২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে ২ জনের মৃত্যু : হাসপাতালে ভর্তি ৩৫৩

আগের সংবাদ

সমান সুযোগের রূপরেখা নেই : ইসির রোডম্যাপ

পরের সংবাদ

সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী : যথাসময়ে নির্বাচন হবে

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৫, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: সেপ্টেম্বর ১৫, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : সব দলের অংশগ্রহণে সুষ্ঠু, সুন্দর ও গণতান্ত্রিক নির্বাচন অনুষ্ঠানের আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, আমরা চাই আগামী জাতীয় নির্বাচনে সব রাজনৈতিক দল অংশ নিক। আর কোনো দল যদি না করে সেটা তাদের সিদ্ধান্ত। তবে গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত রাখতে সংবিধান অনুযায়ী যথাসময়ে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ভারত সফর নিয়ে গতকাল বুধবার গণভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
আগামী নির্বাচন আওয়ামী লীগ জোটগতভাবে নির্বাচন করবে কী না? এমন প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, সময় আসুক। আমরা ১৪ দল করেছি। জোটবদ্ধভাবে নির্বাচন করেছি। জাতীয় পার্টি আমাদের সঙ্গে ছিল। কিন্তু তারা আলাদা নির্বাচন করেছে। আর ভবিষ্যৎ নির্বাচনে কে কোথায় থাকবে, সেটা সময়ই বলে দেবে। দ্বিতীয় কথা, দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, সরকারে আসার পর থেকে দেশের যে উন্নয়ন আমরা করেছি, সেই উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে জনগণ অবশ্যই আওয়ামী লীগকে ভোট দেবে।
জাতীয় নির্বাচনে দলের প্রার্থী পরিবর্তন হবে কী না? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যে কোনো নির্বাচনে মনোনয়ন পরিবর্তন, খুব স্বাভাবিক ব্যাপার। আমরা যাচাই করে দেখি কার জেতার সম্ভাবনা আছে, কার নেই, কে জিতবে, কে জিতবে না? সবকিছু বিবেচনা করেই মনোনয়ন দেয়া হয়। নির্বাচনের এক বছরের বেশি বাকি আছে।
ভারত সফরে শূন্য হাতে আসিনি : ভারত সফর থেকে প্রাপ্তির ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, কী পেলাম সেটা আপেক্ষিক। যদি প্রশ্ন করি, কী দিলাম? বাংলাদেশের চারদিকে ভারত, একদিকে একটুখানি মিয়ানমার। সেই বন্ধুপ্রতিম দেশ থেকে আমাদের ব্যবসা-বাণিজ্য, কৃষি, যোগাযোগ, সব বিষয়ে সহযোগিতা পাচ্ছি। আমরা ভারতের নুমালিগড় থেকে পাইপলাইনে তেল আনছি। সেই পাইপলাইন ভারত তৈরি করে দিচ্ছে। এর ফলে উত্তরবঙ্গে আর চট্টগ্রাম থেকে তেল আনতে হবে না। উত্তরবঙ্গের অর্থনৈতিক কর্মচাঞ্চল্য আরো বাড়বে। পাশাপাশি ভারত থেকে এলএনজি আমদানির ব্যাপারেও আলোচনা হয়েছে। একেবারে খালি হাতে ফিরে আসিনি। এটা আসলে মনের ব্যাপার। মন যদি বলে কিছুই পাইনি, তাহলে আমার কিছু বলার নেই।
তিনি বলেন, জিয়াউর রহমান ভারতের পণ্যে শুল্কমুক্ত সুবিধা দিয়েছিলেন। কিন্তু বাংলাদেশের কোনো পণ্য ভারতে পাঠানোর ব্যবস্থা করেননি। ভারতের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক ঐতিহাসিক। মুক্তিযুদ্ধকালে সহযোগিতা এবং ভাষা ও সংস্কৃতির মিলের কারণে এই সম্পর্ক আরো সুদৃঢ় হয়েছে। কুশিয়ারা নদীর পানি

