মাদকবিরোধী অভিযানে রাজধানীতে গ্রেপ্তার ৪৪

আগের সংবাদ

উদ্ধারের অপেক্ষা আর ত্রাণের আকুতি : পানিবন্দি লাখ লাখ মানুষ > ভেসে উঠছে বানভাসি মানুষের লাশ > এখনই সচল হচ্ছে না ওসমানী বিমানবন্দর

পরের সংবাদ

আশ্রয়-খাবার নেই, ত্রাণ নামমাত্র : সিলেট-সুনামগঞ্জে বন্যার ভয়ংকর নির্মমতা > দুই জেলায় তিনজনের মৃত্যু > সিলেটের সঙ্গে যোগাযোগ চালু

প্রকাশিত: জুন ২০, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ২০, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

অভিজিৎ ভট্টাচার্য্য ও ফারুক আহমেদ, সিলেট থেকে : আশ্রয়ের অভাব, খাবার নেই, ত্রাণ নেই, বিদ্যুৎ নেই- চারদিকে অন্ধকারের মধ্যে ভয়াবহ বিপর্যয়ে পড়েছে সিলেট ও সুনামগঞ্জের বিস্তীর্ণ অঞ্চল। গত তিন দিন ধরে পানির নিচে একের পর এক জনপদ। আক্রান্ত জনপদের খানিকটা ঘুরে বন্যার ভয়ংকর নির্মমতা দেখা গেছে। বিশেষ করে খাবার ও পানীয় জলের ভীষণ সংকট দেখা দিয়েছে। সিলেটে বন্যার পানি কিছুটা কমলেও সুনামগঞ্জের অবস্থা একই রকম রয়েছে। সিলেট ও মৌলভীবাজারের কয়েকটি উপজেলা নতুন করে বন্যাক্রান্ত হয়েছে। আর এদিকে সুনামগঞ্জ ও মৌলভীবাজারে ৩ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। সংশ্লিষ্টরা বলেন, গতকাল থেকে ঢাকার সঙ্গে সিলেটের রেল ও সড়ক যোগাযোগ ফের চালু হয়েছে। সিলেট বিমানবন্দরের রানওয়ে এখনো পানির নিচে থাকায় বিমান চালু হয়নি। তবে সুনামগঞ্জের সঙ্গে এখনো সব যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন।
সিলেটের জেলা প্রশাসক মো. মজিবর রহমান গতকাল রবিবার সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, সিলেটে বন্যার পানি কমতে শুরু করেছে। আশা করা যায়, বৃষ্টি না হলে আগামীকাল সোমবার থেকে সিলেটে পরিস্থিতির আরো উন্নতি ঘটবে। পর্যাপ্ত ত্রাণ এবং শুকনো খাবারের প্যাকেট বন্যাদুর্গতদের মধ্যে বিতরণ করা হচ্ছে। তবে আশ্রয়কেন্দ্র ঘুরে জেলা প্রশাসকের এই দাবির সত্যতা সবক্ষেত্রে পাওয়া যায়নি। আশ্রয়কেন্দ্রে খাবারের জন্য হাহাকার রয়েছে।
সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ এবং সুনামগঞ্জ সড়কের লামাকাজি পর্যন্ত গতকাল দিনভর ঘুরে লোকালয়ের যতটুকু ভেতরে যেতে পারা গেছে, তাতেই চোখে পড়েছে বানভাসি মানুষের দুর্ভোগ। সবচেয়ে বেশি কষ্টে আছেন গ্রামাঞ্চলের বন্যাক্রান্ত মানুষ।

