‘ভীষণ এক্সাইটেড ও নার্ভাস’

আগের সংবাদ

নির্বাচন ঘিরে বারবার নির্যাতন : ইস্যু যাই হোক হামলার লক্ষ্যবস্তু ‘সংখ্যালঘু’, স্বার্থ উদ্ধারের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে ‘ধর্ম’

পরের সংবাদ

ভিনিসিয়াসের গোলে শীর্ষে রিয়াল মাদ্রিদ

প্রকাশিত: অক্টোবর ৩১, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: অক্টোবর ৩১, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ ডেস্ক : লা লিগায় মেসির সাবেক ক্লাব বার্সেলোনা ভালো অবস্থানে না থাকলে, আধিপত্য ধরে রেখেছে রোনালদোর সাবেক ক্লাব রিয়াল মাদ্রিদ। প্রতিপক্ষের মাঠে গতকাল ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড ভিনিসিয়াস জুনিয়রের দুই গোলে জয় তুলে লিগের শীর্ষে ফিরেছে রিয়াল মাদ্রিদ। অন্যদিকে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে ব্যর্থতা কাটিয়ে উঠছে আর্সেনাল। টানা তিন ম্যাচ হেরে তলানিতে থেকে লিগ শুরু করলেও এখন তারা উঠে এসেছে লিগের সেরা দশে। কিং পাওয়ার স্টেডিয়ামে গতকাল লিস্টার সিটিকে ২-০ গোলে হারিয়েছে মিকেল আর্তেতার শিষ্যরা। অন্যদিকে ফ্রেঞ্চলিগে জয় নিয়ে মাঠ ছেড়েছে মেসিরা।
লা লিগায় নিজেদের আধিপত্য ভালোভাবেই ধরে রেখেছে রিয়াল মাদ্রিদ। গতকাল এলচের বিপক্ষে তাদেরই ঘরের মাঠে জয় তুলে নেয় করিম বেনজেমারা। ম্যাচের প্রথমার্ধেই আক্রমণে দুই দলই ছিল সমানে সমান। তবে ম্যাচের ২২তম মিনিটে প্রথম সাফল্যটি পেয়ে যায় রিয়াল মাদ্রিদ। ভিনিসিয়াস জুনিয়র গোল করে দলকে লিড এনে দেন। মারিয়ানো ডিয়াজের কাছ থেকে বল পেয়ে প্রতিপক্ষের জালে বল জড়াতে ভুল করেননি এই ব্রাজিলিয়ান স্ট্রাইকার। প্রথমার্ধে বল দখলে এগিয়ে থাকা রিয়াল গোলের উদ্দেশে শট নেয় ৬টি। যার মধ্যে ২টি ছিল লক্ষ্যে। বল দখলে পিছিয়ে থাকলেও রিয়ালের সমান শট নেয় এলচেও। যার মধ্য লক্ষ্যে ছিল রিয়ালের সমান দুইটি। তবে প্রথমার্ধে সফলতার মুখ দেখেনি এলচে। দ্বিতীয়ার্ধে এসেও সমান তালে খেলতে থাকে দুই দল। তবে ম্যাচের ৬৩তম মিনিটে সমতায় ফিরতে না পারা এলচে খায় বড় হোঁচট। রিয়াল মিডফিল্ডার টনি ক্রুসকে ফাউল করে লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন এলচে মিডফিল্ডার রাউল গুটি। ১০ জনের দলকে দ্বিতীয় বার হতাশায় ডুবান ভিনিসিয়াস। ম্যাচের ৭৩তম মিনিটে লুকা মদ্রিচের বাড়ানো পাস থেকে গোলটি করেন এই ব্রাজিলিয়ান তরুণ ফরোয়ার্ড। ম্যাচের ৮৬তম মিনিটে ১০ জনের দল এলচেও রিয়ালতে কামর বসায়। বেনেদেত্তোর থেকে পাস পেয়ে গোল করে ব্যবধান কমান পেরে মিলা। ২-০ গোলের জয় নিয়ে মাঠে ছাড়ে বেনজেমারা। ১১ ম্যাচে ৭ জয়, ৩ ড্র ও এক হারে ২৪ পয়েন্ট নিয়ে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে এখন রিয়াল মাদিদ্র।
