দেয়াল চাপায় শিশুর মৃত্যু : কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ চেয়ে আইনি নোটিস

আগের সংবাদ

বিজয়ী বিদ্রোহীদের ভাগ্যে কী আছে : সিদ্ধান্ত অমান্যকারীরা সাময়িক বহিষ্কার > ১৯ নভেম্বর আ.লীগের সভায় আসতে পারে নতুন সিদ্ধান্ত

পরের সংবাদ

শহীদুল আলম ঝিনুক : ই-রেজিস্ট্রেশনে ভোগান্তি কমবে

প্রকাশিত: নভেম্বর ১৩, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ১৩, ২০২১ , ১২:২৮ পূর্বাহ্ণ

কামরুজ্জামান খান : মানুষের ভোগান্তি নিরসনে দেশের ১৭টি সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে ই-রেজিস্ট্রেশন চালু হয়েছে। এই স্টাডি প্রকল্পের মধ্য দিয়ে ভূমি রেজিস্ট্রেশনে জনগণের দুর্ভোগ অনেক কমবে। সার্ভে শেষে দ্রুত সময়ের মধ্যে সারাদেশে এই সেবা চালু হবে। এতে আঙুলের ছাপ ও চোখের কর্নিয়া সম্পৃক্ত করা, নির্বাচন কমিশনের জাতীয় পরিচয়পত্র উইং এবং জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সরাসরি যোগাযোগ থাকছে। ফলে জমির শ্রেণি পরিবর্তন ও জাল দলিলের সুযোগ পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যাবে এবং রাজস্ব বাড়বে। সব ধরনের জমির রেকর্ড স্থায়ীভাবে সংরক্ষণ করতে ভূমি রেজিস্ট্রেশনের নিজস্ব আর্কাইভ করা হবে। নিবন্ধন অধিদপ্তরের মহাপরিদর্শক শহীদুল আলম ঝিনুক তার দপ্তরে ভোরের কাগজকে দেয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে এসব তথ্য জানান।
ইন্সপেক্টর জেনারেল অব রেজিস্ট্রেশন শহীদুল আলম ঝিনুক বলেন, প্রধানমন্ত্রীর দিকনির্দেশনা এবং আইন বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রীর নির্দেশে ভূমি রেজিস্ট্রেশন আধুনিকায়ন করতে ই-রেজিস্ট্রেশন কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। দেশের ৬১টি জেলায় ৫০১টি সাব-রেজিস্ট্রি অফিস রয়েছে (তিন পার্বত্য জেলায় রেজিস্ট্রেশন আইন প্রয়োজ্য নয়)। সমীক্ষা শেষে ১৭টি অফিসে পরীক্ষামূলকভাবে ই-রেজিস্ট্রেশন চালু হওয়ায় সাধারণ মানুষ সুফল পেতে শুরু করছে। এতে ভূমি অফিসে মিউটেশন সহজতর হচ্ছে। এই প্রক্রিয়ায় এক লাখ টাকার উপরের দলিল সম্পাদন করতে গেলে তার টিআইএন নম্বর প্রয়োজন হবে। এতে পে-অর্ডার সঠিক কিনা তা সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের সার্ভারে ঢুকে অফিসে বসেই নিশ্চিত হতে পারেন সাব-রেজিস্ট্রার।
দলিলের সত্যায়িত কপি পাওয়া যাচ্ছে সম্পাদনের দুদিনেই। সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও সাব-রেজিস্ট্রারের মধ্যে সংযোগ স্থাপন হওয়ায় টেম্পারিং ও জাল দলিলের সুযোগ বন্ধ হচ্ছে। পর্যায়ক্রমে আগামী বছর সারাদেশে এই সেবা ছড়িয়ে যাবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
রশিদ ব্যতীত নেয়া সব টাকাই অবৈধ জানিয়ে আইজিআর বলেন, সেরেস্তা বলতে কোনো কিছু নেই। দলিল লেখক সমিতির নামে লেখকদের কাছ থেকে এজন্য কোনো টাকা নেয়া হলে তা সম্পূর্ণ অবৈধ। এ ব্যাপারে তথ্যভিত্তিক সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
তিনি বলেন, দেশে ৬০ হাজার দলিল লেখক রয়েছে। তাদের সঙ্গে অনেক পরিবার সম্পৃক্ত। সব দিক বিবেচনা করে রেজিস্ট্রেশনে অনলাইনের পাশাপাশি ম্যানুওয়ালি কার্যক্রমও অব্যাহত থাকবে। টিপছাপা বইয়ের সঙ্গে বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে এনআইডির সঙ্গে মিল রেখে এর কার্যক্রম চলছে। এতে চোখের কর্নিয়ার ছাপ যুক্ত করার উদ্যোগে নেয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, ভূমি রেজিস্ট্রেশন ডিজিটাল করার জন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে প্রশিক্ষণ নিতে হচ্ছে। মুজিববর্ষ উপলক্ষে এ উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। অর্গানোগ্রামে সাব-রেজিস্টি অফিসে জনবল মাত্র পাঁচজন।
মানুষের কাক্সিক্ষত সেবা নিশ্চিত করতে জনবল কাঠামো সময়োপযোগী করতে হবে জানিয়ে তিনি বলেন, ব্রিটিশ শাসনামলে ১৮১৮ সালে ভূমি রেজিস্ট্রেশন শুরু হয়। এরপর থেকে সবই সংরক্ষিত আছে। অনেক দলিলের অবস্থা খারাপ হয়ে গেছে। কয়েকশ বছরের পুরনো সব দলিল সংরক্ষণ করা কষ্টকর হয়ে পড়েছে। এজন্য সব দলিলকে সঠিকভাবে সংরক্ষণ করতে রেজিস্ট্রেশন বিভাগের নিজস্ব আর্কাইভ তৈরি করা হবে।
৫৮টি সাব-রেজিস্ট্রি অফিস নতুন করে নির্মাণ করা হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, জেলা রেজিস্ট্রার অফিস চারতলা এবং সাব-রেজিস্ট্রি অফিস দোতলা ভবন করা হচ্ছে। সব পুরনো রেজিস্ট্রি অফিস ভেঙে নতুন করে ভবন নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, জেলা রেজিস্ট্রার ও সাব-রেজিস্ট্রারের শূন্যপদে দ্রুত নিয়োগ দেয়া হচ্ছে। এ বছর ৬৬ জন সাব-রেজিস্ট্রার নিয়োগ পেয়েছেন ও শূন্যপদে পিএসসির মাধ্যমে নিয়োগ কার্যক্রম চলছে। সাব-রেজিস্ট্রার ও অফিসের সরকারি স্টাফদের বিরুদ্ধে দুদকের অভিযান, কমিশন ও নকলে বাড়তি টাকা আদায় এবং দুর্নীতির অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, কারো বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। অন্যায় বা অপরাধ করে কারো ছাড় পাওয়ার সুযোগ নেই বলেও জানান তিনি।
আইজিআর বলেন, দলিল লেখক ও নকল নবিশকারক নিয়োগ বন্ধ রয়েছে। সব অফিসে জনবল বাড়াতে চাহিদাপত্র তৈরি করা হয়েছে। এজন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। উপজেলা পর্যায়ে রেজিস্ট্রেশন কমপ্লেক্স নির্মাণের বিষয়টি বিবেচনায় নেই।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়