পরিস্থিতি এতই ভয়াবহ, আক্রান্ত এলাকায় গণমাধ্যমকর্মী ও প্রশাসনের লোকজনই গত তিন দিনেও পৌঁছাতে পারেননি। যোগাযোগ ব্যবস্থা পুরোপুরি ভেঙে পড়েছে। তবে গতকাল থেকে সেনাবাহিনী ও নৌবাহিনীর সদস্যরা সুনামগঞ্জের গ্রামাঞ্চলে নৌকা করে যাওয়ার রাস্তা শনাক্ত করতে পেরেছেন। এবার তারা উদ্ধার তৎপরতা চালাবেন। তাদের কাজকর্ম দেখতে গতকাল সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ ঘুরে গেছেন সেনাপ্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ। মঙ্গলবার বন্যাক্রান্ত এলাকা দেখতে আসছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সরজমিন দেখা গেছে, সুনামগঞ্জে কোথাও দাঁড়ানোর মাটি নেই। এখনো ৪ থেকে ৬ ফুট পানিতে তলিয়ে আছে পুরো এলাকা। দোকানপাট, অফিস-আদালত সব জায়গায় পানি আর পানি। নৌকা ছাড়া যাতায়াতের কোনো সুযোগ নেই। স্কুল-কলেজ, মসজিদ, অফিস, আদালত, বাড়ির ছাদ, উঁচু সেতুসহ বহুতল ভবনগুলোতে কয়েক হাজার মানুষ আশ্রয় নিয়েছে। খেয়ে না খেয়ে দিন কাটাচ্ছেন বানভাসি মানুষ। কোনো কোনো স্থানে এক ঘরে ২০ থেকে ৩০ জন পর্যন্ত আশ্রয় নিয়েছেন। একে অন্যের জন্য এগিয়ে এসেছে মানুষ। যাদের উঁচু বাড়ি বা বহুতল ভবন আছে, তারা অন্যদের আশ্রয় ও খাবার দিয়ে সহায়তা করছেন। বহুতল প্রতিটি বাড়ি যেন একেকটি আশ্রয়কেন্দ্র।
সুনামগঞ্জে চার দিন ধরে বিদ্যুৎ নেই। ফোনের নেটওয়ার্কও ঠিকমতো কাজ করছে না। বিচ্ছিন্ন এই জনপদে এখন খাবার ও বিশুদ্ধ পানির চরম সংকট। মোমবাতি পাওয়া যাচ্ছে না। মানুষ ইচ্ছা করলেও জিনিসপত্র কিনতে পারছেন না। সব দোকানপাট, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান তলিয়ে আছে। মানুষের এখন সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন খাবার আর বিশুদ্ধ পানি। একে তো জিনিসপত্র নেই, তার ওপর রান্নাবান্নারও সমস্যা। বাসাবাড়ির চুলা পানির নিচে।
সড়কে আশ্রয় নেয়া বানভাসিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আগের দফা বন্যার মধ্যে গত বৈশাখে তারা বোরো ধানের ফসল হারিয়েছেন। তার মধ্যেও যেটুকু ফসল ঘরে তুলতে পেরেছিলেন এবারের বন্যায় সেগুলোও তারা রক্ষা করতে পারেননি। বানের পানি তাদের ঘরবাড়ি, আসবাবপত্র, গরু, ছাগল, হাঁস-মুরগি সবকিছু ভাসিয়ে নিয়ে গেছে। পরিস্থিতি এতই সঙ্গীন, খাবারের কথা ভুলে গিয়ে তারা সহায় সম্বল নিয়ে আহাজারি করছেন বেশি। তারা বলেছেন, শহরের উঁচু জায়গা থেকে পানি গতকাল কিছুটা কমলেও লোকালয় এখনো পানির নিচে।
ভোরের কাগজের দিরাই প্রতিনিধি জয়ন্ত কুমার সরকার জানান, এই বিপদ থেকে বাঁচার জন্য পানির মধ্য দিয়েই নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে গিয়ে গতকাল সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার তাড়ল ইউনিয়নে এক বৃদ্ধ ও এসএসসি পরীক্ষার্থী পানিতে ভেসে গেছেন। এখন পর্যন্ত তাদের দেহ উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। তাদের নাম-পরিচয়ও জানা যায়নি। অন্যদিকে, মৌলভীবাজরের বড়লেখা উপজেলায় পাহাড়ধসে উত্তর শাহবাজপুর ইউনিয়নের আয়েশাবাগ চা বাগানে ১ জন নিহত হয়েছেন বলে খবর পাওয়া গেছে।
