প্রকাশিত: নভেম্বর ২০, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ২০, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
কাগজ প্রতিবেদক : জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক কৃষি খামারি দুরন্ত বিপ্লব খুন হননি, বুড়িগঙ্গার পানিতে ডুবে মারা গেছেন। তাকে হত্যা করা হয়নি। একটি লঞ্চের ধাক্কায় নৌকাডুবে পানিতে তলিয়ে যান তিনি। ঘটনার ছায়া তদন্তকারী সংস্থা পুলিশ ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) কর্মকর্তারা গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় এ তথ্য জানিয়েছেন।
বিষয়টি নিয়ে ছায়া তদন্তকারী সংস্থা পিবিআইয়ের ঢাকা জেলার উপপরিদর্শক ইমরান সালেহ গতকাল শনিবার জানান, দুরন্ত বিপ্লব নৌকাডুবিতেই প্রাণ হারিয়েছেন বলে তারা অনুসন্ধানে নিশ্চিত হয়েছেন। তিনি জানান, ৭ নভেম্বর বিকাল ৫টা ১৭ মিনিটে কেরানীগঞ্জের বটতলা ঘাট থেকে বুড়িগঙ্গা পাড়ি দিয়ে সোয়ারীঘাট
আসছিলেন বিপ্লব। ওই নৌকার মালিক ও মাঝি ছিলেন শামসু নামের একজন। একই সময়ে ঢাকা-বরিশাল রুটের মর্নিংসান-৫ লঞ্চটি সোয়ারীঘাট থেকে সদরঘাটের উদ্দেশে যাত্রা করে। উপপরিদর্শক ইমরান সালেহ বলেন, দুরন্ত বিপ্লবসহ আরো চারজনকে বহন করা শামসু মাঝির নৌকাটি নদীর দুই-তৃতীয়াংশ পাড়ি দেয়ার পর মর্নিংসান-৫ লঞ্চটির ডান পাশে ধাক্কা লাগে। এতে উল্টে যায় নৌকাটি। দুর্ঘটনার পর আশপাশের নৌকা গিয়ে চার যাত্রী ও শামসু মাঝিকে উদ্ধার করে। তবে নিখোঁজ হন এক যাত্রী। দুর্ঘটনার পর শামসু মাঝি তার দেশের বাড়ি ফরিদপুরে পালিয়ে গেলেও তাকে স¤প্রতি আটক করেছে পিবিআই। ষাটোর্ধ্ব শামসু মাঝি নদীতে ডুবে যাওয়া যাত্রীর যে বিবরণ দিয়েছেন তার সঙ্গে দুরন্ত বিপ্লবের মিল রয়েছে। এছাড়া, ডুবে যাওয়া নৌকার পাটাতনের নিচ থেকে বিপ্লবের জুতা উদ্ধারের কথা জানিয়েছে পিবিআই।
পিবিআই ঢাকা জেলার উপপরিদর্শক ইমরান বলেন, দুরন্ত বিপ্লবের লাশ উদ্ধারের পরই আমরা ছায়াতদন্ত শুরু করি। যে নৌকায় তিনি নদী পার হচ্ছিলেন সেই নৌকার মাঝিকে আমরা জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। তিনি জানিয়েছেন, তার নৌকার পাঁচ যাত্রীর মধ্যে চারজনকে উদ্ধার করা হলেও দুরন্ত বিপ্লবকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। আমরা শামসু মাঝির নৌকা থেকে দুরন্ত বিপ্লবের একটি জুতাও উদ্ধার করেছি। জুতাটি যে দুরন্ত বিপ্লবের তা তার বোন ও খামারের ম্যানেজার নিশ্চিত করেছেন। তিনি (বিপ্লব) সাঁতারও জানতেন না। নৌকাটি উল্টে যাওয়ার পর অন্যরা সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসার আগেই তিনি তলিয়ে যান। দুরন্ত বিপ্লবকে হত্যা করা হয়নি, তিনি ডুবে মারা গেছেন। অন্যদিকে মর্নিংসান-৫ লঞ্চের চালকসহ কয়েকজন ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের হেফাজতে আছেন বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে।
প্রসঙ্গত, কেরানীগঞ্জে ‘সোনামাটি অ্যাগ্রো’ নামে একটি কৃষি খামারের মালিক দুরন্ত বিপ্লব গত ৭ নভেম্বর নিখোঁজ হন। এর পাঁচ দিন পর নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় বুড়িগঙ্গা নদীতে ভাসমান অবস্থায় একটি মরদেহ পায় পুলিশ। সেদিন রাতে মরদেহটি বিপ্লবের বলে নিশ্চিত করেন তার স্বজনরা। পরদিন দুপুরে ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। বিপ্লবের মরদেহের ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক নারায়ণগঞ্জগঞ্জ সদর জেনারেল হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার মফিজ উদ্দিন প্রাথমিকভাবে মনে করছেন, বিপ্লবকে হত্যা করা হয়েছে। তবে বিপ্লব নিখোঁজের দিন সন্ধ্যায় বুড়িগঙ্গা নদীর সোয়ারীঘাট এলাকায় একটি নৌকাডুবির তথ্য জানায় দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার পুলিশ।
শেয়ার করুন
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।