ভূমির কুতুবকে দেয়া হাইকোর্টের জামিন আপিলে বাতিল

আগের সংবাদ

তৃণমূলে সহিংসতা বাড়ছেই : দুই সপ্তাহে অন্তত ২০টি স্থানে সংঘর্ষ হয়েছে, দলগুলোকে সতর্ক হওয়ার পরামর্শ বিশ্লেষকদের

পরের সংবাদ

সংঘর্ষে চার জেলা রণক্ষেত্র : নারায়ণগঞ্জ মানিকগঞ্জ সিরাজগঞ্জ নেত্রকোনায় বিএনপি-পুলিশ সংঘর্ষ : নিহত ১, আহত দুই শতাধিক

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: সেপ্টেম্বর ২, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ ডেস্ক : দেশের বিভিন্ন এলাকায় গতকাল বৃহস্পতিবার পুলিশের সঙ্গে বিএনপি নেতাকর্মীদের ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছে। দলটির ৪৪ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে কর্মসূচি ঘিরে এসব সংঘর্ষের ঘটনায় নারায়ণগঞ্জে ১ জন নিহত হয়েছেন। তার নাম রাজা আহমেদ শাওন। এছাড়া নারায়ণগঞ্জ, মানিকগঞ্জ, সিরাজগঞ্জ ও নেত্রকোনায় পৃথক সংঘর্ষে ২ শতাধিক আহত হয়েছেন। সংঘর্ষ চলাকালে গুলি-টিয়ারগ্যাস, লাঠিচার্জ ও ইটপাটকেল নিক্ষেপে সংশ্লিষ্ট এলাকাগুলো রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। এসব সংঘর্ষের বিষয়ে পুলিশ ও বিএনপি পরস্পরকে দোষারোপ করেছে। বিএনপির অভিযোগ দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর দিনে তাদের ‘শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি’তে পুলিশ বাধা দেয় এবং বিনা উসকানিতে বেপরোয়া গুলি, টিয়ারগ্যাস নিক্ষেপ ও লাঠিচার্জ করে। এর প্রতিবাদে দুই দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে দলটি। তবে পুলিশ এ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছে, বিএনপি নেতাকর্মীরা বিনা অনুমতিতে কর্মসূচির নামে বিশৃঙ্খলা ও জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করে এবং পরিকল্পিতভাবে পুলিশের ওপর হামলা চালায়।
আমাদের প্রতিনিধিদের পাঠানো প্রতিবেদন :
নারায়ণগঞ্জ : নারায়ণগঞ্জে বিএনপির নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে যুবদলের এক কর্মী নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ২০ পুলিশ সদস্যসহ বিএনপির শতাধিক নেতাকর্মী। তদের মধ্যে আশঙ্কাজনক অবস্থায় পাঁচ নেতাকর্মীকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তোলারাম কলেজ ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ফারুক খান সুজন চোখে গুলিবিদ্ধ হওয়ায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে চক্ষু হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে নগরের ডিআইটি আলী আহমেদ চুনকা সিটি মিলনায়তনের সামনে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ সময় পুলিশের সঙ্গে বিএনপির নেতাকর্মীদের ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার ঘটনায় এলাকা রণক্ষেত্র পরিণত হয়।

পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে শর্টগান ও টিয়ারশেলের গুলি নিক্ষেপ করে। সংঘর্ষ চলাকালে চারটি মোটরসাইকেলে আগুনসহ ২নং রেলগেট এলাকায় পুলিশবক্সে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর করা হয়। ভাঙচুর করা হয় সাত-আটটি যানবাহনও।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গতকাল সকাল ১০টার দিকে বিএনপির ৪৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে জেলা ও মহানগর বিএনপির উদ্যোগে নগরীর ডিআইটি বাণিজ্যিক এলাকায় আলী আহাম্মদ চুনকা পাঠাগারের সামনে র‌্যালি বের করতে নেতাকর্মীরা জড়ো হতে শুরু করে। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে পুলিশ বিএনপির নেতাকর্মীদের র‌্যালি বের করতে বাধা দেয়। এ সময় বিএনপির নেতার্মীদের সঙ্গে পুলিশের ধাওয়া-পাল্টাধাওয়াসহ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। বিএনপির নেতাকর্মীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। পুলিশ লাঠিপেটা করে বিএনপির নেতাকর্মীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়ার চেষ্টা করে। এ সময় পুলিশের সদস্য সংখ্যা তুলনামূলক কম হওয়ায় বিএনপির নেতাকর্মীরা পুলিশের ওপর চাড়াও হয়ে ব্যাপক ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু করলে পুলিশ কিছুটা পিছু হটে গিয়ে ২নং রেলগেট এলাকায় পুলিশ বক্সে আশ্রয় নেয়। কিছু পুলিশ সদস্য চেম্বার রোড দিয়ে পিছু হটে। এই সুযোগে বিএনপির নেতাকর্মীরা পুলিশ বক্সে হামলা চালিয়ে বাপক ভাঙচুর করে এবং বক্সের সামনে থাকা মোটরসাইকেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। খবর পেয়ে নারায়ণগঞ্জ সদর থানা ও পুলিশ লাইন থেকে অতিরিক্ত পুলিশ এসে বিএনপির নেতাকর্মীদের লক্ষ্য করে টিয়ারশেল ও শর্টগানের গুলি ছুড়ে। পুরো ২নং রেলরেগটসহ আশপাশের এলাকায় সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় চারটি মোটরসাইকলে আগুন ও সাতটি যানবাহন ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। রণক্ষেত্রের পাশেই একটি গার্লস স্কুলের পরীক্ষা চলছিল। সংঘর্ষ চলাকালে পুলিশের ছোড়া টিয়ার সেল স্কুলের ভিতরে গিয়ে পরলে অন্তত ৫ জন ছাত্রী অসুস্থ হয়ে পড়ে। তাদের নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। পরে নির্ধারিত সময়ের আগেই স্কুল ছুটি দিয়ে দেয়া হয়।
সংঘর্ষের বিষয়ে জেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক মনিরুল ইসলাম রবি বলেন, প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর র‌্যালি বের করতে বিএনপির নেতাকর্মীরা পাঠাগারের সামনে জড়ো হতে শুরু করে। এ সময় পুলিশ অতর্কিত তাদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে লাঠিপেটা, শর্টগানের গুলি ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করেছে। পুলিশের বেপরোয়া লাঠিপেটায় তাদের একজন গুলিবিদ্ধসহ শতাধিক নেতাকর্মী আহত হয়। তিনি দাবি করেন পুলিশের গুলিতে রাজা আহমেদ শাওন নামের এক যুবদল কর্মী মারা গেছে। তার বাড়ি ফতুল্লার এনায়েত নগর ইউনিয়নের তিন নম্বর ওয়ার্ডে ।
