উদ্ধার করা হয়েছে সুনামগঞ্জে আটকা পড়া ঢাবির ২১ শিক্ষার্থীকে

আগের সংবাদ

আশ্রয়-খাবার নেই, ত্রাণ নামমাত্র : সিলেট-সুনামগঞ্জে বন্যার ভয়ংকর নির্মমতা > দুই জেলায় তিনজনের মৃত্যু > সিলেটের সঙ্গে যোগাযোগ চালু

পরের সংবাদ

অ্যান্টিগায় পেস স্বর্গে মিরাজ ঝলক

প্রকাশিত: জুন ১৯, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ১৯, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : উইন্ডিজের কন্ডিশন সব সময় পেসারদের জন্য সহায়ক। অ্যান্টিগায় বাংলাদেশকে ১০৩ রানে প্রথম ইনিংসে গুটিয়ে দিতে উইন্ডিজের চার পেসার অগ্রণী ভূমিকা পালন করে। সেই অ্যান্টিগায় বাংলাদেশের অফ স্পিনার মেহেদী হাসান মিরাজ টপাটপ চার উইকেট তুলে নিয়ে চমক দেখিয়েছেন। বাঁ-হাতি স্পিনার হিসেবে খোদ অধিনায়ক সাকিব আল হাসান থাকায় অ্যান্টিগা টেস্টে একাদশে জায়গা হয়নি তাইজুলের। এই টেস্টে সাইড বেঞ্চ থেকেই মিরাজকে টোটকা দিয়েছেন তাইজুল। তাতে সফলও হয়েছেন মিরাজ। এই অফ স্পিনারের বদৌলতেই ক্যারিবিয়ানদের প্রথম ইনিংসে ২৬৫ রানে থামাতে সক্ষম হয়েছে টাইগাররা। দারুণ বোলিংয়ে ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছেন মিরাজ। স্পিনার মেহেদী হাসান মিরাজের টেস্ট ক্যারিয়ারে একমাত্র সেঞ্চুরিটি ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে। টেস্ট ও ওয়ানডের সেরা বোলিংয়েও প্রতিপক্ষের জায়গায় লিখতে হবে ওয়েস্ট ইন্ডিজের নামই। অ্যান্টিগা টেস্টেও প্রথম ইনিংসে সেই মিরাজই বাংলাদেশ দলের সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি। ২২.৫ ওভারে ৫৯ রানে ৪ উইকেট নিয়েছেন এ অফ স্পিনার। পেসারদের সঙ্গে জুটি বেঁধে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ২৬৫ রানে অলআউট করতে মূল ভূমিকা পালন করেন তিনিই।
অ্যান্টিগা টেস্টের দ্বিতীয় দিন শেষে নিজের বোলিং পারফরম্যান্স নিয়ে ব্যাখ্যায় অবশ্য নতুন কিছু বলেননি মিরাজ। দেশের বাইরের সাফল্যের সেই পুরনো কৌশলেই ধরা দিয়েছে সাফল্য, মনে করেন তিনি।
দিনের খেলা শেষে সাবেক ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেট ড্যারেন গঙ্গার প্রশ্নের উত্তরে মিরাজ বলেছেন, আমার কাছে মনে হয় উইকেট কিছুটা ধীরগতির ছিল। এই উইকেটে শুধু একই জায়গায় বল করে যাওয়াটা সঠিক সিদ্ধান্ত। এতে করে ব্যাটসম্যানদের আউট হওয়ার একটা সম্ভাবনা থাকে। আমি আসলে তখন ডট বল দেওয়াতে মনোযোগ দিয়েছি।। এরপরই সাফল্য এসেছে। প্রথম দিন বল হাতে একদমই সুবিধা করতে পারছিলেন না মেহেদী হাসান মিরাজ। ওভারপ্রতি চার রান খরচ করে ৭ ওভারে দিয়ে বসেন ২৮ রান। অন্য বোলারদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ের দিন মিরাজের এমন খরুচে প্রদর্শনী ব্যাকফুটেই ঠেলছিল বাংলাদেশকে। তবে টেস্টের দ্বিতীয় দিনে দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছেন ২৪ বছর বয়সে এ অফ স্পিনার। অর্থাৎ দ্বিতীয় দিন ১৫.৫ ওভারে মাত্র ৩১ রান দিয়েই নিয়েছেন ৪টি উইকেট। যেখানে ছিল ৪টি মেইডেন ওভারও। দুই দিনের দুই রকম প্রদর্শনীর পেছনে মুমিনুল হক ও তাইজুল ইসলামকে বড় কৃতিত্ব দিয়েছেন মিরাজ।