নিয়ে যারা সমালোচনা করেছে, তারা কী করেছে? খালেদা জিয়া যখন ভারত সফরে গেল, সেখান থেকে ফিরে এসে বললো- গঙ্গা নদীর পানির কথা বলতে ভুলেই গিয়েছিলাম। অর্থাৎ নিজের অধিকার নিয়ে কথা বলতে ভুলে যায়। তারা তো ভুলে গিয়েছিল, আমরা কিন্তু ভুলি নাই। ’৯৬ সালে ক্ষমতায় এসে ৩০ বছরের জন্য গঙ্গা চুক্তি করে এসেছি।
বাংলাদেশের ব্যাপারে ভারতের সব দল একমত থাকে : সফর শুরুর আগে ভারতীয় দুটি সংবাদমাধ্যমে সাক্ষাৎকার দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। সাক্ষাৎকারে তিনি দুই দেশের সম্পর্কে ‘জেনেরোসিটি’ বা আন্তরিকতার প্রসঙ্গটি এনেছেন। সফরে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী এই আন্তরিকতা উপলব্ধি করেছেন কিনা? এ প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যথেষ্ট আন্তরিকতা পেয়েছি। বড় কথা হলো, বাংলাদেশের ব্যাপারে ভারতের সব দল একমত থাকে। যেমন, আমাদের এখানে একাত্তরে সব দলমত এক হয়ে সমর্থন দিয়েছিল। আবার যখন আমরা আমাদের স্থলসীমানা চুক্তি বাস্তবায়ন করি, ছিটমহল বিনিময় করি, ভারতের পার্লামেন্টে স্থলসীমান্ত বিল পাস হয়, সব দল মিলে আইনটা পাস করেছিল।
তিনি বলেন, আপনি যদি নিজে ভালো বন্ধু হন, তাহলে সবাই ভালো থাকবে। বন্ধুপ্রতিম দেশ, তাদের সঙ্গে অবশ্যই সুসম্পর্ক থাকবে। এটাও বাস্তব, পাশাপাশি একটি দেশের সঙ্গে নানা সমস্যা থাকতে পারে। তবে আমি মনে করি, আলোচনার মাধ্যমে এগুলো সমাধান করা যায়।
কানেক্টিভিটির ওপর জোর দিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, ১৯৬৫ সালে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের পর অনেক রেল যোগাযোগ, সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। এখন একে একে আমরা এগুলো খুলে দিচ্ছি। আমাদের উত্তরের জেলা-উপজেলাগুলোর আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন আরো গতিশীল করতেই এটা হচ্ছে। কাজেই আন্তরিকতার আমি কোনো অভাব দেখিনি। আমাদের পররাষ্ট্রনীতিতেই বলা আছে ‘সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারো সঙ্গে বৈরিতা নয়।’ আওয়ামী লীগ সরকারে আসার পর থেকে আমরা এটা মেনে চলছি। বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রেখেও ভারত ও মিয়ানমারের সঙ্গে আন্তর্জাতিক আদালতে গিয়ে সমুদ্রসীমা মিটমাট করলাম। আমাদের বন্ধুত্ব কিন্তু নষ্ট হয়নি।
এই সফর দুই দেশের সম্পর্কের নতুন দিগন্তের সূচনা হয়েছে বলে মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সফরে দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতা অব্যাহত রাখার বিষয়ে সম্মতি এসেছে। বাংলাদেশ ও ভারত সমৃদ্ধশালী দুই দেশে পরিণত হবে।
সব ধর্মের সমান অধিকার : ধর্ম যার যার, উৎসব সবার। আবারো স্মরণ করিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সবাই যার যার ধর্ম যেন শান্তিপূর্ণভাবে পালন করতে পারে, সেই পরিবেশ আমরা বাংলাদেশে ভালোভাবে ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছি। এরপরও কিছু ঘটনা ঘটে বা ঘটানো হয়। আমরা অপরাধীদের বিরুদ্ধে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নিই।
