গাজীপুরে কেমিক্যাল কারখানায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড

আগের সংবাদ

বাজার অস্থির দিশাহারা মানুষ : নিত্যপণ্যের দাম সাধারণের নাগালের বাইরে, জ্বালানি তেলের দাম বাড়ায় আরেক দফা বাড়বে

পরের সংবাদ

শেষ ম্যাচেও হার : খালি হাতে ফিরতে হলো বাংলাদেশের

প্রকাশিত: নভেম্বর ৫, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ৫, ২০২১ , ১:১৯ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : এবার টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ব্যর্থতার খোলস ভেঙে বের হতে পারেনি টাইগাররা। বাছাইপর্বে একটি ও মূলপর্বে ৫ ম্যাচ হেরেছে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ বাহিনী। বিশ্বকাপ মঞ্চে ব্যাটিং, বোলিং ও ফিল্ডিংয়ে এমন বিধ্বস্ত টাইগারদের আগে কখনই দেখেননি ভক্তরা। এবার টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ব্যর্থতার ষোলোকলা পূর্ণ করেছেন লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। গতকাল সুপার টুয়েলভে নিজেদের শেষ ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ৮ উইকেটে হেরেছে বাংলাদেশ। ৮২ বল হাতে রেখে পাওয়া এই জয়টি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে কোনো দলের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বল হাতে রেখে পাওয়া জয়। বিশ^কাপ মিশন শেষে আজ বিকালে দেশে ফিরছেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ বাহিনী।
এর আগে ২ নভেম্বর সুপার টুয়েলভে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ৮৪ রানে গুটিয়ে গিয়েছিল বাংলাদেশ। যেটি ছিল দেশের টি-টোয়েন্টি ইতিহাসে তৃতীয় সর্বনি¤œ সংগ্রহ। এবার অস্ট্রেলিয়া আরো বড় লজ্জা দিল টাইগারদের। ৫ ওভার বাকি থাকতেই ইনিংস গুটিয়ে দিল ৭৩ রানে। এটি এখন টি-টোয়েন্টিতে টাইগারদের দ্বিতীয় সর্বনি¤œ দলীয় সংগ্রহের রেকর্ড। তবে যাহোক এই বিশ্বকাপ অভিযানটা হয়তো ভুলতে পারবেন না মাহমুদউল্লাহ। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে বাংলাদেশ যা খেলল, তাতে অধিনায়ক কী বলবেন? ম্যাচ শেষে তিনি সংবাদ সম্মেলনে বলেন, এমন পারফরম্যান্সের পর কিছু বলা সত্যিই কঠিন। আমাদের অনেক কিছু নিয়ে কাজ করতে হবে।
অধিনায়কত্ব ছাড়ার বিষয়ে তিনি বলেন, এটা তো আমার হাতে নেই। এ সিদ্ধান্তটা ক্রিকেট বোর্ডের থেকেই আসবে। আমার তরফ থেকে আমি সবসময়ই চেষ্টা করেছি দলটাকে আগলে রেখে সবার কাছ থেকে পারফরম্যান্স আদায় করার জন্য। হয়তো আমাদের অধিনায়কত্বে ঘাটতি ছিল। এ বিষয়টি আমি ক্রিকেট বোর্ডের হাতেই ছেড়ে দেব। এখানে আমার মন্তব্য করার কিছু নেই।
এছাড়া বাংলাদেশকে হারিয়ে সেমিফাইনালের সম্ভাবনা টিকিয়ে রাখল অস্ট্রেলিয়া। ৪ ম্যাচে তিন জয় তুলে নিয়েছেন অ্যারন ফিঞ্চরা।
সুপার টুয়েলভে গতকাল নিজেদের শেষ ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে টস হেরে আগে ব্যাট হাতে লড়াই করতে পারেননি লিটন-মুশফিকরা। অজি বোলারদের সামনে কোমর সোজা করে দাঁড়াতে পারেনি মাহমুদউল্লাহ বাহিনী। ফলে ১৫ ওভারে ৭৩ রানে অলআউট হয় বাংলাদেশ।
দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে এদিন লিটন দাস এক বল খেলেই আউট হন। মিচেল স্টার্কের প্রথম বল ঠেকান ওপেনার মোহাম্মদ নাঈম। পরের বলে স্টার্কের ১৪৪ কিলোমিটার গতির সামনে দাঁড়াতেই পারেনি লিটন। তিনি বোল্ড হয়ে রানের খাতা খোলার আগেই সাজঘরে ফিরেন। এরপর দলীয় ৬ রানে তাড়াহুড়ো করে খেলতে গিয়ে আউট হন সৌম্য সরকার। তিনি ৫ রান করেন। তৃতীয় ওভারে ক্রিজে মুশফিকুর রহিম। গেøন ম্যাক্সওয়েলের মুখোমুখি হয়ে প্রথম বল ওয়াইড। পরের বলে ডিপ মিডউইকেট দিয়ে বল ঠেলে নিলেন সিঙ্গেল। মোহাম্মদ নাঈম পরের দুই বল খেলে যখন তিনি স্ট্রাইকে এলেন, আর থাকতে পারলেন না। এলবিডবিøউ হলেন মুশফিক ১ রান করে। দলীয় ১০ রানে ৩ উইকেট হারানো বাংলাদেশকে প্রতিরোধের আশা দেখাচ্ছিলেন মোহাম্মদ নাঈম শেখ ও অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ। তাদের জুটিতে আসে পাঁচটি বাউন্ডারি। পাওয়ার প্লের শেষ ওভারে নাইমকে আউট করে সম্ভাবনাময় জুটি ভাঙেন হেজেলউড। এরপর পাওয়ার প্লে শেষ হলে আক্রমণে এসে প্রথম বলেই উইকেট পান জাম্পা। এই লেগ স্পিনারই করেন বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় সর্বনাশ করেন। জাম্পা বল হাতে শামীমের পর মেহেদীকে সাজঘরে পাঠান। মাহমুদউল্লাহর সঙ্গে লড়াই করার আভাস দিয়ে আউট হন শামীম। তিনি ১৮ বলে ১ ছক্কা ও ১ চারে ১৯ রান করেন। এ ম্যাচে অজিদের বিপক্ষে শামীম সর্বোচ্চ রান করেছেন। এরপর জাম্পা মেহেদী হাসানকে এলবিডবিøউর ফাঁদে ফেলেন। আম্পায়ার আঙুল তুললে রিভিউ নেন বাংলাদেশি ব্যাটসম্যান, কিন্তু সিদ্ধান্ত পাল্টায়নি। এক প্রান্ত আগলে রাখা মাহমুদউল্লাহকে বিদায় করেন স্টার্ক। লেগ স্টাম্পের বাইরের বলে কিপারকে ক্যাচ দেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। পঞ্চদশ ওভারে আক্রমণে ফিরে হ্যাটট্রিক হয়েই যেত জ্যাম্পার। কিন্তু লেগ স্পিনারের বলে তাসকিন আহমেদের ক্যাচ মুঠোয় রাখতে পারেননি কিপার ম্যাথু ওয়েড। সেই ওভারেই মুস্তাফিজুর রহমান ও শরিফুল ইসলামকে ফিরিয়ে বাংলাদেশকে ৭৩ রানে থামিয়ে দেন জ্যাম্পা। সঙ্গে গড়েন বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়ার সেরা বোলিংয়ের রেকর্ড।
৪ ওভারে ১৯ রান দিয়ে ৫ উইকেট নেন জ্যাম্পা। ২০১৬ আসরে পাকিস্তানের বিপক্ষে জেমস ফকনারের ২৭ রান দিয়ে পাঁচটি ছিল আগের সেরা। টি-টোয়েন্টিতে এই প্রথম পাঁচ উইকেট পেলেন জ্যাম্পা। তার আগের সেরা ছিল ১৪ রানে ৩ উইকেট।
বাংলাদেশের দেয়া ৭৪ রানের লক্ষ্যে ব্যাট হাতে সময় নষ্ট করেনি অজিরা। অধিনায়ক অ্যারন ফিঞ্চ শুরুতেই ঝড় তোলেন। অন্য প্রান্তে তাকে যোগ্য সঙ্গ দেন ডেভিড ওয়ার্নার। তাসকিনের বলে সীমানায় ক্যাচ দিয়েও বেঁচে যান ফিঞ্চ। বেশ এগিয়ে থাকা সৌম্য বলে হাতই ছোঁয়াতে পারেননি। তার মাথার ওপর দিয়ে উল্টো বাউন্ডারি পেয়ে যান অস্ট্রেলিয়া অধিনায়ক। শেষ পর্যন্ত তাকে থামান তাসকিনই। দারুণ এক ডেলিভারিতে বোল্ড করে দেন ফিঞ্চকে। তিনি ২০ বলে চারটি ছক্কা ও দুটি চারের সাহায্যে ৪০ রান করেন। পরের ওভারে ডেভিড ওয়ার্নারকে বোল্ড করে দেন শরিফুল ইসলাম। ম্যাক্সওয়েলকে নিয়ে বাকিটা সারেন মিচেল মার্শ।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়