সেশনজট নিরসনে গ্রীষ্মকালীন ছুটি কমাল ঢাবি

আগের সংবাদ

কী নির্দেশনা পেলেন ডিসিরা : জনগণের সেবক হতে হবে > খাদ্য নিরাপত্তা-বাজার স্থিতিশীল রাখা > সাম্প্রদায়িকতা-জঙ্গিবাদ প্রতিরোধ

পরের সংবাদ

ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম, গবেষণা পরিচালক, সিপিডি : কাঙ্ক্ষিত পরিবেশ সৃষ্টি না হলে সুফল পাব না

প্রকাশিত: জানুয়ারি ২০, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ২০, ২০২২ , ১২:০২ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : সামগ্রিকভাবে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে দৃশ্যমান কোনো পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে না। বিশেষ করে বড় শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোয় যে ধরনের বিনিয়োগ আশা করা হয়েছিল, সেই অনুপাতে বিনিয়োগ প্রবৃদ্ধি অনেক ধীর, এমনকি বিদেশি বিনিয়োগের ক্ষেত্রেও প্রত্যাশিত মাত্রায় বিনিয়োগ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম। ভোরের কাগজকে

তিনি বলেন, বিভিন্ন কার্যক্রমের মাধ্যমে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আমরা অবস্থান জানান দিতে পারি, কিন্তু যতক্ষণ পর্যন্ত কাক্সিক্ষত বিনিয়োগ পরিবেশ সৃষ্টি না হচ্ছে, ততক্ষণ পর্যন্ত এসব কার্যক্রমের সুফল আমরা পাব না। যদিও গত বছরে গ্রামীণ অর্থনীতিতে বা অকৃষি খাতে কিছুটা ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা ছিল। তিনি বলেন, এখনো আমরা ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টায় আছি, কিন্তু পুরোপুরি ঘুরে দাঁড়াতে পারিনি। কিছু কিছু খাত অবশ্য প্রত্যাশার চেয়েও বেশি ভালো করছে।
ড. মোয়াজ্জেম বলেন, দেশের বস্ত্র খাতে মূলধনী যন্ত্রপাতি বা ক্যাপিটাল মেশিনারি আমদানির জন্য ২৩৬ কোটি ৩৬ লাখ ডলারের এলসি খোলা হয়েছে, যা আগের বছরের তুলনায় বেড়েছে ২১ দশমিক ২ শতাংশ। তার মানে বস্ত্র খাতে বিনিয়োগ বেড়েছে। তিনি বলেন, অল্প কয়েকটি জায়গায় আমরা বিনিয়োগের প্রবৃদ্ধি ভালো অবস্থানে দেখছি; এর মধ্যে অন্যতম পোশাক খাত। এছাড়া ফার্মাসিউটিক্যালস, কৃষি এবং অকৃষি খাতও ভালো অবস্থানে আছে। ফলে একটি বৃহৎ অংশের দেশীয় বাজারভিত্তিক শিল্প খাত এবং তৈরি পোশাক বহির্ভূত রপ্তানি খাতগুলোতে সেই অর্থে এখনো বড় বিনিয়োগ আসেনি।
কাক্সিক্ষত বিনিয়োগ না আসার কারণ হিসেবে এ গবেষক বলেন, অভ্যন্তরীণ বাজারে ভোক্তাদের পূর্ণভাবে পণ্য কেনার মতো আর্থিক সামর্থ্য এখনো তৈরি হয়নি, এটি একটি চ্যালেঞ্জ। সুতরাং ঘুরে দাঁড়ানো প্রক্রিয়াটি শুরু হলেও মানুষের আয় এবং কর্মসংস্থান এখনো পূর্ণভাবে নিশ্চিত হয়নি বরং এখনো দারিদ্র ঝুঁকি এবং ভবিষ্যতের অনিশ্চয়তা মানুষের মধ্যে কাজ করছে।
তিনি বলেন, দ্বিতীয় দিক হচ্ছে, বিনিয়োগকারীরাও নতুন বিনিয়োগে উৎসাহ দেখাচ্ছেন না। এক্ষেত্রে কাঁচামালের মূল্য বৃদ্ধি, পরিবহন ব্যয় বৃদ্ধি, পরিবহনজনিত অনিশ্চয়তা, জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি, গ্যাসের অনিশ্চয়তা, অভ্যন্তরীণ বাজারে ভোক্তার ক্রয় নিয়ে এখনো অনিশ্চয়তা, এ বিষয়গুলো থাকার কারণে এখনো বিভিন্ন খাতের উদ্যোক্তারা নতুন বিনিয়োগে যাচ্ছেন না। ফলে বিনিয়োগে ঘুরে দাঁড়াতে আরো অনেকটা সময় লেগে যাবে।
তিনি বলেন, বিনিয়োগ পরিবেশ তৈরিতে যে প্রতিবন্ধকতাগুলো রয়েছে, সেগুলো কাটিয়ে না উঠলে নতুন বিনিয়োগ বা বিদেশি বিনিয়োগে আকৃষ্ট করাটা কষ্টকর হয়ে যাবে। এজন্য অভ্যন্তরীণ বাজারে করোনার কারণে আমাদের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে বড় রকমের ব্যাঘাত যেন না হয়, সেদিকে নজর দিতে হবে। কারণ সেটি একই সঙ্গে ভোক্তা এবং বিনিয়োগকারী- উভয়ের জন্যই অশনীসংকেত হতে পারে। দ্বিতীয়ত, দেশের ভেতরে ভোক্তার নির্দিষ্ট পরিমাণ আয় কর্মসংস্থানের নিশ্চয়তা করা। এক্ষেত্রে সরকারি উদ্যোগে কর্মসংস্থানমূলক যেসব কাজ হচ্ছে, সেগুলোয় গুরুত্ব দেয়া যেন মানুষ কাজের নিশ্চয়তা পায় এবং তার আয়েরও নিশ্চয়তা থাকে। তৃতীয়ত, মূল্যস্ফীতির বিষয়টিকে অবশ্যই নজরে আনা। কেননা, অত্যধিক মূল্যস্ফীতি ভোক্তার যেমন প্রকৃত আয় কমিয়ে দেয়, একই সঙ্গে পণ্য উৎপাদক বা বিনিয়োগকারীরও পণ্য বিক্রি করতে সমস্যা হয়। ফলে তিনি বিনিয়োগে নিরুৎসাহিত হন।
তিনি আরো বলেন, সরকারের যে মেগা প্রকল্পগুলো হচ্ছে, সেগুলো একসঙ্গে নিশ্চয়তা দিতে পারছে না। যেমন মিরসরাই নিয়ে কথা বলছি, কিন্তু সেখানে পানি সরবরাহ নিশ্চিত কিনা, শ্রমিকদের বাসস্থান নিশ্চিত করা, বিদ্যুৎ- গ্যাসের নিশ্চয়তা আছে কিনা, সিইটিপি প্রস্তুত কতখানি অর্থাৎ সরকারের অবকাঠামো প্রস্তুতির ক্ষেত্রে ফুল প্যাকেজের নিশ্চয়তা দিতে হবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়