অনলাইন প্রতারণা : পার্সেলে ছেঁড়া কাপড় পাঠিয়ে মাসে আয় ৩৫ লাখ টাকা

আগের সংবাদ

কালবৈশাখীর তাণ্ডবে ৭ জনের প্রাণহানি : স্পিডবোট ডুবিতে নিখোঁজ তিন, বাড়িঘর-ফসলের ব্যাপক ক্ষতি

পরের সংবাদ

সংঘর্ষের সূত্রপাত যেভাবে

প্রকাশিত: এপ্রিল ২০, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: এপ্রিল ২০, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : রাজধানীর নিউমার্কেট এলাকায় ঢাকা কলেজ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ব্যবসায়ীদের দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনার সূত্রপাত হয় ব্যবসায়ীদের অন্তর্দ্ব›েদ্বর কারণেই। অনেক ব্যবসায়ী শিক্ষার্থীদের খাবারের বিল না দেয়ার বিষয়টি সামনে আনলেও ইফতারসামগ্রী বিক্রির জন্য টেবিল বসানোর জায়গা দখলকে কেন্দ্র করে গত শুক্রবার মনোমালিন্য তৈরি হয় একই মালিকের দুই ফাস্টফুড দোকানের মধ্যে। তারাই প্রভাব খাটাতে ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগের বেশ কিছু সদস্যকে ডেকে আনে। তারা ব্যবসায়ীদের ওপর চড়াও হলে ব্যবসায়ীরাও তাদের মারধর করে।
এরপর ওই শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে গিয়ে সত্য ঘটনা আড়াল করে বিষয়টি অন্যভাবে উপস্থাপন করলে দফায় দফায় সংঘর্ষ শুরু হয়। একপর্যায়ে নিউমার্কেটের আশপাশের মার্কেটের ব্যবসায়ীরাও সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। একাধিক ব্যবসায়ী ও শিক্ষার্থী নাম প্রকাশ না করার শর্তে ভোরের কাগজকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। ব্যবসায়ীরা জানান, নিউমার্কেটের ৪ নাম্বার গেট দিয়ে প্রবেশ করলেই ডান পাশের ২য় দোকানটি ওয়েলকাম ফাস্টফুড এবং সরু গলির বিপরীত পাশেই ক্যাপিটাল ফাস্টফুড। এই দুই দোকানের মালিক নিউমার্কেট থানা বিএনপির সভাপতি এডভোকেট মকবুল হোসেন সরদার। তার আপন ভাই শহিদুল ক্যাপিটাল ফাস্টফুড ও চাচাতো ভাই রফিক ওয়েলকাম ফাস্টফুড পরিচালনা করেন। প্রতিদিন ইফতারের আগে প্রতিটি ফাস্টফুডের দোকানের সামনে চেয়ার-টেবিল বসিয়ে ইফতার বিক্রি করা হয়। মূলতো এই টেবিল বসানোর জায়গা নিয়ে শুক্রবার বিকালে দুই চাচাতো ভাই শহিদুল ও রফিকের মধ্যে দ্ব›েদ্বর জেরে ঘটনার সূত্রপাত। প্রভাব খাটাতে ওয়েলকাম ফাস্টফুড গত সোমবার ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগের ৮-১০ সদস্যকে ডেকে আনে। তারা নিউমার্কেটে প্রবেশ করেই আতর্কিতভাবে ক্যাপিটাল ফাস্টফুডের কর্মচারীদের মারধর করতে থাকে।
ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীরা দোকানে অকারণে হামলা চালিয়েছে ভেবে আশপাশের ব্যবসায়ীরা ওই শিক্ষার্থীদের মারধর করে। ব্যবসায়ীদের কাছে মারধরের শিকার

হয়ে ক্যাম্পাসে ফিরে বিষয়টি অন্যভাবে উপস্থাপন করে ওই শিক্ষার্থীরা। পরে ঢাকা কলেজের ১৫০-২০০ শিক্ষার্থী নিউমার্কেটে হামলা চালায়। পাল্টা হামলা চালায় ব্যবসায়ীরাও। দুই পক্ষের ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার একপর্যায়ে আশপাশের সব মার্কেটের ব্যবসায়ী ও কর্মচারীরা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এরপর থেকে দফায় দফায় সংঘর্ষ চলতেই থাকে।
ওয়েলকাম ও ক্যাপিটাল ফাস্টফুডের আশপাশের দোকানদাররাও ওই দুই দোকানে ঝামেলা হওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেছেন। তবে, ফাস্টফুড শপ দুটির সংশ্লিষ্ট কাউকেই দোকানে পাওয়া যায়নি। অনেকে অভিযোগ করেছেন, ওয়েলকাম ফাস্টফুডটি বিএনপি নেতা মকবুলের দখলে নেয়া। এটি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগের একটি পক্ষকে নিয়মিত চাঁদা দেয়া হতো। ঢাকা নিউমার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির সহসভাপতি আশরাফ উদ্দিন আহমেদ জানান, দুই দোকানের দ্ব›েদ্ব এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে বলে আমরাও শুনেছি। তবে এখনো আমরা নিশ্চিত নই কীভাবে ঘটনার সূত্রপাত হয়েছে। বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখছি।
এদিকে, অনেক দোকানির অভিযোগ, ঢাকা কলেজের কয়েকজন শিক্ষার্থী ইফতারের টাকা না দেয়ায় এ ঘটনার সূত্রপাত হয়েছে। এর প্রতিবাদ করায় শিক্ষার্থীরা লাঠি ও অস্ত্র নিয়ে ব্যবসায়ীদের মারধর করেন। শহীদুল ইসলাম মনি নামের এক ব্যবসায়ী বলেন, প্রায়ই চাঁদা আদায় নিয়ে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের বাকবিতণ্ডা হয়। শিক্ষার্থীরা হাজার টাকার কাপড় ৫০/১০০ টাকায় নিতে চান। এসব নিয়ে মাঝে মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়। আবার কখনো খেয়ে টাকা দেন না শিক্ষার্থীরা। এবারো হয়তো এমন ঘটনা ঘটেছে। যদিও এবারের সংঘর্ষের ঘটনায় খাবারের বিল না দেয়া ও কম টাকায় পণ্য কেনার বিষয়ে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পাওয়া যায়নি।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়