জানতে চাইলে সুনামগঞ্জের মধ্যনগর উপজেলার চামড়দানী ইউনিয়নের সাড়ারকোনা গ্রামের কৃষক অধীর সরকার জানান, গ্রামের অধিকাংশ জায়গা জলমগ্ন। টানা বৃষ্টি ও বন্যার পানির কারণে গ্রামরক্ষা বাঁধ হুমকির মুখে পড়েছে। ফলে গবাদিপশু ও ভিটেমাটি রক্ষায় তারা প্রাণপণে লড়ে যাচ্ছেন। এত দুর্যোগের মধ্যেও তারা জনপ্রতিনিধি কিংবা প্রশাসনের কাউকে পাশে পাননি। সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত কয়েকদিন ধরে দুর্যোগ চললেও কোথাও কোনো জনপ্রতিনিধির দেখা পাননি আক্রান্তরা। তবে সরকারদলীয় সংসদ সদস্য শামীমা শাহরিয়ার গতকাল রবিবার সকালে নেত্রকোনা হয়ে সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা ও জামালগঞ্জ উপজেলা ঘুরে দেখেছেন। জানতে চাইলে গতকাল রাতে তিনি ভোরের কাগজকে বলেন, বন্যায় মানুষের ক্ষতির শেষ নেই। ঘর ডুবে গেছে। আসবাবপত্র, ধান ভাসিয়ে নিয়ে গেছে। বহু সংখ্যক হাঁস-মুরগি মরে গেছে। এখন যেমন তাদের ত্রাণ দরকার; তেমনি বন্যার পানি নামার পর তাদের ঘরবাড়ি মেরামতে সাহায্যের দরকার হবে। আমি দেখে গেলাম, সংসদে এসবের বর্ণনা দিয়ে বিশেষ সাহায্য চাইব। বানভাসিরা সরকারকে দুষছেন না উল্লেখ করে তিনি বলেন, তাদের যত ক্ষোভ জনপ্রতিনিধিদের ওপরে। কারণ এমন ভয়ংকর দুর্যোগেও তাদের দেখা নেই।
এদিকে গতকাল কোম্পানীগঞ্জ ঘুরে দেখা গেছে, ভয়াবহ বিপর্যস্ত অবস্থায় পড়েছে এলাকাটি। বন্যার পানিতে ডুবে গেছে বাড়িঘর, সড়ক। যতদূর চোখ যায় পানি আর পানি। বিদ্যুৎ নেই। মোবাইল সংযোগ নেই। ক্রমাগত পানি বাড়ায় দিশাহারা আশ্রয়হীন মানুষ। তারা উঁচু আশ্রয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। কিন্তু চারদিকে পানি থাকায় সেই চেষ্টাও সফল হচ্ছে না। বিশুদ্ধ খাবার পানি ও শুকনা খাবারের সংকট দেখা দিয়েছে। মানুষজন বাঁচার আকুতি করছেন। হাঁস-মুরগি মরে ভাসছে। বন্যায় দোকানপাট বন্ধ থাকায় নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী কেনা যাচ্ছে না। জরুরি সেবাও বন্ধ হয়ে গেছে। নিম্নাঞ্চলের অনেক মানুষ নিজেদের সম্বল রক্ষায় ঝুঁকি নিয়ে পরিবারসহ যুদ্ধ করছেন। খেয়ে না খেয়ে দিন পার করছেন। কারো কারো বাড়িতে রান্না করা খাবার তো দূরের কথা একটু বিশুদ্ধ পানিও জুটছে না। আর কিছু মানুষ আশ্রয় চেয়েও পাচ্ছেন না।
কোম্পানীগঞ্জের শেষ সীমানা রায়পুর গ্রামে একটি হতদরিদ্র পরিবার সব হারিয়ে ৪ হাজার টাকা নৌকা ভাড়া করে উপজেলার সালুটিকর কলেজের কাছে এসে পৌঁছেছে। গতকাল তারা এ প্রতিবেদককে জানান, গত তিন দিন ধরে উপোস ছিলেন। এখানে আসার পর একজন কিছু খাবার কিনে দিয়েছেন।
