গাজীপুরের পানি বিষাক্ত : শিল্পায়নের মূল্য দিচ্ছে স্থানীয়রা

আগের সংবাদ

সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী : যথাসময়ে নির্বাচন হবে

পরের সংবাদ

দুর্ভোগ চরমে : সিলেটে পরিবহন ধর্মঘটের নামে নৈরাজ্য

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৪, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: সেপ্টেম্বর ১৪, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

জাহিদুল ইসলাম, সিলেট ব্যুরো : বেশ কয়েকদিন ধরেই পাঁচ দফা দাবিতে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে আসছিলেন সিলেটের পরিবহন শ্রমিকরা। দাবি পূরণ না হওয়ায় গতকাল মঙ্গলবার থেকে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি শুরু করেছেন তারা। তবে কর্মবিরতি হিসেবে ঘোষণা দিলেও আদতে পরিবহনখাতে নৈরাজ্য চালাচ্ছেন তারা।
সরজমিন সিলেটের বেশ কিছু স্থান ঘুরে দেখা যায়, মঙ্গলবার সকাল থেকেই সিলেটের বিভিন্ন মোড়ে ও নগরীর প্রবেশ পথে লাঠিসোঁটা নিয়ে অবস্থান নিয়েছেন পরিবহন শ্রমিকরা। নিজেদের কর্মবিরতির কথা থাকলেও রাস্তায় লাঠিসোঁটা নিয়ে পিকেটিংয়ে নামেন শ্রমিকরা। রাস্তায় চলাচলকারী ব্যক্তিগত গাড়ি, পণ্যবাহী গাড়ি, বিআরটিসির যাত্রীবাহী বাস চলাচলেও বাধা দিচ্ছেন তারা। এমনকি যেসব চালক তাদের কথা মানতে অস্বীকার করছেন, তাদের শারীরিকভাবে লাঞ্ছিতও করা হচ্ছে। এরফলে চরম দুর্ভোগে পড়েন যাত্রীরা। দূরপাল্লার যাত্রীদের পাশাপাশি নগরীর অভ্যন্তরীণ চলাচলেও দুর্ভোগ পোহাতে হয় তাদের।
মঙ্গলবার সকালে বিআরটিসি বাসে করে কুমিল্লা থেকে সিলেট আসেন আশিক আহমদ। নগরীতে প্রবেশের ২ কিলোমিটার আগে দক্ষিণ সুরমার তেতলীতে তাদের বাস আটকে দেন সেখানে অবস্থান নেয়া পরিবহন শ্রমিকরা। এরপর বাকি পথ হেঁটে আসতে হয় যাত্রীদের। এতে ক্ষুব্ধ আশিক আহমদ বলেন, এটা কেমন কর্মবিরতি? এটা তো গুন্ডামি। তারা নিজেরা যদি গাড়ি চালাতে না চায় না চালাক। কিন্তু যারা চালাচ্ছেন তাদের কেন বাধা দেয়া হবে?
ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়ে বের হয়েও বিপাকে পড়েন গৃহিনী নাজমুন নাহার। মেয়েকে স্কুল থেকে আনার পথে পিকেটারদের কবলে পড়ে তার গাড়ি। বচসার একপর্যায়ে চালকের গায়ে হাত তোলেন পিকেটাররা। এ সময় এই প্রতিবেদক এগিয়ে গেলে পিকেটাররা সরে যায়। ক্ষোভ প্রকাশ করে নাজমুন বলেন, ব্যক্তিগত গাড়িও বের করা যাবে না, এটা কেমন কর্মবিরতি? একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে আমার কি স্বাধীনভাবে চলার অধিকারও নেই? এমন নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি তো হরতালেও হয় না। অন্তত স্কুলগামীদের জন্য সবধরনের ধর্মঘট শিথিল থাকার কথা।
তবে এসব অভিযোগ সরাসরি নাকচ করে সিলেট জেলা সড়ক পরিবহন শ্রমিক সমন্বয় পরিষদের সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া আহমদ বলেন, কোথাও কোনোভাবেই পিকেটিং হচ্ছে না। সিলেটের বাইরের অনেক চালক কর্মবিরতির কথা জানেন না। না জেনেই তারা গাড়ি নিয়ে সিলেট চলে আসছেন। তাদের বুঝাতেই শ্রমিকরা কয়েকটি মোড়ে অবস্থান নিয়েছেন। প্রতিবেদকের সামনে ঘটে যাওয়া ঘটনার বর্ণনা করলে তিনি বলেন, কাউকে জোরজবরদস্তি করার কথা নয়, আমরা শান্তিপূর্ণভাবেই আমাদের দাবি আদায়ে কর্মবিরতি পালন করছি। তবে মাঝে মধ্যে কোথাও ভুল বোঝাবুঝির কারণে কথা কাটাকাটি হয়ে থাকতে পারে। আমরা খোঁজ নেব। এদিকে মঙ্গলবারের মধ্যে দাবি আদায়ের প্রতিশ্রæতি না পেলে বুধবার থেকে সারা বিভাগে কর্মবিরতির হুমকি দিয়েছেন জেলা সড়ক পরিবহন শ্রমিক সমন্বয় পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক আলী আকবর রাজন।
উল্লেখ্য, ট্রাফিক পুলিশের অভিযানে অতিরিক্ত জরিমানা বন্ধ, পুলিশ কমিশনার ও উপপুলিশ কমিশনারের প্রত্যাহারসহ পাঁচ দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে মিছিল-সভা-মানববন্ধন করে আসছিলেন পরিবহন শ্রমিকরা। তবে প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো সাড়া না পেয়ে গতকাল মঙ্গলবার থেকে জেলাজুড়ে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতির নামে ‘ধর্মঘট’ শুরু করেন তারা।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়