অন্যদিকে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে হতাশার চাদর থেকে ধীরে ধীরে বের হয়ে আসছে আর্সেনাল। চলতি আসরে প্রথম তিন ম্যাচেই হারের মুখ দেখা গানাররা জ¦লে উঠছে সময় মতো। গতকাল লিস্টার সিটিকে তাদেরই ঘরের মাঠে ২-০ গোলে হারিয়েছে গ্যাব্রিয়েল জেসুসরা। তবে ম্যাচে বল দখলে, শটে সব কিছুতেই এগিয়েছিল লিস্টার সিটি। আর্সেনালের যেখানে প্রতিপক্ষের উদ্দেশ্যে ৯টি শট নেয় সেখানে লিস্টারর নেয় ১৬টি শট। আর্সেনালের ৫টি শট লক্ষ্যে থাকলেও ৮টি লক্ষ্য বরাবর ছিল লিস্টারের। মিকেল আর্তেতার শিষ্যরা ম্যাচের প্রথমার্ধেই এগিয়ে যায়। ম্যাচের ৫ মিনিটেই ইংলিশ মিডফিল্ডার বুয়াকো সাকার বাড়ানো পাস জালে জড়ান ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড গ্যাব্রিয়েল সান্তোস। এরপর ম্যাচের ১৮ দলকে ২-০ গোলের লিড এনে দেন ইংলিশ মিডফিল্ডার এমিলি স্মিথ রয়ে। ১০ ম্যাচে ৫ জয়, ২ ড্র ও এক হারে ১৭ পয়েন্ট নিয়ে লিগের টেবিলে এখন আর্সেনালের অবস্থান এখন সেরা পাঁচে। তারকায় ঠাসা ফুটবলার নিয়েও রীতিমতো হারতেই বসেছিল পিএসজি। লিওনেল মেসি ও নেইমার জুনিয়ররা বল পায়ে গোল করতে ব্যর্থ হলেও বেশ দাপটে খেলেছেন ডি মারিয়া। তার গোলের সুবাদেই পিএসজি ২-১ গোলে হারিয়েছে লিগ ওয়ান শিরোপাধারী লিলেকে। গত পরশু রাতে পিএসজির ত্রাণকর্তা কিলিয়ান এমবাপ্পে অসুস্থতার কারণে খেলতে পারেনি। তাই মেসি, নেইমার ও ডি মারিয়ে ছিলেন আক্রমণে। তাদের বেশ দাপটে রুখে দিচ্ছিল লিলের খেলোয়াড়রা। কিন্তু চমৎকার ভঙ্গিতে ডি মারিয়া এক গোল করার পর, আরেকটা করালেন। ফলে পিএসজির জয়টাও নিশ্চিত হয় তাতেই। ১২ ম্যাচ খেলে ১০ জয়ে ৩১ পয়েন্ট নিয়ে পয়েন্ট তালিকার শীর্ষে আছে পিএসজি। দ্বিতীয় স্থানে থাকা লেঁস এক ম্যাচ কম খেললেও পিছিয়ে আছে ১০ পয়েন্টে। ১৫ পয়েন্ট নিয়ে লিল আছে ১১ নম্বরে।
এছাড়া ৪৬ মিনিটে পেশির সমস্যায় মেসি মাঠ ছাড়েন। তার বদলি হিসেবে ইকার্দি মাঠে নামেন। যদিও ম্যাচ শেষে কোচ পিএসজি কোচ মারিসিও পচেত্তিনো বলেন, মেসি কিছুদিন আগেই মাংসপেশির চোট থেকে ফিরেছেন। সে এখনো পুরোপুরি ফিট নন। সামনে জার্মান ক্লাব লাইপজিগের বিপক্ষে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ আছে। এই অবস্থায় মেসিকে পুরো ম্যাচ খেলানোর ঝুঁকি নিতে চাইনি। আমাদের অপেক্ষা করতে হবে। আমি চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলেছি। এ সিদ্ধান্তটা সতর্কতা হিসেবেই নেয়া হয়েছে। মেসি খেলতে পারছিল না। কিন্তু এটা বড় কোনো ব্যাপার নয়। আশা করি ও পরবর্তী ম্যাচের আগেই পুরো ফিট হয়ে যাবে।
এদিকে লিলের বিপক্ষে পুরো ম্যাচে ৬০ শতাংশ সময় নিজেদের পায়ে বল রেখেছে পিএসজি। তবে ফরাসি দলটির আক্রমণভাগ যেন বিবর্ণই ছিল বেশ। মেসি, নেইমার, এমবাপেরা প্রতিপক্ষ গোলমুখে শট নিয়েছিলেন ১৭টি, যার কেবল ৬টিই ছিল লক্ষ্যে। আর লিলে ১১শটের তিনটি রেখেছে লক্ষ্যে, যার একটি ছিল গোল। তবে জোনাথন ডেভিডের গোলে প্রথমার্ধে পিছিয়ে পড়েছিল পচেত্তিনোর শিষ্যরা।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেও কিছুটা সময় দলটির পারফরম্যান্স আশানুরূপ ছিল না। তবে ঠিক সময়ে নিজেদের মেলে ধরে পিএসজির ফুটবলাররা। ম্যাচে প্রায় ৬০ শতাংশ সময় বল দখলে রেখে গোলের উদ্দেশ্যে ১৭টি শট নেয় পিএসজি, যার ছয়টি থাকে লক্ষ্যে। লিলের ১১ শটের তিনটি লক্ষ্যে ছিল। প্রথম মিনিটেই অবশ্য বিপদে পড়তে বসেছিল তারা।