সরকারপ্রধান বলেন, আমাদের যখন উৎসব হয়, পূজা-পার্বণ হয় ভারতের অনেকে এসে যোগ দেয়, আবার ভারতের উৎসবেও আমাদের এখান থেকেও অনেকে যোগ দেয়। এটা যেমন পূজা-পার্বণে হয়, আবার আমাদের এখানে যখন ইসলামিক কোনো অনুষ্ঠান হয় বা ধর্মীয় কোনো অনুষ্ঠান হয় সেখানে বিভিন্ন জায়গা থেকে প্রতিনিধিরা আসেন। আমরা যে অসা¤প্রদায়িক বাংলাদেশের চেতনা ধারণ করি, বাংলাদেশে সব ধর্ম-বর্ণের মানুষের অধিকার আছে।
সিনেমাকে সিনেমা হিসেবেই দেখতে হবে : বঙ্গবন্ধুর বায়োপিক সম্পর্কে এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, শুটিংয়ের পর এখন এডিটিং চলছে। ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণের দৃশ্য অভিনয় করে দেখালে মানুষের এটা নিতে একটু অসুবিধা হয়। কাউকে না কাউকে তো অভিনয় করতে হবে। এটা যখন সিনেমা, একে সিনেমা হিসেবেই দেখতে হবে। অভিনেতারা আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করেছেন। ছবিটির টেলর ফ্রান্সের কানফেস্টে গ্রহণ করেছে। ভালো না হলে গৃহীত হত না। আমি দেখেছি। এডিটিং শেষ হলে একটা ভালো সময় দেখে এটা আসবে।
রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে ভারত আন্তরিক : রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে ভারতের মনোভাব নিয়ে করা এক প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, ভারতও উপলব্ধি করে রোহিঙ্গারা দীর্ঘদিন বাংলাদেশে অবস্থান করলে দীর্ঘ একটা সংকট সৃষ্টি হবে। আমাদের প্রাকৃতিক সম্পদ ও পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। সব থেকে বড় কথা ওদের নিজেদের ভেতরেই নিজেদের দ্ব›দ্ব। যার ফলে নানা ধরণের মাদক, নিজেদের মধ্যে অস্ত্র, সংঘাত ইত্যাদি ঘটনা পরিবেশ নষ্ট করছে। ভারতকে বলেছি, তারা যেন সহায়তা করে। ভারত ইতিবাচক। সমস্যা হলো মিয়ানমার সরকারের। তারা নিজেরাই নিজেদের দ্ব›দ্ব-সংঘাতে লিপ্ত হয়েছে। কিন্তু ভারত সমসময় মনে করে যে, এটার সমাধান হওয়া উচিত। হ্যাঁ, আমরা মানবিক কারণেই তাদের আশ্রয় দিয়েছি। কিন্তু এখন যে পর্যায়ে যাচ্ছে তাতে আমাদের জন্য বড় বোঝা হয়ে যাচ্ছে।
অনেকের অর্থ পাচারের তথ্য আছে, সামনে নাম আসবে : অর্থ পাচার ও মানি লন্ডারিং বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, অর্থ পাচারকারীদের নজরদারিতে আনা হয়েছে। আমরা তাদের খুঁজে বের করছি। এমন অনেকেরই অর্থ পাচারের তথ্য আছে, অনেক স্বনামধন্যদের ব্যাপারেও আছে। সেগুলো আপনারা (সাংবাদিকরা) লিখবেন কী না-আমার সন্দেহ আছে। দুর্নীতি দমন কমিশন ও ব্যাংকের মাধ্যমে খোঁজ নেয়া হচ্ছে- আসবে সামনে। আর সুইস ব্যাংকে বহু আগেই আমরা তালিকা চেয়েছিলাম, কিন্তু কোনো তালিকা আসে নাই।