বন্যাক্রান্তদের উদ্ধারে নিয়োজিত ১১ পদাতিক ব্রিগেডের ক্যাপ্টেন সালাহউদ্দিনও বলেছেন, সুনামগঞ্জের পর বন্যার ভয়াবহতা কোম্পানীগঞ্জে সবচেয়ে বেশি। গত তিন দিন ধরে সেনাবাহিনীর লোকজনই আক্রান্ত এলাকায় যেতে পারছেন না। তবে গতকাল কিছু এলাকায় তারা গিয়েছেন। সুনামগঞ্জে প্রায় ৩০ লাখ লোক আক্রান্ত হলেও এখন পর্যন্ত উদ্ধার হয়েছে মাত্র দুই হাজার লোক। তার মতে, যোগাযোগব্যবস্থা চালু হলেই তারা উদ্ধার কাজে আরো বেশি তৎপর হতে পারবেন।
সুনামগঞ্জ সড়ক ধরে টুকেরবাজার, লামাকাজি, গোবিন্দগঞ্জ পার হয়ে জাউয়া বাজারের কাছে গিয়ে দেখা গেছে, একটু উঁচু জায়গায় ৬০ ফুট বাই ২০ ফুটের একটি ঘরে প্রায় দেড়শ জন মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন। গতকাল সেনাবাহিনীর লোকজন তাদের উদ্ধার করে আশ্রয়কেন্দ্রে পাঠিয়েছে, সঙ্গে খাবারও দিয়েছে। তাদের উদ্ধার করা গেলেও গ্রামের ভেতরে কেউ কেউ এখনো গাছের ডালে, ভাসতে থাকা ঘরের চালে আশ্রয় নিয়ে আছে। এর মধ্যেই শুরু হয়েছে ডাকাত আতঙ্ক। গতকাল সেনাবাহিনীর উদ্ধারকারী দলের সদস্যরাও স্বীকার করেছেন, সুনামগঞ্জের এলাকাজুড়ে ডাকাত দলের বিচরণ রয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে মসজিদের মাইক দিয়ে বারবার সতর্ক থাকতে বলা হচ্ছে।
আশ্রয়কেন্দ্রে খাবার সংকট : বন্যায় অনেকেই পানিবন্দি। অনেকেই স্থান নিয়েছেন আশ্রয়কেন্দ্রে। সিলেট সিটি করপোরেশন (সিসিক) ৩২টি আশ্রয়কেন্দ্র খুলেছে। এসব আশ্রয়কেন্দ্রে খাবার বা পানীয় জলের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। সিটি করপোরেশন স্থানীয় কাউন্সিলরদের দেখাশোনার দায়িত্ব দিলেও বেশির ভাগ ক্ষেত্রে তাদের দেখা নেই। শুকনো খাবার সংগ্রহ করতে ব্যর্থ সিসিকও। সবমিলিয়ে সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে সেভাবে দেখভাল করা হচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছেন অনেকে। নগরীর মীরাবাজারে কিশোরী মোহন স্কুলের আশ্রয়কেন্দ্রে বেশ কয়েকজন বন্যাদুর্গত উঠেছেন। এখানেও খাদ্য সংকট রয়েছে। পানীয় জলের জন্য সিটি করপোরেশনের একটি পানির ট্যাংক রাখা হয়েছে সামনে। তবে কোমর বা বুক সমান পানি ঢিঙিয়ে অনেকে সেখানে যেতে পারছেন না।
নগরীর ৩২টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলার কথা জানালেও সেখানে কী পরিমাণ মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন, তাও নির্দিষ্ট করে বলতে পারেননি আশ্রয়কেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা সিসিকের নির্বাহী প্রকৌশলী (বিদ্যুৎ ও পরিবহন শাখা) মো. রুহুল আলম। বানভাসি মানুষের অভিযোগ, গত বুধবার থেকে সিলেটে এক মাসের ব্যবধানে দ্বিতীয় দফায় বন্যা দেখা দেয়। এর মধ্যেও পর্যাপ্ত ত্রাণ তৎপরতা চালাতে পারেনি স্থানীয় প্রশাসন। অধিকাংশ জনপ্রতিনিধিকেও তারা