সতীর্থের উদ্দেশ্যে মেসির ক্রস নিয়ন্ত্রণে নিয়ে প্রতি আক্রমণে ওঠে লিল। ডান দিক থেকে মিডফিল্ডার নানিতামো ইকোনের পাস পেয়ে ডি-বক্সে ঢুকেই কোনাকুনি শট নেন তুর্কি স্ট্রাইকার বুরাক ইলমাজ।
বাঁ দিকে ঝাঁপিয়ে কর্নারের বিনিময়ে ঠেকান গোলরক্ষক জানলুইজি দোন্নারুম্মা।
শুরু থেকে বল দখলে পিএসজি এগিয়ে থাকলেও আক্রমণে সুবিধা করতে পারছিল না তারা। এর মাঝেই ৫৫ মিনিটে আরেকটি ভালো আক্রমণ করে লিল। তবে ডি-বক্সের মুখ থেকে শট লক্ষ্যে রাখতে পারেননি ইকোনে। ২৩তম মিনিটে প্রথম একটা হাফ-চান্স পায় পিএসজি। তবে মেসির পাস পেয়ে যথেষ্ট জোরে শট নিতে পারেননি ডি মারিয়া। তবে ছয় মিনিট পরই এগিয়ে যায় লিল। বাঁ দিক দিয়ে ইলমাজ ডি-বক্সে ঢুকে ডিফেন্ডার টিলো কেরারকে কাটিয়ে বাইলাইন থেকে কাটব্যাক করেন। আর ছয় গজ বক্সের মুখে শুধু পা বাড়িয়ে বলের গতিপথ পাল্টে দেন কানাডার ফরোয়ার্ড ডেভিড। প্রথমার্ধে পিএসজি নিজেদের সেরা সুযোগ পায় ৪০তম মিনিটে। তবে দুরূহ কোণ থেকে ডি মারিয়ার কোনাকুনি শট লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। খানিক পর মেসির ফ্রি কিক ক্রসবারের অনেক ওপর দিয়ে উড়ে গেলে পিছিয়ে থেকে বিরতিতে যায় স্বাগতিকরা।
প্রথমার্ধে মেসি-নেইমাররা তাদের সেরা অবস্থার প্রতিধান দিতে পারেনি। বিরতির পর আর্জেন্টাইন তারকাকে তুলে তার স্বদেশী ইকার্দিকে নামান কোচ। কিন্তু তাদের পারফরম্যান্সের উন্নতি হচ্ছিল না। ৫৭তম মিনিটে তো ব্যবধান বাড়তেও পারত। তবে ইলমাজের ক্রস দোন্নারুম্মা কোনোরকমে ঠেকানোর পর ফাঁকায় বল পেয়ে উড়িয়ে মারেন ডেভিড। পরে চাপ বাড়াতে থাকা পিএসজি ৬৯ ও ৭৩তম মিনিটে ভালো দুটি সুযোগ তৈরি করে। কিন্তু নেইমারের শট রক্ষণে প্রতিহত হওয়ার পর দি মারিয়ার ক্রসে অরক্ষিত ইকার্দির হেডে বল উড়ে যায়। ৭৪তম মিনিটে কাঙ্ক্ষিত গোলের দেখা পায় পিএসজি। বাঁ দিকের বাইলাইনের কাছ থেকে দি মারিয়ার উঁচু কাটব্যাকে ডান পায়ের শটে বল ঠিকানায় পাঠান মার্কিনিয়োস। এরপর ৮৫তম মিনিটে নেইমার বাঁ দিক থেকে অসাধারণ এক রক্ষণচেরা থ্রæ পাস বাড়ান ইকার্দির উদ্দেশ্যে। কিন্তু ডি-বক্সে বিনা বাধায়ও শট লক্ষ্যে রাখতে পারেননি আর্জেন্টাইন স্ট্রাইকার।
তিন মিনিট পরই ওই জয়সূচক গোল। এবার ডি-বক্সের মুখে বল ধরে ছোট পাসে ডান দিকে দি মারিয়াকে খুঁজে নেন নেইমার। আর বল ধরে বাঁ পায়ের কোনাকুনি শটে জালে পাঠান সাবেক রিয়াল মাদ্রিদ মিডফিল্ডার।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়