কাগজ প্রতিবেদক : রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর গোলাপবাগে নিজ বাসায় একাই থাকতেন তৃতীয় লিঙ্গের মাকসুদুর রহমান খান ওরফে ডায়না। তার বাসায় কাজ করতেন শোয়েব আক্তার লাদেন নামে এক ব্যক্তি। কাজের সুবাদে লাদেনের সঙ্গে ডায়নার শারীরিক সম্পর্ক গড়ে উঠে। তারা প্রায়ই শারীরিক সম্পর্ক করতেন। এভাবে কেটে যায় প্রায় দুই বছর। এরইমধ্যে আসামি লাদেন বিয়ে করে অবৈধ সম্পর্ক থেকে বেড়িয়ে আসতে চাচ্ছিলেন। কিন্তু লাদেনের এই বিয়ে ও নতুন জীবনকে ডায়না কিছুতেই মেনে নিতে পারছিল না।
অর্থের বিনিময়ে লাদেনের সঙ্গে সম্পর্ক চালিয়ে যেতে থাকেন ডায়না। একপর্যায়ে অবৈধ এই শারীরিক সম্পর্ক থেকে মুক্তি পেতে ডায়নাকে হাতুরি দিয়ে পিটিয়ে হত্যা করে পালিয়ে যায় লাদেন। ওই অবস্থায় লাশটি ১১দিন পড়ে ছিল। পরে দুর্গন্ধ ছড়ালে পুলিশ গত ২৭ আগস্ট লাশ উদ্ধার করে। গতকাল বুধবার ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা মহানগর ওয়ারী বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) জিয়াউল আহসান তালুকদার এসব তথ্য জানান। এর আগে গত সোমবার শেরপুরের নালিতাবাড়ি থেকে শোয়েব আক্তার লাদেনকে গ্রেপ্তার করা হয়। হত্যাকাণ্ডের বর্ণনা তুলে ধরে মঙ্গলবার আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন লাদেন। বর্তমানে কারাগারে আছেন তিনি।
ওয়ারি বিভাগের ডিসি বলেন, ডায়নার ৬ ভাই বোন, সবাই যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক। ডায়না নিজেও সেদেশের নাগরিক। ২ বছর আগে ডায়না দেশে এসে ওই বাসায় বসবাস করছেন। তাই বাংলাদেশে তার কাছের কোনো স্বজন নেই। ডিসি বলেন, লাদেন ডায়নার বাসায় কাজ করতেন। যখনই প্রয়োজন হতো, তখনই ডায়না লাদেনকে ডাকতেন। এভাবেই তাদের মধ্যে
একটি দৈহিক সম্পর্ক গড়ে উঠে। ডায়না তেমন কারো সঙ্গে মিশতেন না। তবে কিছু তরুণ বয়সী ছেলে তার বাসায় মাঝে মধ্যে আসা যাওয়া করতেন বলে লাদেন জানিয়েছে।
ডায়না তৃতীয় লিঙ্গের মানুষ এবং সমকামী ছিলেন জানিয়ে জিয়াউল আহসান তালুকদার বলেন, ১৬ অগাস্ট শারীরিক সম্পর্কের একপর্যায়ে বাসার টেবিলে থাকা হাতুড়ি দিয়ে ডায়নার মাথায় ও হাঁটুতে উপর্যুপরি আঘাত করে মূল ফটক টপকে পালিয়ে যায় লাদেন। একতলা ওই বাড়ির দেয়ালও অনেক উঁচু ছিল। তাই এতদিন মরদেহ পড়ে থাকার পরও আশপাশের কেউ টের পাননি। লাশ উদ্ধারের সময় পুলিশ বাসায় গিয়ে দেখে ডায়নার ৪টা ক্ষুধার্ত পোষা কুকুর তারই মরদেহের মাংস খাচ্ছিল।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।