পাশে পাচ্ছে না। যেখানকার খবর পাওয়া যায়, সেখানেই ত্রাণ নেই। খাবার ও বিশুদ্ধ পানি না পেয়ে দুর্গত মানুষের ক্ষোভ বাড়ছে। ঘর পানিতে ডুবে যাওয়ায় অনেকেরই মাথা গোঁজার ঠাঁই নেই। বিদ্যুৎহীন হয়েও অনেকে দুর্বিষহ সময় কাটাচ্ছে। গভীর নলকূপ পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় বন্যাকবলিত পুরো এলাকায় বিশুদ্ধ পানির জন্য হাহাকার চলছে। নগরীর শেখঘাটের ময়নুন্নেছা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রের দুটি ভবনে বসবাস করছে অর্ধশতাধিক পরিবার। নগরের শেখঘাট, কুয়ারপাড়, বিলপাড়সহ কয়েকটি এলাকা থেকে বাড়িঘর ছেড়ে এসে লোকজন উঠেছেন এই কেন্দ্রে। অনেকটা গাদাগাদি করে বসবাস করছেন লোকজন। আশ্রয়কেন্দ্রে থাকা কুয়ারপাড়ের তসলিমা বেগম জানিয়েছেন- গত দুই দিন ধরে তারা অবস্থান করছেন। আশপাশের লোকজন রান্না করা খাবার কখনো দিচ্ছেন, কখনো দিচ্ছেন না। দিনে এক বেলাও তারা খাবার পাচ্ছেন না। প্রশাসনের কেউ এসে ত্রাণ দেয়নি বলে জানিয়েছেন তিনি। আব্দুস শুকুর নামের আরো এক বন্যার্ত জানান, তার ঘরে কোমর পানি। স্ত্রী, সন্তানদের নিয়ে আশ্রয়কেন্দ্রে উঠেছেন। আজ সকালে এসে কয়েকটি পরিবার নতুন করে উঠেছে। শেখঘাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ঘাষিটুলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ কয়েকটি আশ্রয়কেন্দ্র পরিদর্শনকালে এমন চিত্রই চোখে পড়ে। স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলররা জানিয়েছেন, কিছু কিছু আশ্রয়কেন্দ্রে শুকনো খাবার দেয়া হচ্ছে। এখনো সরকার থেকে পর্যাপ্ত ত্রাণ আসেনি। তবে রান্না করা খাবার পৌঁছে দেয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
১০নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তারেক আহমদ ও ১২নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সিকন্দর আলী জানান, আশ্রয়কেন্দ্রেও মানুষের ঠাঁই হচ্ছে না। পানিবন্দি লোকজনও জীবন বাঁচাতে এখন আশ্রয়কেন্দ্রে ছুটছেন। ফলে আশ্রয়কেন্দ্রে আসা লোকজনের সারি দীর্ঘ হচ্ছে। নগরের বাইরে সিলেট জেলায় সাড়ে ৪০০ আশ্রয়কেন্দ্র রয়েছে। এসব আশ্রয়কেন্দ্রে মানবেতর জীবন কাটাচ্ছেন বন্যার্তরা। দুশ্চিন্তা কাটছে না তাদের। অনেক আশ্রয়কেন্দ্রে গবাদিপশু ও মানুষ একসঙ্গে বসবাস করছে।
সিলেটের ডিআইজি (প্রিজন্স) মো. কামাল আহমেদ গতকাল সেনাবাহিনীর উদ্ধারকারী দলের সদস্যদের কাছে বার্তা পাঠিয়ে বলেছেন, কয়েদিদের বিশুদ্ধ খাবার পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। তারা যেন তাড়াতাড়ি পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট দিয়ে সহায়তা করে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়