এই ম্যাচে দলে না থাকলেও সতীর্থকে পরামর্শ দিয়ে ঠিকই অবদান রেখেছেন বাঁ-হাতি স্পিনার তাইজুল। দিনের খেলা শেষে মিরাজ বলেছেন, প্রথম দুই স্পেলে আমি সঠিক জায়গায় বল করিনি। তাই হতাশ ছিলাম। আমার মনোযোগ ফেরানো প্রয়োজন ছিল।
তিনি আরো যোগ করেন, ‘মুমিনুল (হক) ও তাইজুল (ইসলাম) আমাকে সাহায্য করেছে। তারা আমাকে অনুপ্রাণিত করেছে ও সমর্থন দিয়েছে। ঘুরে দাঁড়াতে সাহায্য করায় তাদের প্রতি আমি খুবই কৃতজ্ঞ।’
এ সময় নিজের বোলিংয়ের বিশ্লেষণ করে তিনি আরো বলেন, উইকেট খানিক ধীরগতির। তাই আপনি যদি টানা সঠিক জায়গায় বোলিং করেন তাহলে সুযোগ আসবেই। তাই আমি (দ্বিতীয় দিন) বেশি বেশি ডট বল করতে চাচ্ছিলাম।
মিরাজ আরো বলেন, প্রথম দিন আমি উইকেটের জন্য বল করছিলাম। এটিই সমস্যা হয়ে যায়। পরে আমি রান কমিয়ে বোলিং শুরু করি। আমার মনে হচ্ছিল ওভারপ্রতি দুই-আড়াই রান করে দিলেই সুযোগ পাব। এসব জিনিসই আমার পক্ষে কাজ করেছে।
উইন্ডিজে টেস্ট ম্যাচে নতুন বল বরাবরই চ্যালেঞ্জিং। সেখানে সাদা পোশাকে যে ডিউক বলে খেলা হয়, যাতে সুইং থাকে বেশি সময় ধরে। সচরাচর যাতে অভ্যস্ত নয় বাংলাদেশ দল। অ্যান্টিগার যে ভেন্যুতে সিরিজের প্রথম টেস্ট হচ্ছে, সেখানে এর আগে ৪৩ রানে গুটিয়ে যাওয়ার বিব্রতকর রেকর্ডও আছে বাংলাদেশ দলের। চলমান টেস্টেই তো প্রথম ইনিংসে দল অলআউট হয়েছে ১০৩ রানে। টপ অর্ডার যেখানে ব্যর্থ, সেখানে আচমকা দ্বিতীয় ইনিংসে তিন নম্বরে ব্যাট করতে নামেন মেহেদী হাসান মিরাজ।
দ্বিতীয় দিনের শেষ সেশনে তামিম ইমবাল আউট হলে ব্যাট হাতে নামেন তিনি। তখন দিনের খেলার বাকি আরো ১০ ওভার। অথচ টেস্টে এর আগে এত উপরে খেলেননি তিনি। একবার পাঁচ নম্বরে ব্যাট করার অভিজ্ঞতা আছে। বেশির ভাগ সময়ই ৭, ৮ আর ৯ নম্বরে খেলেন। তবে তাকে এত আগে নামানোর কারণ কী? দ্বিতীয় দিনের খেলা শেষে এর ব্যাখ্যা দিয়েছেন মিরাজ নিজেই।
মিরাজ বলেন, আমরা আসলে মূল উইকেটগুলো হারাতে চাচ্ছিলাম না। ৪৫ মিনিটের মতো বাকি ছিল দিনের। যে কারণে আমি উপরে উঠে আসি। আমার জন্য দারুণ সুযোগ ছিল মিডল অর্ডারে রান করার। কিন্তু আমি সেটা করতে পারিনি। আশা করছি, এরপর সুযোগ এলে কাজে লাগাব।’
বাংলাদেশ দলকে প্রথম ইনিংসে ১০৩ রানে গুটিয়ে দিয়ে নিজেদের প্রথম ইনিংসে ২৬৫ রানের সংগ্রহ পায় উইন্ডিজ। এতে তাদের লিড দাঁড়ায় ১৬২ রানের। পরে দ্বিতীয় দিনের খেলা শেষে ২ উইকেট হারিয়ে স্কোর বোর্ডে ৫০ রান তুলে সাকিব বাহিনী। তৃতীয় দিন টাইগাররা তাদের সংগ্রহ কত দূর নিয়ে যেতে পারে তাই এখন দেখার বিষয়।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়