জেলা বিএনপির সদস্য সচিব অধ্যাপক মামুন মাহমুদ বলেন, পুলিশের গুলি ও টিয়ারগ্যাস সেল নিক্ষেপে যুবদল নেতা মো. শাওন নিহত হয়েছেন। আমাদের শতাধিক নেতাকর্মী গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হয়েছে। নারায়ণগঞ্জ তোলারাম কলেজের ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ফারুক খান সুজন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন। এছাড়া জেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক মনিরুল ইসলাম রবি, ছাত্রদলের সহসভাপতি সুলতান মাহমুদ, বিএনপি নেতা শামসুদ্দিন আকনসহ আমাদের অনেকেই গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। তিনি বলেন, বিনা উসকানিতে পুলিশ এ হামলা চালিয়েছে। আমি মনে করি শান্তিপ্রিয় নারায়ণগঞ্জকে অশান্ত করার একটি প্রচেষ্টা।
নিহত রাজা আহমেদ শাওনের বড় ভাই ফরহাদ হোসেন জানান, শাওন ওয়েলন্ডিংয়ের কাজ করতেন। তিনি কোনো রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন না। সকালে স্থানীয় যুবদল ও বিএনপির কর্মীরা তাকে এলাকা থেকে ডেকে নিয়ে আসে। আমার ভাই গুলিবিদ্ধ হওয়ার খবর পেয়ে হাসপাতালে ছুটে এসেছি। পরে এসে দেখি সে নিহত হয়েছে। আমার ভাই যখন গুলিবিদ্ধ হয়েছে তখন বিএনপির নেতাকর্মীরা তাকে ফেলে গেছে। আমার ভাই হারিয়েছি ভাইতো আর পাব না। দেখা যাক এক বিষয়ে কি করা যায়।
এ ব্যাপারে নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগে চিকিৎসক নাজমুল আলম জানান, গুলি বা স্পিøন্টার বিদ্ধ হয়ে শাওন নামে এক যুবক নিহত হয়েছে। তাকে মৃত অবস্থায় কয়েকজন হাসপাতালে নিয়ে আসে। তার বুকের বাম পাশে একটি আঘাতের চিহৃ রয়েছে। এছাড়া সকাল সাড়ে ১১টার দিকে ইটপাটকেল ও গুলিবিদ্ধ অবস্থায় আহত আরো ২০ জনকে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।
নারায়ণগঞ্জ পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা রাসেল বলেন, সমাবেশ করতে হলে পুলিশের কাছ থেকে জেলা প্রশাসকের দপ্তর থেকে পূর্ব অনুমতি প্রয়োজন। পূর্ব অনুমতি না নিয়ে বিএনপি রাস্তা অবরোধ করে সমাবেশ করার চেষ্টা করে। আমরা বার বার অনুরোধ করেছি রাস্তা অবরোধ করে সমাবেশ না করার জন্য। এ অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করে বিএনপির নেতাকর্মীরা পুলিশের ওপর বৃষ্টির মতো ইটপাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকে। পরে তারা ককটেলও চার্জ করে। বিভিন্ন গলির মধ্যে গিয়েও তারা ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে ও ককটেল চার্জ করে। এছাড়া বিভিন্ন অফিস ও প্রতিষ্ঠানে ভাঙচুর করে। কোনো গণতান্ত্রিক দেশে এটি মেনে নেয়ার মতো নয়। তাই জনগণের জানমাল রক্ষার্থে আমরা তাদের সরাতে বাধ্য হয়েছি। এ ঘটনায় ১৫-২০ জন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছে। আহত ৫ পুলিশ সদস্যকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তিনি বলেন, শুনেছি একজন মারা গিয়েছে। তবে তার রাজনৈতিক পরিচয় সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

