। বাংলাদেশ সময় রাত সাড়ে ৮টা থেকে শুরু হওয়া অনুষ্ঠান শেষ হয় কাতারের আমিরের দেয়া বক্তব্যের মাধ্যমে। রাত ১০টায় স্বাগতিক কাতার ও ইকুয়েডরের ম্যাচ দিয়ে মাঠে গড়ায় বিশ্বকাপ।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শুরুর আগে ফ্রান্সের কিংবদন্তি ফুটবলার ১৯৯৮ বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক মার্শেল দেশাই বিশ্বকাপ ট্রফির প্রদর্শনী করেন স্টেডিয়ামে স্থাপিত মঞ্চে। এ সময় মঞ্চে উপস্থিত দর্শকরা তুমুল করতালি এবং চিয়ার্স ধ্বনির মধ্য দিয়ে বিশ্বকাপ ট্রফিকে বরণ করে নেন। প্রায় ৬০ হাজার দর্শকের উপস্থিতিতে শুরু হয় উদ্বোধনী অনুষ্ঠান। যাদের অধিকাংশই ছিল কাতার এবং ইকুয়েডরের সমর্থক। বিশ্বকাপের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মঞ্চে হাজির হন ফিফা প্রেসিডেন্ট জিয়ান্নি ইনফান্তিনো ও কাতারের আমির তামিম বিন হামাদ আল থানি। বহুল কাক্সিক্ষত কাতার বিশ্বকাপের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শুরু হয় নৃত্য দিয়ে। এই নৃত্যে আরব্য সংস্কৃতিকে তুলে ধরা হয়। নৃত্য শেষে মঞ্চে আসেন বিখ্যাত হলিউড অভিনয় শিল্পী মরগ্যান ফ্রিম্যান। বিশ্বকাপের পথ পরিক্রমা সম্পর্কে বক্তব্য দেন তিনি। এরপর বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন ব্যক্তি গাফেন মঞ্চে আসেন। তিনি কুরআন তিলাওয়াত করেন।
মরগ্যান-গাফেনের পর কাতার বিশ্বকাপে অংশগ্রহণকারী ৩২ দেশের পতাকা প্রদর্শন করা হয়। পতাকা প্রদর্শনের পর মাসকট প্রদর্শন করা হয়। ফের গান শুরু হয়। কাতারের ঐতিহ্যবাহী পোশাক পরে আসেন তারা। ছিল ঢাক-ঢোল। হাতে ছিল তলোয়ার। গানের সঙ্গে চলতে থাকে আকর্ষণীয় ডিসপ্লে। আগের কয়েকটি আসরের থিম সঙে ছিল ওয়াকা-ওয়াকা হতে শুরু করে ফিফা বিশ্বকাপের সব গানের পরিবেশনা। ১৯৯৮ বিশ্বকাপের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে পুয়ের্তোরিকান গায়ক রিকি মার্টিনের ‘আলে! আলে! আলে!’ গান কাতার বিশ্বকাপের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে পারফর্ম করা হয়। এরপরই ২০১০ বিশ্বকাপের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে শাকিরার ওয়াকা ওয়াকা গানটিও পারফর্ম করা হয়। এ ছাড়া ২০১৪ বিশ্বকাপে পিটবুল, জেনিফার লোপেজের গাওয়া ওলে ওলা গানও পারফর্ম করা হয়। সব সংস্করণের গানের পরিবেশনার পর আসেন বিটিএসের জাংকুক। তিনি বিশ্বকাপের অফিশিয়াল গান ড্রিমার্স পরিবেশন করেন। কাতার বিশ্বকাপের অফিশিয়াল গান ‘ড্রিমারস’ গান তিনি। বিশ্বকাপের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রথম কোরিয়ান হিসেবে পারফর্ম করেন এই বিটিএস

তারকা। তিনি সুরের ঝড় তোলার সময় কাতার বিশ্বকাপের মাসকট লা’ইবও পারফর্ম করে মঞ্চে। জাংকুকের সঙ্গে যোগ দেন কাতারের গায়ক ফাহাদ আল কুবাইশি। জাংকুক পারফরম্যান্স শেষ হওয়ার পরই কাতারি কর্মকর্তারা একটি রুমালে কিছু লিখে স্মারক উপহার দেন ফিফা প্রেসিডেন্ট জিয়ান্নি ইনফান্তিনোকে।
এরপর কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানি আরবি ভাষায় স্বাগত বক্তব্য দিয়ে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষ করেন। সবার শেষে আল বাইত স্টেডিয়ামের চারপাশ থেকে জ্বলে ওঠে কয়েক হাজার আতশবাজির আলোর ঝলকানি।