তিনি বলেন, মানি লন্ডারিং বন্ধ করার উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। ডলার সংকট বাংলাদেশের একার না, বিশ্বব্যাপী। রাশিয়া যুদ্ধের পর আমেরিকা নিষেধাজ্ঞায় পরিস্থিতি আরো জটিল হয়েছে। ডলার নিয়ে কিছু শ্রেণি খেলতে শুরু করেছিল। সেটা ভালোভাবে মনিটরিং করা হয়েছে বলেই আজকে স্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি করতে পেরেছি। এই সংকট আন্তর্জাতিক বিষয় থেকে এসেছে। বিশ্বব্যাপী এই সংকট সামনে আরো বেশি দেখা দেবে। আমার শঙ্কা হচ্ছে, সারাবিশ্বেই দূর্ভিক্ষ হবে। সেজন্য আমি আগে থেকেই বলে আসছি, আমাদের মাটি আছে, মানুষ আছে, ফসল ফলাও, নিজের খাবার নিজে ব্যবস্থা করো। যেন কারো মুখাপেক্ষী হতে না হয়।
সেভেন সিস্টারের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক আছে : এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সেভেন সিস্টারের সঙ্গে আমাদের সবসময় একটা ভাল সম্পর্ক আছে। সীমানা চুক্তির পরে সবার সঙ্গেই আমি ফোনে কথা বলেছি। আমরা তাদেরকে আম পাঠালাম। তারাও তাদের আনারস-ড্রাগন ফল সব পাঠালো। এ ধরনের ভালো যোগাযোগ সবসময় আমাদের সঙ্গে আছে। তাদের সঙ্গে তো আমাদের সুসম্পর্ক থাকবেই। আমাদের পণ্য বিনিময় থেকে শুরু করে, আমরা বর্ডার হাট করেছি। এতে স্থানীয়রা লাভবান হচ্ছেন।
আমাদের তাঁতীরা লাভবান হবে : জামদানি কূটনীতি নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি খুশি। আমাদের তাঁতীরা লাভবান হবে। তারা কাজ পাবে। সুফল তাদের হাতেই যাবে। আর আমি যখন যেখানেই যাই, আমার নিজের দেশের পণ্যই ব্যবহার করে নিজের দেশকে তুলে ধরার চেষ্টা করি।
ভৌগোলিক কারণেই আমাদের জন্য ট্রানজিট গুরুত্বপূর্ণ : প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিনা মাশুলে ট্রানজিটের সার্বিক বিষয় নিয়ে বলা হয়েছে। সৈয়দপুর এয়ারপোর্ট আঞ্চলিক হাব হবে। সেটি নেপাল, ভুটান ও ভারত ব্যবহার করতে পারে। সেক্ষেত্রে পণ্য পরিবহনেও ট্রানজিট সুবিধা দরকার। কারণ, রোড তৈরি করতে হবে, লোক যাতায়াত করতে হবে। আমাদের ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে যোগাযোগ রাখতে গেলে ট্রানজিট গুরুত্বপূর্ণ। আর ভারতেরও নিজেদের যোগাযোগের সুযোগ, ব্যবসা-বাণিজ্য বাড়তে পারে।
তিনি বলেন, ভুটান, নেপাল, ভারত, বাংলাদেশ এই চারটি দেশের মধ্যে একটা সমঝোতা স্মারক আছে। যদিও ভুটানের পাহাড়ি এলাকার কারণে বড় বড় ট্রাক ঢুকতে দিতে পারে না। তারপরও আমাদের ব্যবসা বাণিজ্য সহজে করতে পারে, সেটা আমাদের পণ্য ভারতে যাক, ভুটানে যাক, নেপালে যাক সেই সুবিধা পাওয়া অথবা নেপাল ও ভুটান থেকে সেই পণ্য আমাদের দেশে আসা। পাশাপাশি আমাদের পোর্ট, চট্টগ্রাম, মোংলা এমনকি এয়ারপোর্টও তারা ব্যবহার করতে পারবে। যেমন- ত্রিপুরা চট্টগ্রাম পোর্ট ও এয়ারপোর্ট ব্যবহার করতে পারে। সিলেট অঞ্চল ব্যবহার করার সুযোগ আছে। শুধু এখানেই সীমাবদ্ধ থাকবে না, মিয়ানমার হয়ে থাইল্যান্ড হয়ে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের সঙ্গে যোগাযোগ, ট্রান্সএশিয়ান রেলওয়ে, হাইওয়ের যে কাজ আমরা করছি, সেটারও একটি সুযোগ সৃষ্টি হবে। সব দেশই লাভবান হবে। দরজা বন্ধ করে রাখলে তো লাভ হবে না।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়