নেত্রকোনা : প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে যোগ দিতে সদর উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে বিএনপি কর্মীরা আসতে থাকায় শহরের ছোট বাজারস্থ দলীয় কার্যালয়ের সামনের সড়কে সব ধরনের চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পরে শহরের প্রধান এই সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক করতে গিয়ে পুলিশের সঙ্গে বিএনপি কর্মীদের সংঘর্ষ বাঁধে। এই সংঘর্ষে অতিরিক্ত পুলিশ সুপারসহ ১২ পুলিশ সদস্য আহত হয়। এছাড়া বিএনপির ২০-২৫ নেতাকর্মী আহত হয়।
এ ব্যাপারে নেত্রকোনা জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ডা. মো. আনোয়ারুল হক জানান, বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালনকালে পুলিশ দলীয় নেতাকর্মীদের ওপর নির্বিচারে লাঠিচার্জ, টিয়ারশেল ও রাবার বুলেট ছুড়ে। এতে ১২ জন রাবারবুলেট বিদ্ধসহ ২৫ জন নেতাকর্মী আহত হয়। বিষয়টি নিয়ে কথা হলে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ফখরুজ্জামান জুয়েল জানান, বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালনের সময় সদরের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা নেতাকর্মীরা শহরের প্রধান সড়কটি বন্ধ করে রাখে। এতে যানবাহনসহ জনগণের স্বাভাবিক চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এ সময় পুলিশ এসে সড়ক ফাঁকা করতে চাইলে পুলিশের ওপর হামলা চালায় বিএনপির নেতাকর্মীরা। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ টিয়ারসেলসহ কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি বর্ষণ করে। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে, এ ঘটনায় পুলিশ ১৩ জনকে আটক করছে। যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক আছে।
মানিকগঞ্জ : মানিকগঞ্জে পুলিশের সঙ্গে বিএনপির নেতাকর্মীদের সংঘর্ষ হয়েছে। গতকাল বেলা ১১টার দিকে জেলা শহরের খালপাড় এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ সময় ইটপাটকেলের আঘাতে সদর থানার ওসি আবদুর রউফ সরকারসহ তিন পুলিশ সদস্য ও দুই সাংবাদিক আহত হন। এ ছাড়া পুলিশের লাঠিপেটায় বিএনপি ও এর সহযোগী সংগঠনের অন্তত ২৫ নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ কাঁদানে গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করে। সংঘর্ষের ঘটনায় পুলিশ বিএনপির পাঁচ নেতাকর্মীকে আটক করেছে বলে বিএনপির পক্ষ থেকে দাবি করা হয়। এ বিষয়ে পুলিশের পক্ষ থেকে এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক বক্তব্য পাওয়া যায়নি। পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার একপর্যায়ে বিএনপির নেতা–কর্মীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু করেন।
পুলিশ ও বিএনপি সূত্রে জানা গেছে, বিএনপির ৪৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে বেলা ১১টার দিকে শহরের দলীয় কার্যালয়ে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করে জেলা বিএনপি। অনুষ্ঠানে যোগ দিতে বেলা পৌনে ১১টার দিকে বিএনপি ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা শহরের উত্তর সেওতা এলাকা থেকে মিছিল নিয়ে দলীয় কার্যালয়ের দিকে যাচ্ছিলেন। পথে খালপাড় এলাকায় বিএনপির নেতাকর্মীরা পুলিশের বাধার মুখে পড়েন। এ সময় পুলিশের সঙ্গে বিএনপির নেতাকর্মীরা বাকবিতণ্ডায় জড়ান। একপর্যায়ে পুলিশের বাধা উপেক্ষা করে যাওয়ার চেষ্টা করলে পুলিশ নেতাকর্মীদের লাঠিপেটা করে। এতে বিএনপি ও এর সহযোগী সংগঠনের কয়েকজন নেতা–কর্মী আহত হন।
এরপর পুলিশ বিএনপির নেতাকর্মীদের ধাওয়া করে। একপর্যায়ে বিএনপির নেতাকর্মীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু করেন। এতে ইটপাটকেলের আঘাতে সদর থানার ওসি আবদুর রউফ সরকার, কনস্টেবল সাখাওয়াত হোসেন, মো. শাহীন এবং ইনডিপেনডেন্ট টেলিভিশনের প্রতিনিধি আর এস মঞ্জুর রহমান ও বাংলানিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের প্রতিনিধি সাজেদুর রহমান আহত হন।
জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এস এ জিন্নাহ কবীর বলেন, আমাদের গণতান্ত্রিক কর্মসূচিতে পুলিশ অগণতান্ত্রিক আচরণ করছে। পুলিশের লাঠিপেটা ও কাঁদানে গ্যাসের শেলে দলের ২৫ নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। এর মধ্যে তিনজনের অবস্থা গুরুতর। এ ছাড়া পাঁচ নেতাকর্মীকে আটক করা হয়েছে।
সদর থানার ওসি আবদুর রউফ সরকার জানান, আহত দুই কনস্টেবলকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় তিনিও আহত হয়েছেন।
সিরাজগঞ্জ : বিএনপির প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর সমাবেশ শেষে পুলিশ ও বিএনপি কর্মীদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাবার বুলেট ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় পুলিশসহ আহত হয়েছে অন্তত ১০ জন। গতকাল সকালে শহরের ইবি রোডে এ ঘটনা ঘটে।
সিরাজগঞ্জ সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জসিম উদ্দিন জানান, বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে পৌর ভাসানী মিলনায়তনে জেলা বিএনপির উদ্যোগে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশের নিরাপত্তা বিধানের জন্য পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছিল। সমাবেশ শেষে চলে যাওয়ার সময় বিএনপি কর্মীরা নবদ্বীপ পুল এলাকায় বিনা উসকানিতে পুলিশের ওপর ইট পাটকেল নিক্ষেপ করতে শুরু করে। এ সময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ রাবার বুলেট ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে। সংঘর্ষে পুলিশসহ ১০ জন আহত হন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
এর আগে জেলা বিএনপির সমাবেশ চলাকালে রাস্তায় তল্লাশি চালিয়ে ধারালো অস্ত্রসহ এক ছাত্রদল কর্মীকে আটক করা হয়। জেলা বিএনপি কার্যালয় এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়